ভিডিও

আদমদীঘিতে ক্ষুরা ও ল্যাম্পিস্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব ৩০ গরুর মৃত্যু

আক্রান্ত ৫ শতাধিক, দিশেহারা কৃষক ও খামারিরা

প্রকাশিত: জুলাই ০২, ২০২৪, ০৯:১৯ রাত
আপডেট: জুলাই ০৩, ২০২৪, ১২:১৮ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ক্ষুরা ও ল্যাম্পিস্কিন রোগে গত এক মাসে ৩০টি গরু মারা যাওযার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু দমদমা গ্রামেই ২০টি গরু মারা গেছে। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছে বিভিন্ন খামার ও কৃষকদের পাঁচ শতাধিক গরু।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শে ভ্যাকসিন-ওষুধ দিয়েও এ রোগটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উপজেলার কৃষক ও খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকেও ভাবিয়ে তুলেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায়, সমগ্র উপজেলা গত এক মাসে অন্তত ৩০টি গরু মারা গেছে। সান্তাহার ইউনিয়নের শুধু দমদমা গ্রামে গত ১৮ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ১৪ দিনের ব্যবধানে ২০ গরু মারা গেছে। এরমধ্যে ওই গ্রামের পূর্বপাড়ার হাসান আলীর প্রায় ১৪ মণ ওজনের ফ্রিজিয়ান ষাঁড় ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

একই গ্রামের দক্ষিণপাড়ার ভুট্রু মিয়ার একটি গরু, নজরুল ওরফে নজুর দুটি, রবিউলের দুটি, পিন্টুর একটি, ফেরদৌসের একটি, চাঁন মিয়ার একটি, নান্টুর একটি, মেজরের একটি, বগা মিয়ার একটি, রায়হানের একটি, বাদলের একটি ও শ্য্যামলের একটি’সহ ২০টি গরু মারা যায়।

এছাড়া আদমদীঘি সদর, চাঁপাপুর, কুন্দগ্রাম, নশরতপুর, ছাতিয়ানগ্রাম, সান্তাহার ইউনিয়ন মিলে আরও ১০টিসহ মোট ৩০টি গরু ক্ষুরা ও ল্যাম্পিস্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলায় মোট বাণিজ্যিক খামার রয়েছে ১০০টি ও পারিবারিক খামার রয়েছে প্রায় ২ হাজার।

এসব খামারে প্রাণি সম্পদ অফিসের তথ্য মতে মোট ৮০ হাজার গরু রয়েছে। গত তিন, চার সপ্তাহ আগে উপজেলায় গরুর ক্ষুরা ও ল্যাম্পিস্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। খবর পেয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শন করে ক্ষুরা ও ল্যাম্পিস্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া গরু ও আক্রান্ত গরু মালিকদের সচেতন করাসহ এ রোগে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বরাবর অবহিত করেন।

উপজেলার দমদমা গ্রামের হাসান আলী জানায়, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তার গরুটি খুরা রোগে আক্রান্ত ছিল, পায়ের ক্ষুরা রোগ অনেকটা সেড়েও গিয়েছিল। গতকাল সোমবার সকালে গরুটিকে পানি খাওয়ানোর পর সেটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়। ওই গ্রামের শ্যামল প্রামানিক জানান, আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে তার একটি বকনা বাছুর ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আমিরুল ইসলাম বলেন, গরু মারা যাওয়ার খবর পেয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে এ রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিনসহ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি, উঠান বৈঠক ও মেডিকেল ক্যাম্প করে রোগ প্রতিকার সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, এ রোগটি ক্ষুরা রোগের নতুন ধরণ। তাই আমরা উদ্ধর্তন প্রাণিসম্পদ বিভাগের বিশেষজ্ঞ দলকে অবহিত করেছি। তারা এসে আক্রান্ত গরুর রক্ত সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে গরুর মৃত্যুর কারণ।

আগামী সপ্তাহে এর ফলাফল পাওয়া যাবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর করণীয় কি তা নির্ধারণ করা হবে। তিনি সকল গবাদি পশুর মালিকদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS