থানার নিরাপত্তার দায়িত্বে আনসার
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া সদর থানাসহ জেলার ১২টি থানায় এখন কোন পুলিশ নেই। থানার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে আনসার সদস্যরা। এ কারণে থানায় থানায় থমকে আছে পুলিশী সেবার কার্যক্রম। থানায় মামলা ও সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করতে পারছে না সাধারন মানুষ। অভিযোগ করতে এসে মানুষ ফিরে যাচ্ছে।
থানায় কোন পুলিশ নেই। থানায় হামলা, ভাঙ্চুর ও অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ হত্যার পর নিরাপত্তাজনিত কারনে থানা থেকে পুলিশ সদস্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ পড়েছে বিপাকে। অপরাধ সংঘটিত হলেও মানুষ থানায় গিয়ে মামলা করতে পারছে না। থানার সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো: স্নিগ্ধ আখতার বলেন, হামলা, ভাঙ্চুরসহ অস্থিরতার জন্য বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, ধুনট, কাহালু, নন্দীগ্রাম, দুপচাঁচিয়া, আদমদিঘী, শিবগঞ্জ, গাবতলী, সোনাতলা ও সারিয়াকান্দিসহ জেলার ১২টি থানা থেকে নিরাপত্তাজনিত কারনে পুলিশ সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
থানায় থানায় এখন নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে আনসার সদস্যরা। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আর কয়েকদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে তখন বগুড়ায় থানাগুলোতে স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রম শুরু করা হবে। তখন ভুক্তভোগীরা থানায় এসে মামলা বা জিডি করতে পারবেন। সেইসাথে অন্যান্য পুলিশী সেবা নিতে পারবেন। দুই-চার দিন বিলম্বের জন্য কোন ক্ষতি হবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো বগুড়া জেলার বিভিন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সদর ও দুপচাঁচিয়া থানায় হামলা চালানো হয়। দেয়া হয় থানা ভবনে আগুন। এ সময় বগুড়া সদর থানায় অর্ধশতাধিক পুলিশ থানায় আটকা পড়ে। তখন পুলিশ জনতার উদ্দেশ্যে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয় শতাধিক ।
জনরোষ থেকে প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ থানার ছাদে উঠে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এক পর্যায়ে জনতার হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনী এসে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। সেই থেকে থানার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া ধুনটসহ জেলার অন্যান্য থানায় ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়।
ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে থানায় কর্মরত পুলিশ বাহিনী। পরে থানাগুলো থেকে নিরাপত্তাজনিত কারনে পুলিশকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ জন্য ৫ আগস্ট থেকে থানায় সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে থানাগুলোতে নিরাপত্তার জন্য আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।