বগুড়ার বেশিরভাগ সড়ক চলাচলের অযোগ্য
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া পৌর এলাকার প্রায় সাড়ে ১৩‘শ কিলো মিটার কাঁচা পাকা রাস্তার বেশির ভাগ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ দিন সংস্কার না করা এবং কাচাঁ রাস্তায় ইট সলিং না করায় রাস্তা গুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। খানাখন্দকে ভরা রাস্তাগুলোর জন্য প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।
বগুড়া শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া বনানী থেকে মাটিডালী পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার, সাতমাথা থেকে তিনমাথা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার, প্রথম ও দ্বিতীয় বাইপাস সড়কগুলো সড়ক ও জনপথের আওতায় হওয়ায় এই রাস্তা গুলো তারা সংস্কার করে কিন্তু অন্য রাস্তা গুলো দেকভালের দায়িত্ব পৌরকতৃপক্ষের। বৃহৎ এই পৌরসভার রাস্তার গুলোর মধ্যে সবচে খারাপ অবস্থায় রয়েছে শহরের অন্যতম প্রধান সড়ক গোহাইল রোড।
শহরের সাতমাথা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষই শুধু চলাচলই করে না। এই সড়কটির দক্ষিনে রয়েছে বগুড়া ক্যান্টনমেন্টের জাহাঙ্গীরাবাদ এলাকা। অন্যতম প্রধান সগক গোহাইল রোড সহ ২১ টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটি রাস্তায় খানা খন্দক বিদ্যমান। বগুড়া পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বিটু জানান, তার ওয়ার্ডের বেশিরভাগ সড়ক চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
শুরু তার ওয়ার্ড নয়, পৌর সভার ২১ টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ রাস্তা চলাচালের অনুপোযোগী হয়েছে। বগুড়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০ বর্গ কিলো মিটার আয়তনের এই পৌরসভায় জন্য গত অর্থ বছরে সরকারি উন্নয়ন সহায়তা মিলেছে মাত্র ৭৬ লাখ টাকা।
এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বরাদ্ধ পাওয়া গেছে ৫০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে সহায়তা পাওয়া গেছে মোট ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। যা গড় করলে প্রতিটি ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ পায় ৬ লাখ টাকা। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই পৌরসভার উন্নয়নে জোটেনি থোক বরাদ্দ।
ফলে রাস্ত্ঘাাটসহ পৌর এলাকার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। বগুড়া পৌর সভায় স্থায়ী ও অস্থায়ী সব মিলিয়ে প্রায় ৭শ’ কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে বছরে সরকারি উন্নয়ন সহায়তা বাবদ যে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায় তা দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারিদের ২ মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব হয়না।
বগুড়ার উপশহর এলাকার প্রকৌশলী আহম্মেদ আলী জানান, বগুড়া এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে। আমরা আশা করছি বগুড়া আর বৈষম্যের শিকার হবে না। বগুড়া পৌরসভার উন্নয়নে থোক বরাদ্দ প্রয়োজন।
বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র পরিমল চন্দ্র দাস জানান, ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমান বগুড়ার উন্নয়নের সূচনা করেছিলেন।
তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বগুড়ায় যে উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে তা গত দুই দশকে বগুড়ায় হয়নি। তারেক রহমান বগুড়াকে ঢেলে সাজানোর কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী আওয়ামীলীগ সরকার তা হতে দেয়নি। সরকারের দপ্তর থেকে কোন থোক বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা, কাহালু পৌরসভার আয়তন বগুড়া পৌরসভার একটি ওয়ার্ডের সমান। অথচ ওই সব পৌর সভার যে বরাদ্দ দেওয়া হয় একই বরাদ্দ দেওয়া হয় বগুড়া পৌরসভায়। ওই সামান্য অর্থ দিয়ে কোন উন্নয়নমূলক কাজ করা সম্ভব হয়না।
তিনি বলেন, বগুড়া যে বৈষম্যের শিকার হয়েছে অন্য কোন জেলা বা পৌরসভা সেই বৈষম্যের শিকার হয়নি। তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বগুড়া এতদিন বঞ্চিত হয়েছে। বগুড়ার উন্নয়ন স্বাভাবিক ধারায় ফেরাতে ৫শ কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।