ভিডিও

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৪, ০৮:৫০ রাত
আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২৪, ১২:৪৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক জিআই পণ্য হিসেবে গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না স্বীকৃতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। সেখানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।

গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় জেলা প্রশাসন, মুকসুদপুর উপজেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তা এবং ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক।

বর্তমানে মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ব্রোঞ্জের গয়না বিক্রির জন্য একটি বাজার গড়ে উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতেরা এই বাজার থেকে গয়না কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন।

চলতি বছরের ১২ মার্চ জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গয়না জিআই পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়।

জেলা প্রশাসক মাহবুবুল আলম বলেন, “এই স্বীকৃতির মাধ্যমে জেলার মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গয়নার ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া ব্রোঞ্জের গয়না তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত কারিগরদের কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

“এতে ব্রোঞ্জ শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। এলাকার আর্থ সামজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।” যোগ করেন তিনি।

ব্রোঞ্জ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও জলিরপাড় ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সুভাষ বৈদ্য বলেন, “আমাদের ওয়ার্ডেই ব্রোঞ্জের গয়না তৈরির পল্লী প্রায় ১০০ বছর আগে গড়ে ওঠে। পরে এটি পুরো জলিরপাড় ইউনিয়নের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ পল্লীকে কেন্দ্র করে এখানে ব্রোঞ্জ মার্কেট প্রতিষ্ঠত হয়।

“তখন জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গয়নার সুখ্যাতি সারদেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের গন্ডি পেড়িয়ে এটি বিদেশের বাজারে ছড়িয়ে যায়।”

আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, “ এ শিল্পে কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। সা¤প্রতিকালে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্রোঞ্জের গয়না, আমাদের বাজারের প্রায় ৫০ ভাগ দখল করে দিয়েছে।”

অবশ্য এ পরিস্থিতিতেও জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গয়না তৈরি শিল্প স্বগৌরবে শতাধিক পরিবার টিকিয়ে রেখেছে। জলিরপাড়ে ব্রোঞ্জ মার্কেটে বর্তমানে ব্রোঞ্জের গয়না তৈরির ৪৫টি দোকান রয়েছে বলে জানান সুভাষ।

ব্রোঞ্জের গয়না প্রস্তুতকারক জলিরপাড় গ্রামের জগদীশ শীল বলেন, “এ গয়না তৈরির উপকরণ তামা, দস্তা ও পিতলের দাম বেড়েছে। সহজ প্রাপ্যতা কমেছে। ভারতসহ অন্যান্য দেশের ব্রোঞ্জ গয়নার রঙ খুব চকচকা। আমাদের তৈরি গয়নার রঙ তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। দামি, মনোহর ও সৌখিন গয়নার বাজার ভারত ও চীনের দখলে চলে গেছে। ”

এখানে কি ধরনের গয়না তৈরি হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সাধারণত কানের দুল ও হাতের বালাসহ যেসব গয়নার চাহিদা রয়েছে সেগুলো আমরা তৈরি করি। এখানে এখনও মানসম্পন্ন কারিগর রয়েছে।”

 

এ শিল্পকে অধুনিকায়ন করতে সরকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে ও সবধরনের সহযোগিতা দিলে শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন জগদীশ।

তিনি বলেন, “আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে কারিগরদের কাজে লাগিয়ে আমরাও দামি গয়না তৈরি করতে পারি। তা হলেই শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা অধিক উপার্জন করতে পারবেন। তখন এ শিল্প দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ ও গতিশীল করবে।”



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS