ভিডিও

উত্তাল বগুড়ায় আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ, নিহত ৫

এমপি’র বাসভবনসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি স্থাপনা ও গাড়িতে আগুন, দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদ ও আ’লীগ অফিসে আগুন, শেরপুরে থানায় হামলা

প্রকাশিত: আগস্ট ০৪, ২০২৪, ১০:৩৯ রাত
আপডেট: আগস্ট ০৫, ২০২৪, ০২:১৬ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোটার : বগুড়ায় অসহযোগ আন্দোলনকারীদের সাথে আজ রোববার (৪ আগস্ট) দিনভর পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীসহ ৫ জন নিহত এবং অন্তত: ২শ’ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

নিহতদের মধ্যে চারজন বগুড়া শহরে এবং একজন দুপচাঁচিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে সাতমাথা, স্টেশন সড়ক, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, দত্তবাড়ি বড়গোলা, টিনপট্টি, থানা মোড়, চকযাদু সড়ক, বাদুড়তলা, কালিতলা, গোহাইল সড়ক, শেরপুর সড়ক, নবাববাড়ি মোড়, জলেশ্বরীতলাসহ গোটা বগুড়া শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

শহরের মোড়ে মোড়ে ও অলিগলিতে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যার পরও এই ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছিল। সর্বশেষ রাতেও শহরের কালিতলায় সংঘর্ষ চলমান ছিল। আন্দোলনকারীদের থামাতে পুলিশ শত শত রাউন্ড টিয়ার সেল, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড় ছোঁড়ে।

আন্দোলনকারীরাও পাল্টা পুলিশের দিকে বৃষ্টির মত ঢিল ও  ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। শহরের সাতমাথা নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ ও আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে হাজার হাজার আন্দোলনকারী সাতমাথার ৭টি রাস্তার মুখ থেকে একযোগে বের হয়ে সাতমাথার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং ধংসযজ্ঞ চালায় শহরজুড়ে।

বগুড়ায় নিহতরা হলেন, গাবতলী পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি ও গাবতলীর গোরদহ গ্রামের মৃত আবু মুছার ছেলে জিল্লুর রহমান (৪৫), দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার হিলি এলাকার সেলিম রেজা (৪৫)।

তবে তিনি বগুড়া শহরের হরিগাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন। এছাড়া নিহত অপর দুই জনের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তাদের এক জনের বয়স (৩৫) ও অন্যজনের বয়স (৬০)। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপ পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ হাসপাতালের মর্গে চার জনের লাশ থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে দুপচাঁচিয়ায় নিহত কাহালু উপজেলার বীরকেদার মন্ডল পাড়ার সামছুল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান মনির (২২)। মনির নওগাঁর বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলেন। এদের মধ্যে সেলিম রেজা শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথার অদূরে  ডাকবাংলার সামনে নিহত হন।

যেভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত : আজ রোববার (৪ আগস্ট) সকাল ১০ টার দিকে শহরের সাতমাথায় গোহাইল সড়কের মুখে ট্রাফিক আইল্যান্ডের কাছে আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে থাকে। এ দিকে টেম্পল রোডে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সামনেও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা সমাবেত হয়।

ট্রাফিক আইল্যান্ডের কাছে শতাধিক আন্দোলনকারী সমাবেত হয়ে সরকার বিরোধী শ্লোগান দেয়। বেলা ১০ টা ৫৮ মিনিটে  সেখান থেকে ১শ’ গজ দূরে টেম্পল রোডে সমাবেত ২ শতাধিক আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কমী আন্দোলকারীদের ধাওয়া করে।

এসময় তাদের হাতে একজন প্রহৃত হয়। ধাওয়ার মুখে আন্দোলনকারীরা চলে গেলে শহরের সাতমাথা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের কারো কারো হাতে ধারালো অস্ত্রও দেখা যায়।

বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত তারা সাতমাথার নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলেও পরক্ষণই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে সাতমাথার ৭টি রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার আন্দোলনকারী সাতমাথার দিকে আসতে থাকে। এতে যোগ দেয় শিক্ষার্থী, শিশু, নারী, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ। সাতমাথা জন সমুদ্রে পরিণত হয়। জনতার চাপে সরে পড়ে সরকার পন্থিরা।

এরপর থেকে সাতমাথার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের হাতেও লাঠিসোটা ছিল। এরপর বেলা পোনে ১২ টা থেকে চালানো হয় ব্যাপক ধংসযজ্ঞ  হাজারো আন্দোলনকারী  টেম্পল রোডে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ অফিস, বগুড়া বিটিসিএল (টিএন্ডটি) অফিস, টাউন ক্লাব, বগুড়া প্রধান ডাকঘর, স্টেশন রোডে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় ডাকবাংলোর ২৯টি কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

বিকেল ৩টার দিকে কালিতলায় বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুর বাসভবনে ভাঙ্চুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেইসাথে শহরের দত্তবাড়ি এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ব্যক্তিগত অফিসে ভাঙচুর করে আসবারপত্র রাস্তায় বের করে এনে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।

এছাড়া শহরের বড়গোলায় সিটি ব্যাংকের এটিএম বুথ ভাঙচুর ও টাকা লুট করা হয়। শেরপুর রোডে ডাচবাংলা ব্যাকের বুথেও ভাঙচুর করা হয়। নিশিন্দারায় এলইজিডি ভবন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সেও ভাঙচুর করা হয়। টেম্পল রোড়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় ১০টি মোটর সাইকেলও।

হামলাকারীরা টেম্পল রোডে টিএন্ডটি ভবনে চত্ত্বরে প্রবেশ করে ২টি পিকআপ ভ্যান, ২টি মোটর সাইকেল, গার্ড রুম, গ্যারেজ ফাইবার কেবল এর ৮টি রোল পুড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া বিআরটিসি বাস ডিপো চত্ত্বরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।

বগুড়া শহরের চারদিকে ৫-৬ কিলোমিটারের মধ্যে সড়ক-মহাসড়কে, অলিগলিতে লোকেলোকারণ্য হয়ে যায়। সড়কে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তার ডিভাইডারর গাছ কেটে আবার সড়কে ফেনসিং ও পার্কের দেয়াল-গ্রীল ভেঙে সড়ক অবরোধ করে রাখে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পানি ও খাবার দিয়ে সহযোগিতা করেন অভিভাবকরা।

কিন্তু দুপুর একটার পর আবার মুহূর্মুহূ টিয়ার সেল, বুলেট সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে আন্দোলনকারীদের সাতমাথা থেকে হটিয়ে দেয় পুলিশ। এরপর থেকে সাতমাথার নিয়ন্ত্রণ নেয় আইন শৃংখলা বাহিনী। এ সময় টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট শেষ হওয়ার উপক্রম হলে একটি মাইক্রোবাসে করে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট এনে পরে তা ব্যবহার করা হয়।

কিন্তু এ সময় পিছু হটে গিয়েও বার বার সাতমাথার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। তখন পুলিশ আন্দোলনকারীদের দিকে টিয়ার সেল, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়তে থাকে। পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় আন্দোলনকারীদের। দফায় দফায় চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। রাতেও শহরের কালীতলা এলাকায় চলে সহিংসতা এবং ১০টায় তা অব্যাহত ছিল।

এদিকে, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত  সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে আজ রোববার (৪ আগস্ট) বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় উপজেলা পরিষদসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ, ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, থানা ভাঙচুর, আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় পুলিশের গুলি, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে ১জন ছাত্র নিহত এবং অন্তত: ৪৩ জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছে। সকাল ১০টায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীর পাশাপাশি সর্বস্তরের নারী-পুরেুষ স্থানীয় জাহানারা কামরুজ্জামান কলেজ চত্বরে সমবেত হয়।

পরে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড অতিক্রম করে। পরে উত্তেজিত কিছু আন্দোলনকারী সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙচুর করাসহ অগ্নি সংযোগ করে।

এছাড়াও সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পুলিশ বক্সও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে তারা মিছিল নিয়ে থানা অভিমুখে গিয়ে সেখানে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। থানা সংলগ্ন উপজেলা সহকারী কমিশনার-ভূমি অফিসেও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ভূমি অফিসের জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। পুলিশ বাধা দিলে উত্তেজনা বেড়ে যায়।

এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল ও কাঁদানি গ্যাস নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। আন্দোলনকারীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা সীমানা প্রাচীরের গ্রিল, মোটরসাইকেল রাখার গ্যারেজের টিন ভাঙচুর করে এবং থানা ভবনে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।

তখন পুলিশ গুলি চালালে গুলিতে পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার বীরকেদার দক্ষিণপাড়ার শামছুল ফকিরের ছেলে নওগাঁ বদলগাছি উপজেলার বঙ্গবন্ধু কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুনিরুল ইসলাম মুনির (২২) নিহত হয়।

গুলিবিদ্ধ ও রাবার বুলেটে আহত ৬জন আন্দোলনকারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তারা হলেন, কাহালু উপজেলার বাঘোপাড়া গ্রামের রতনের ছেলে হৃদয় (২০), কাহালুর আবু হুজাইয়া (২২), বীরকেদার বারোমাইল এলাকার বাবলুর ছেলে রাব্বি (১৮), উপজেলা সদরের খোলাশ গ্রামের দেলোয়ারের ছেলে ফাইম (১৯), মাস্টারপাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে জিহাদ (১৮), হেড়ুঞ্জ গ্রামের রজিমুদ্দীনের ছেলে আব্দুল হাকিম (২৩)।

এছাড়াও টিয়ারশেল ও কাঁদানি গ্যাস ও রাবার বুলেটে আরও ৩৬ জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছে। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। এদিকে ছাত্র নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারীরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তারা ওই লাশ নিয়ে উপজেলা পরিষদে হামলা করে।

এ সময় তারা উপজেলা পরিষদ ভবন, নির্বাচন অফিস, সমাজসেবা অফিস, হিসাব রক্ষণ অফিস, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিস, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা হাবিবুর রহমান সাথী ভাই মিলনায়তন ভাঙচুর করাসহ অগ্নিসংযোগ করে।

আন্দোলনকারীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। আন্দোলনকারীরা বিকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতার বাসভবনেও ভাঙচুর সহ অগ্নিসংযোগ করে।

থানা অফিসার ইনচার্জ সনাতন চন্দ্র সরকার জানান, আন্দোলনকারীরা থানায় হামলা করতে এলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে রাবার বুলেট টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। এতে তারা আরো উত্তেজিত হয়ে উঠে। থানা রক্ষার্থে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেন তারা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাত আরা তিথি জানান, আন্দোলনকারীরা তার অফিসসহ বাসভবন ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। তিনি অনেকটা নিরাপদস্থানে থাকার কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিক ভাবে জানাতে পারেন নাই। এদিকে বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ করছিল।

অপর দিকে প্রাপ্ত এক খবরে জানা গেছে, নিহত ওই ছাত্রের লাশ সন্ধ্যা ৬টায় নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে। অপরদিকে শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার শেরপুরে পুলিশ বক্সে আগুন ও থানা আক্রমনের চেষ্টাকালে সংঘর্ষে  পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন।

এরমধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ত্রিশজনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহরের স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডস্থ উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর চালায় আন্দোলনকারীরা।

আজ রোববার (৪ আগস্ট) বেলা এগারোটা থেকে শুরু হয়ে বিকেল চারটা পর্যন্ত দফায় দফায় এই হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচির প্রথমদিনে আজ রোববার (৪ আগস্ট) সকাল দশটার দিকে শহরের তিনদিক থেকে ছাত্র-জনতার ব্যানারে পৃথক পৃথক বিক্ষোভ মিছিল বের করে আন্দোলনকারীরা।

একপর্যায়ে মিছিলগুলো শহরের ধুনটমোড় এলাকায় একত্রিত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। এসময় পুলিশ পিছু হটলে সেখানে স্থাপিত পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় তারা। পরে শহরের বাসস্ট্যান্ডস্থ উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর থানা ঘেরাও ও হামলার চেষ্টা চালায় বিক্ষোভকারীরা।

তখন পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছুঁড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কিছু সময় পরেই আবারো সংগঠিত হয়ে থানায় হামলার চেষ্টা চালায় তারা। এভাবে কয়েকদফা ঘেরাও ও হামলার চেষ্টা চালালেও পুলিশ তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। তবে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন।

জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা এ প্রসঙ্গে বলেন, ধুনট মোড় পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়ার পর থানায় হামলার চেষ্টা চালায় আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS