ভিডিও

বৈরী আবহাওয়ায় এবারও

বগুড়ায় কমেছে পাটচাষের জমির সাথে উৎপাদনও

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৪, ১১:২৩ রাত
আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২৪, ১১:২৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বিগত কয়েক বছর ধরেই পাটের প্রত্যাশিত দামে এ ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছিলেন বগুড়ার কৃষকরা। তবে ভালো দাম পেলেও বৈরী আবহাওয়ায় তারা এখন নিরুৎসাহিত। বিশেষ করে পাট চাষ মৌসুমের শুরুতে ও শেষে (পাট পঁচানোর সময়) প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না থাকায় সোনালী ফসল নিয়ে নানা সংকটে কৃষক।

কৃষি বিভাগও বলছে, পাট সম্পূর্ণ বৃষ্টি নির্ভর ফসল। সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই পাট চাষ নিয়ে নানা সংকটে বগুড়ার কৃষক। ফলে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েও তা পূরণ করতে পারছে না কৃষি বিভাগ। বগুড়া কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে বগুড়ায় পাট চাষের জমির পরিমাণ ছিল সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর। ওই সময় শুকনো পাট প্রতিমণ বিক্রি হয় দেড় হাজার টাকা থেকে ১৮শ’ টাকা পর্যন্ত।

তারপর থেকে দাম বাড়লেও বগুড়ায় প্রতিবছর পাট চাষের জমি কমতে থাকে। ২০১৯ সালে জেলায় ১২ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত মৌসুমে জেলায় পাট চাষ হয় ১০ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে। আর এবার হয়েছে মাত্র ৮ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া সূত্র বলছে, চলতি মৌসুমে বগুড়ায় ১২ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা ৩ হাজার ৯৪৭ হেক্টর কমে চাষ হয় ৮ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ১৮৭ বেল। এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৬৪ হেক্টর জমির পাট কাটা হয়েছে, যা মোট চাষাবাদের ৬৪ শতাংশ। এখন পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে ৮২ হাজার ৪২৬ বেল পাট।

কৃষকরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরেই প্রয়োজনীয় বৃষ্টির অভাবে পাট চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি যথাযথভাবে পাট না পঁচানোর কারণে আঁশের মানও ভালো হচ্ছে না। বিগত কয়েক বছর পাটের দাম ভালো হলেও চাষাবাদ কমেছে। অনাবৃষ্টি ও প্রখর রোদের কারণে পাট চাষ মৌসুমের শুরুতে বীজ বপণ করলেও চারা গজাচ্ছে না।

আবার চারা গজালেও বৃষ্টির অভাবে তা পরিপুষ্ট হচ্ছে না। এ রকম নানা সংকটের পর পাট কেটে পানির অভাবে তা সময়মত পঁচানো যাচ্ছে না। তারা আরও বলছেন, আগে গ্রাম-গঞ্জে খাল-বিল, পুকুর, ডোবা, নালা থাকলেও এখন বেশিরভাগই ভরাট হয়ে গেছে। আর যা অবশিষ্ট আছে তাও মাছ চাষের আওতায় আসায় সেগুলোতে পাট পঁচানো যাচ্ছে না, ফলে পাট চাষের প্রয়োজনীয় পানি ও বৃষ্টির অভাবে প্রত্যাশিত দামের পরেও পাটের উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান বলছেন, পাট মূলত বৃষ্টি নির্ভর ফসল। পাট চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির বিকল্প কিছু নেই। সরকারি নানা উদ্যোগ, উন্নত জাত ও বিগত কয়েক বছর রেকর্ড দামে কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছিলেন।

এতে সোনালী আঁশের সম্ভাবনার দুয়ার আবার খুলতে শুরু করেছিল। তবে বিগত কয়েক বছর অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে কৃষরা পাট চাষে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। বিশেষ করে চাষ মৌসুমের শুরুতে এবং পঁচানোর সময় পানির অভাব প্রকট আকার ধারণ করছে। ফলে চাষ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কৃষি বিভাগকে বেগ পেতে হচ্ছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS