ভিডিও

সিরাজগঞ্জ-বগুড়া আঞ্চলিক সড়ক প্রশস্ত করায় সুফল পাচ্ছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৪, ০৭:০৩ বিকাল
আপডেট: জুলাই ৩১, ২০২৪, ০১:১৯ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

জয়নাল আবেদীন জয়/আব্দুল জলিল (সিরাজগঞ্জ) ও রফিকুল আলম (বগুড়া) : সিরাজগঞ্জ জেলা সদর-কাজিপুর ও বগুড়ার শেরপুর-ধুনট আঞ্চলিক সড়কটি প্রশস্ত করায় সিরাজগঞ্জ-বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েক জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হয়েছে। ইতোমধ্যে শেষ হওয়া সড়কের বিভিন্ন অংশ খুলে দেয়ায় সুবিধা পাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে গতি ফিরছে এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে।

সিরাজগঞ্জ সদর-কাজিপুর এলাকা ও বগুড়ার ধুনট হয়ে শেরপুর পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বিপর্যস্ত ছিল। আঁকা-বাঁকা সরু সড়কটিতে দুর্ঘটনা ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। ফলে কৃষিসমৃদ্ধ কয়েকটি জেলার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো।

আগে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে পরিবহনগুলো সিরাজগঞ্জ রোড হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেছে। এতে সময় অনেক বেশি লাগতো। এছাড়া এই সড়কে সব সময় যানজট লেগে থাকে।

এতে পরিবহনের চালক ও যাত্রীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সমস্য সমাধানে বর্তমান সরকার সড়কটি প্রশস্তকরণ প্রকল্প হাতে নেয়। ইতোমধ্যে যার বেশ অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। খুলে দেয়া হয়েছে সড়কের প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন হওয়া অংশ, সেতু ও কালভার্ট।

এতে দুর্ভোগ লাঘব হবার পাশাপাশি এসব জেলার মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। বিশ্বরোডের যানজট এড়াতে বর্তমানে পরিবহনগুলো শেরপুর অংশ থেকে ধুনট-কাজিপুর আঞ্চলিক সড়ক হয়ে সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে কম সময়ে সহজেই ঢাকা পৌঁছতে পারছে।

এলাকাবাসী জানান, সড়কটি প্রশস্ত হওয়ায় সুফল পাচ্ছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। সড়কের উভয় পাশে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছেন অনেকে। সেই সাথে জমির দামও বেড়ে গেছে। সড়ক ঘিরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাড়ায় নতুন কর্মসংস্থানের আশা স্থানীয়দের। কয়েক বছর আগেও এই সড়কের আশপাশের অনেক জমি ব্যবহার হতো কৃষিকাজে।

তবে এখন বদলে যাচ্ছে এই এলাকার চিত্র। সড়কটি প্রশস্ত করায় আন্তঃজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। এরপরই শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে কদর বেড়েছে এই এলাকার জমির। সড়কের দুই পাশে যারা শিল্প-কারখানা করবেন তারা জমি সরেজমিনে দেখছে। ফলে জমির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এই অঞ্চলের মানুষ।

এলাকার কৃষকেরা জানান, ধান আবাদের চেয়ে সবজি আবাদ করে বেশি লাভবান হওয়ায় তারা অনেকেই এখন ক্রমান্বয়ে সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। উন্নত সড়কের কারণে পাইকারদের কাছে সবজির দাম বেশি পাচ্ছেন। কারণ এখন তাদের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। আগে এলাকায় উৎপাদিত সবজি স্থানীয়ভাবে বিক্রি করা হতো। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকায় সরবরাহ করে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, আঞ্চলিক সড়কটি প্রশস্ত করায় ব্যবহার বাড়ায় দুই জেলার দূরত্ব কমেছে প্রায় ৪০ কি.মি। পাশাপাশি সব ধরনের যান চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইমোমধ্যে এ প্রকল্পের সাবির্ক অগ্রগতি ৬০ ভাগ।

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে সে সমস্যা সমাধান হওয়ায় বাকী কাজ দ্রুতই শেষ করা হবে। প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্ত করা ৭৬ কিলোমিটার এই সড়কে ৩টি ব্রিজ,৩৯টি কালভার্ট, ১৬ কি.মি. ড্রেন রয়েছে। ২০২৫ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS