সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া সারিয়াকান্দিতে প্রথমবারের মতো জি-৯ জাতের কলাচাষ করে সফল হয়েছেন বাদশা মিয়া। অনাবাদী বালু মাটিতে এ জাতের কলার হয়েছে বাম্পার ফলন। চারাগাছ বিক্রি করেও বাড়তি আয়ের আশা বাদশা মিয়ার।
কৃষক বাদশা মিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের মৃত নইম উদ্দিন আকন্দের ছেলে। গত বছরের শুরুতে এ গ্রামের দক্ষিণ পারতিত পরল এলাকায় তার নিজের ৪০ শতাংশের একটি পরিত্যক্ত পুকুর বালুমাটি দিয়ে ভরাট করেন।
এই মাটিতে অন্য ফসল হবে না বিধায় তিনি কলার গাছ লাগানোর চিন্তা করেন। পরে উপজেলার উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শাফিউল আলম জিকোর পরামর্শে বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উৎপাদিত জি-৯ জাতের চারা সংগ্রহ করে জমিতে চারাগাছ রোপন করেন।
তার রোপনকৃত চারাগাছগুলোতে কলা ধরতে শুরু করেছে। বড়বড় কাঁদিতে ঝুলছে সারিসারি কলা। প্রতিটি কাদিতে ২৮০ টিরও বেশি করে কলা ধরেছে। এছাড়া প্রতিটি কলাগাছের গোড়ায় ২ থেকে ৭ টি পর্যন্ত চারাগাছ জন্ম নিয়েছে। এসব চারাগাছ বিক্রি করেও তিনি বাড়তি আয়ের স্বপ্ন দেখছেন। বাদশা মিয়া কলাচাষের পাশাপাশি তার এ জমিতে সাথী ফসল হিসেবে চিনাবাদাম এবং মিষ্টি কুমড়ারও চাষ করেছেন।
তার দেখাদেখি এ এলাকার অনেক কৃষকই টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে কলা চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বাদশা মিয়া বলেন, ‘বালু মাটিতে কোনও ফসলই হবে না ভেবে কলার গাছ লাগিয়েছি। জি-৯ নতুন জাতের এ কলার প্রতিটি কাদিতে এতো কলা ধরেছে যে বাঁশ দিয়ে কলার ভার ধরে রাখতে হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিটি কলার চারা বিক্রি করেও আমার বেশ আয় হবে বলে আশা করছি।
সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, কলাচাষের জন্য উত্তম মৌসুম হলো সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য নভেম্বর। তবে এ জাতের কলা বছরের যেকোন সময় চাষ করা যায়। কলাচাষে টিস্যু কালচার একটি উত্তম পদ্ধতি।
এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত জি-৯ কলার চারার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। এ কলার চারা মাটিতে লাগানোর ৭ থেকে ৮ মাস পর ফলন পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছের গোড়ায় ৬ থেকে ১০টি করে চারাগাছ জন্মায়, যা বিক্রির মাধ্যমে বাড়তি অর্থের যোগান আসে। এ জাতের কলা দেখতে সাধারণত সাগর কলার মত।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আব্দুল হালিম বলেন, প্রথমবারের মতো সারিয়াকান্দিতে জি-৯ জাতের কলাচাষে সফল হয়েছেন বাদশা মিয়া। এ .জাতের কলার ফলনও বেশি হয় এবং এ কলার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই বেশি। উপজেলায় ব্যাপকহারে এ জাতের কলা চাষের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এছাড়াও এ জাতের কলা চাষে বেশ কিছু প্রদর্শনী প্লটও বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।