ভিডিও

চলনবিলে চায়না দুয়ারী জালে অবাধে পোনামাছ নিধন

প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৪, ০৫:৫৬ বিকাল
আপডেট: জুলাই ৩১, ২০২৪, ০৫:৫৬ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : মৎস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় নতুন বানের পানিতে ঝাঁক বেধে বিচরণ করছে অসংখ্য দেশি প্রজাতির মাছের পোনা। মৎস্য আইনে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও এক শ্রেণির মানুষ তা মানছেন না। নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জালে নিধন করছেন নানারকম দেশি প্রজাতি মাছের পোনা। এতে ধবংস হচ্ছে মৎস্যসম্পদ ও জলজপ্রাণি।

মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, দেশের বৃহত্তম মিঠা পানি মাছের প্রধান উৎস চলনবিলে এখনও প্রায় ৪৪ প্রজাতি দেশি মাছ পাওয়া যায়, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে পাশের দেশ ভারতেও রপ্তানি করা হয়। উপজেলা মৎস্য বিভাগ বলছে, প্রতি বছর এ উপজেলা থেকে প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন করা হয়।

এরমধ্যে শুধু উন্মুক্ত জলাশয় থেকে বর্ষাকালসহ বছরে মাছ আহরণ করা হয় প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টন। বাকি মাছ পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ে চাষ করা হয়। উন্মুক্ত জলাশয় থেকে উৎপাদিত শুটকি মাছ ও চাষকৃত সাদা পাবদা মাছ পাশের দেশ ভারতে রপ্তানি করা হয়।

সাধারণত শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ বিলে দেশি প্রজাতি মাছের প্রজননকাল। আষাঢ় মাসের শুরুতেই বিলে পানি আসায় পোনা মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কারেন্ট জাল, চায়না দুয়ারী জালসহ বিভিন্ন অবৈধ ফাঁদ পেতে অবাধে নিধন করছে মা ও পোনা মাছ। মাছের পাশাপাশি রক্ষা পাচ্ছে না কাঁকড়া, ব্যাঙ, কুইচা, সাপসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণি।

এতে হুমকিতে পড়েছে জীববৈচ্যিত্র। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌর এলাকার উত্তর দমদমা, দক্ষিণ দমদমা, ফলিয়া, হিয়ালা, কয়া, চৌগ্রাম, ডাহিয়া, কলম, তাজপুর ও শেরকোল ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় চায়না দুয়ারীসহ অবৈধ ফাঁদ পেতে পোনামাছ নিধনের উৎসব চলছে।

উপজেলার ডাহিয়া বাজারে দেখা যায়, চায়না দুয়ারী জালে আটকা পড়া টাকি, শোল, কৈ, বোয়াল, ভেদা, শিং, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের পোনা বিক্রি করছেন জেলেরা। চলনবিল পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সভাপতি মো. এমরান আলী রানা বলেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি সামাজিকভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে মাছ শিকারের সব ধরনের অবৈধ ফাঁদ বন্ধ করতে পারলে মাছ নিধন ও অন্যান্য জলজপ্রানি ধবংসের হাত থেকে চলনবিলকে রক্ষা করা সম্ভব।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহাদত হোসেন বলেন, চলতি অর্থবছরের শুরুতেই গত ১৫ জুলাইয়ের আগে স্থানীয় বাজারগুলোতে ৮টি অভিযান ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এতে ৭শ’ ৫০ মিটার চায়না দুয়ারী ও প্রায় দেড় লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পোড়ানো হয়েছে, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৫লাখ টাকা।

এছাড়া স্থানীয় মাছের বাজার গুলোতে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিলে বন্যার পানি থাকলে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS