ভিডিও

জয়পুরহাটে চারলেন সড়ক নির্মাণ দেড় বছরের কাজ ছয় বছরেও শেষ হয়নি 

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৪, ১০:২২ রাত
আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২৪, ১০:২২ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

জয়পুরহাট জেলা  প্রতিনিধি : ছয় বছরেও শেষ হয়নি জয়পুরহাট শহরের আড়াই কিলোমিটার ফোরলেন সড়কের উন্নয়ন কাজ। ফলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শহরবাসী। ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সড়কটির উন্নয়ন কাজের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।

এরপর দুই পাশের পাকা ভবনগুলো ভেঙে জায়গা অধিগ্রহণ করা হলেও সড়কের পুরাতন ড্রেনসহ রাবিশ এবং মাটি অপসারণ না হওয়ায় সড়কটি সরু হয়ে গেছে। এতে প্রতিদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার বর্ষা মৌসুমে কাদা-পানি এবং খরায় তীব্র ধুলার কারণে পথচলা দায় হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর ধরে জয়পুরহাটবাসী এমন দুর্বিষহ জীবন যাপন করলেও সড়কটির চারলেনের নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ শহরবাসি।

জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে জয়পুরহাট শহরের হারাইল থেকে রেলঘুন্টি পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার অংশ ৬০ ফুট প্রশস্ত করে চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। ২০১৭ সালে একনেকের বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্রের মাধ্যমে কাজটির দায়িত্ব পান নাভানা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চুক্তি মোতাবেক কাজটি দেড় বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে ২০১৮ সালের ২৭ জুন তাদের কার্যাদেশও দেওয়া হয়।

সূত্রটি জানায়, চার লেনের সড়কটি হবে ৬০ ফুট প্রশস্ত। এক পাশে ২৪ ফুট এবং অপর পাশে ২৪ ফুট প্রশস্ত সড়ক। মাঝখানে থাকবে ৪ ফুট প্রশস্ত আইল্যান্ড এবং পুরো সড়কের দুই পাশে থাকবে উভয় পাশে ৪ ফুট করে ড্রেন। যা ফুটপাত হিসেবে ব্যবহার হবে।  কিন্তু চুক্তি মোতাবেক কাজ না করায় ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করে সড়ক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নাভানা কনস্ট্রাকশনের চুক্তি বাতিল করেন।

পরবর্তীতে রিলায়েন্স বিল্ডার্স লিমিটেড ও হাসান টেকনো নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জয়েন ভেঞ্চারে চারলেন উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব পায়। কাজটির কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২২ সালের ২০ জুলাই। যার নির্মাণ ব্যয় বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় ২৫ কোটি টাকা। দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা। কিন্তু কাজ না হওয়ায় তৃতীয় বারের মত সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে আগামি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা।

চারলেন প্রকল্প বাস্তবায়নে এরই মধ্যে শহরের আড়াই কিলোমিটার অংশের দুই পাশে ড্রেন নির্মাণ কাজও প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন  হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ, পানি, বিদ্যুত ও টেলিফোন লাইন স্থানান্তর ও রেললাইন উন্নয়ন বাবদ ভূমি মালিক, পৌরসভা, পল্লী বিদ্যুত সমিতি, নেসকো, বিটিসিএল ও রেল কর্তৃপক্ষকে সর্বমোট ১০৪ কোটি ২২ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৯ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যার মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণেই ব্যয় হয়েছে ৯০ কোটি ২০ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮০ টাকা।

অটোচালক শহরের বাগিচা পাড়ার খলিলুর রহমান বলেন, পেটের দায়ে আমরা অটো চালাই। কিন্তু সড়কের যে বেহাল দশা তাতে অটো চালাতে গিয়ে লোকসান হচ্ছে। ভাঙ্গা-চুড়া সড়কে অটো প্রায়ই বিকল হচ্ছে। ছোট-খাট পার্টস ভেঙ্গে যাচ্ছে। সবুজ নগর মহল্লার গৃহবধু তাসমিনা বেগম বলেন,‘ ভাঙ্গা-চূড়ার কারণে সড়কে হেঁটেও যাওয়া যায় না। প্রতিদিন ছোট ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। একটু বৃষ্টি হলে চলাচলই করা যায় না। আবার রোদ হলে ধূলা আর ধুলা।

আর কত সময় লাগবে জেলা শহরের এই একমাত্র সড়কটা । ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রিয়ায়েন্স বিল্ডার্স লিমিটেড এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাজ্জাদ কাদির খান বলেন, ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় গত জুন মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করা যায়নি। তবে সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে বর্ষা শেষ হওয়া মাত্র সড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু করা হবে’।

জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মনিরুজ্জামান বলেন, ‘তৃতীয় দফায় ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কাজটির সময় বাড়ানোর জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন পাঠানো হয়েছে। নানা জটিলতায় কাজটি সম্পন্ন করতে বিলম্ব হলেও এবার বর্ধিত সময়ের মধ্যেই জয়পুরহাট ফোরলেন প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি’।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS