ভিডিও

বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট

প্রকাশিত: আগস্ট ০১, ২০২৪, ১১:৩৭ দুপুর
আপডেট: আগস্ট ০২, ২০২৪, ১২:৩৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় পুলিশের এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে  গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ আদালতের বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এ আদেশ দেন।

আদালতের আদেশের পরপরই এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মিথুন সরকার বগুড়ার শেরপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলা সদরের বয়ড়া পালপাড়া গ্রামে।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এক বছর আগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি কর্মরত আছেন বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ আদালতের সরকারি কৌসূলী (পিপি) আশেকুর রহমান সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল নিশ্চিত করতে আদালত থেকে বুধবারই বগুড়ার পুলিশ সুপার এবং রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির নিকট আদেশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।

আশেকুর রহমান আরও বলেন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বগুড়ার এসআই ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন মন্ডলের দাখিল করা অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং ভুক্তভোগী ছাত্রীর দাখিল করা কথপোকথনের রেকর্ড পর্যালোচনা করে আসামি মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯ (১) ধারার উপাদান আছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা  জারির আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ জুন আদালতে পিবিআই বগুড়ার  পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন মন্ডল অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি প্রদান ছাড়াও নানা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের বিভাগীয় তদন্তেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

তবে  উচ্চ আদালতের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে  ওই ছাত্রী প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় আসামি মিথুন সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এর ৯(১) ধারায় আমলে নেওয়ার মতো কোন অপরাধ করেননি বলে উল্লেখ করেন।

আদালত সূত্র জানায়, পিবিআই-এর দাখিল করা ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে  ভুক্তভোগী ছাত্রী গত ৩০ জুন আদালতে না রাজি দরখাস্ত দেন। আদালত অনুসন্ধান প্রতিবেদনসহ মামলার তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে অভিযোগ আমলে নিয়ে বুধবার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন।

আদালত  সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। গতবছর জুন মাসে বগুড়ার  শেরপুর থানায়  কর্মরত থাকাকালে এসআই  মিথুন সরকারের সঙ্গে ওই ছাত্রীর পরিচয় হয়। পরে ধর্ম পরিচয় গোপন করে এসআই মিথুন সরকার ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলেন।

এরপর মুঠোফোনে, টেলিগ্রাম, ইমুতে খুদে বার্তা আদান প্রদান হয়। গত বছরের  ৩ জুন মেয়েটির  জন্মদিনে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে শেরপুর শহরের খোন্দকারটোলা এলাকার চিহ্নিত এক মাদক ব্যবসায়ী এবং পুলিশের সোর্সের ভাড়া বাসায় নিয়ে ওই ছাত্রীকে  ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণের শিকার তরুণী বিষয়টি পরিবারের ফাঁস করে দিলে এসআই মিথুন বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা  দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতারণা বুঝতে পেরে ওই ছাত্রী গত বছরের ১৭ আগস্ট বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ আদালতে এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর এসআই মিথুন সরকারকে প্রথমে শেরপুর থেকে  আদমদীঘি থানায় বদলি করা হয়।  দুদিনের মাথায় পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রজু হয়।

জানতে চাইলে বগুড়ার পুলিশ সুপার জাকির হাসান  বলেন, সাময়িক বরখাস্ত থাকা এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারি সংক্রান্ত আদালতের আদেশ এখনো হাতে পাইনি। আদালতের আদেশ পাওয়া মাত্র আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS