ভিডিও

বগুড়া ডিবি’র অভিযানে প্রতারকচক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার

বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে লিবিয়ায় ২ভাইকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়

প্রকাশিত: জুলাই ০২, ২০২৪, ১১:০৫ রাত
আপডেট: জুলাই ০৩, ২০২৪, ১২:৪২ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে লিবিয়ায় নিয়ে বগুড়ার চাকরিপ্রার্থী দুই ভাইকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করার অুভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রতারক‘‘চক্রের এদেশীয় দুই সদস্যকে আটক করেছে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। ওই দু’জনকে আটকের পর জিম্মি দুই ভাইকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

বগুড়ায় আটক দু’জনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মুক্তিপণের জন্য নেওয়া ১ লাখ টাকা। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

অপহরণকারি চক্রের দেশিয় দুই সদস্য হলো বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর গ্রামের আয়েন উদ্দিন প্রামানিকের ছেলে পান্নু মিয়া (৩৫) ও একই উপজেলার নওদাবগা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে শিপলু সরকার (৪০)। পান্নুর ভাই লিবিয়া প্রবাসী পায়েল অপহণ করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে পুলিশ জানায়।

এর আগে দুপচাঁচিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে গত ৮ জুন ওই ঘটনায় জড়িত দুই আসামীকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া হতে গ্রেপ্তার এবং জিম্মি হওয়া দুই ভাইয়ের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আক্তার জানান, গত ৮ জুন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানায় মানব পাচার দমন ও প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ওই উপজেলার বাসিন্দা রাব্বী খন্দকার। তিনি অভিযোগ করেন তার দুই ভাই পাপ্পু খন্দকার (২৭) ও সাঈদ খন্দকারকে (২৪) ভালো বেতনে লিবিয়ায় চাকরি দেওয়া প্রলোভন দেন উপজেলা সদরের বাসস্ট্যাণ্ড এলাকার মোন্তাহা স্টোরের সত্ত্বাধিকারী উজ্জল হোসেন।

পরে তার কথা মতো ১১ লাখ টাকা দিয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পাপ্পু খন্দকারকে এবং চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি সাঈদ খন্দকারকে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। লিবিয়ায় অবস্থানরত উজ্জলের পূর্ব পরিচিত সাব্বির হোসেন ওই দু’জনকে লিবিয়ার হাসপাতালে চাকরি পাইয়ে দেওয়া কথা ছিলো।

লিবিয়ায় পৌঁছার পর ওই দুই ভাইকে কোন চাকরি না দিয়ে বসিয়ে রাখে সাব্বির। পরে চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে বলে গত ২৫ মার্চ তাদের দুই ভাইকে পৃথক দুই শহরে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর তাদের মাধ্যমে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ওই ঘটনায় ৮ জুন মামলা দায়েরের পরপরই ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে উজ্জল হোসেন (৩৫) ও সফাত মণ্ডল (৩২) নামের দু’জনকে আটক করে। তাদের আটকের পর সাঈদ খন্দকারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। গত ২৩ জুন সাঈদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ওই চক্রের হাতে আটক অপর ভাইয়ের কোন সন্ধান মিলছিলো না।

সম্প্রতি অপহরণকারি চক্র পাপ্পু খন্দকারকে মুক্তি দিতে ৪ লাখ টাকা দাবি করে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। এজন্য তারা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি একাউন্ট নম্বর দেয়। বাদি ওই নম্বরে ১ লাখ টাকা নেওয়ার পর অবশিষ্ট টাকা দিতে চাপ দেয় চক্রটি। তখন ডিবি পুলিশের পরামর্শে নগদ টাকা দিতে সম্মত হয় পাপ্পুর পরিবার।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের চেলোপাড়া সিএনজিচালিত অটো স্ট্যান্ডে সেই টাকা নিতে এলে পুলিশের হাতে আটক হয় সোনাতলা উপজেলার পান্নু ও শিপলু। তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে পরে অপহৃত পাপ্পুকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

তিনি বলেন, দ্রুতই পাপ্পু খন্দকারকে দেশে ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পাপ্পুর ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় আটক পান্নু ও শিপলুকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS