ভিডিও

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে দ্রুত ছড়াচ্ছে খুরারোগ, ভ্যাকসিন সংকটে মারা যাচ্ছে গরু

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৪, ০৬:২৭ বিকাল
আপডেট: জুন ২৭, ২০২৪, ১১:৪৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : নাগেশ্বরীতে বন্যার পরে দ্রুত ছড়াচ্ছে পশুর অত্যন্ত ছোঁয়াচে তীব্র প্রকৃতির ভাইরাসজনিত খুরারোগ। মিলছে না প্রতিষেধক ভ্যাকসিন। মারা যাচ্ছে গরু।

সব ঋতুতেই খুরারোগ দেখা গেলেও সাধারণত বর্ষার শেষে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়। তবে এবার বর্ষার শুরুতেই টানা বৃষ্টি ও অসময়ের মাঝারি মানের স্বল্প মেয়াদি বন্যায় পরে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ থাকায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যানুযায়ী বন্যা ও বৃষ্টির মধ্যেই এবার ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হয়। অতিবৃষ্টিতে পরিবেশ হয় স্যাঁতস্যাঁতে। যা খুরারোগ ছড়ানোর উপযুক্ত। এর মাঝে কোরবানির জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা হয় পশু। রাখা হয় বাড়ির অন্য পশুর সাথে। নিয়ে আসা গরুগুলোর মধ্যে কিছু কিছু গরু ছিল রোগাক্রান্ত। এটি বুঝতে না পারায় একসঙ্গে রাখায় সুস্থ গরুগুলোর মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ছোঁয়াছে এ রোগটি। এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় চোরাপথে আসা গরুগুলোর কোন রোগাক্রান্ত গরু থেকেও এটি ছড়াতে পারে। তাই বন্যার্ত এবং সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে এ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা অনেক এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ছে সুস্থ গরুতে।

আক্রান্ত এ পশুর শরীরের তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বেড়ে যায়। পায়ের খুরা, জিহ্বা, দাঁতের মাড়ি, সম্পূর্ণ মুখ গহ্বরে ঘা এর সৃষ্টি হয়। গরু দাঁড়াতে ও খেতে পারে না। ফলে দুর্বল হয়ে মারা যায়। 
এ অবস্থায় আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা রেখে ক্ষত পটাশ বা আইওসান মিশ্রিত পানি দিয়ে ধুয়ে চলছে ঘরোয়া চিকিৎসা। প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন না পাওয়ায় এর বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছে না। যেসব পশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম সেগুলো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, গত ২-৩ দিনে রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে পৌরসভার সেনের খামারের বাবলু বর্মনের আক্রান্ত ৬টি গরুর ১টি, লিটন সর্দারের আক্রান্ত ৩ টি গরুর ১টি, নারায়ণপুর ইউনিয়নের পদ্মারচরের রহিম শেখের ১টি গরু। মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে সেনের খামারের আজিজুলের ২টি গরু। রামখানার শাহটারী গ্রামে নুরজামাল, বাবলু, আবু তালেব, আবেদ আলী, ছাবেদ আলী, আব্দুল কুদ্দুস, রহিতসহ প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে ৩-৫ টি গরু খুরারোগে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিনেই বাড়ছে আক্রান্ত পশুর সংখ্যা।
পৌরসভার সেনের খামারের কৃষক বাবলু বর্মন বলেন, আমার ৬টি গরুই খুরারোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ১টি। সরকারি পশু চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। তবে তাদের দেয়া পরামর্শে ঘরোয়া চিকিৎসায় বাকীগুলোকে সুস্থ করার চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রায় একই কথা বলেন আক্রান্ত গরুগুলোর বেশ কয়েকজন মালিক।  

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: সাহেদুল ইসলাম জানান, সুস্থ অবস্থায় গবাদিপশুকে বছরে দু’বার প্রতিষেধক টিকা দিতে হয়। সময়মত দিলে এ রোগের আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব। এ মহুর্তে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন এফএমডি এর সংকট চলছে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর এর চাহিদা জানিয়েছি। তবে রোগ যাতে দ্রুত না ছড়ায় সে জন্য আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু হতে আলাদা করে রাখা, খামার বা গোয়াল ঘর পরিস্কার করে প্রতি ৫ লিটার পানিতে ১ টেবিল চামুচ খাবার সোডা মিশিয়ে সেখানে স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এতে উক্ত রোগের জীবানুগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS