ভিডিও

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ১৩ পুলিশ হত্যা ঘটনায় মামলা, আসামি ৬ হাজার

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৪, ০৮:৫২ রাত
আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২৪, ০৮:৫২ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ ১৩ পুলিশকে হত্যার ঘটনায় থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) আব্দুল মালেক বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এ হামলায় এনায়েতপুর থানায় ৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে গত রোববার রাতে চারজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ছয় হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এনায়েতপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ ১৩ পুলিশ হত্যা মামলায় থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুল্লুক চাঁন, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূইয়ার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত প্রায় ছয় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান। মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা এনায়েতপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করে। এসময় ওসি আব্দুর রাজ্জাক হ্যান্ড মাইক দিয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তার কথায় ছাত্র-জনতারা চলে যায়।

পরে ১নং আসামি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চুর নেতৃত্বে এজাহারনামীয় আসামিসহ প্রায় ছয় হাজার দুষ্কৃতকারী দেশি অস্ত্র নিয়ে থানায় হামলা চালায়। আত্মরক্ষায় পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। আসামিরা পুলিশের কোয়ার্টার ও ওসির বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুন দেখে পুলিশ সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

আসামিরা থানা কম্পাউন্ডে উপ-পরিদর্শক(এসআই) তহছেনুজ্জামান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ওবায়দুর রহমান, কনস্টেবল আরিফুল আজম, রবিউল আলম শাহ, হাফিজুল ইসলাম, শাহিন, রিয়াজুল ইসলামকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। একপর্যায়ে আসামিরা থানা ভবনের ভেতরে ঢুকে পুলি ও জনসাধারণের জমা দেওয়া বেসরকারি অস্ত্র ও গুলি লুট করে।

পরে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে থানার ভেতর ও বাইরে থাকা অফিসার ও ফোর্সকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এসময় থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক, এসআই আনিছুর রহমান, এসআই রহিজ উদ্দিন খান, এসআই প্রনবেশ কুমার বিশ্বাস, কনস্টেবল আব্দুল সালেক, কনস্টেবল হানিফ আলী থানার পাশে বাবু মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেন।

আসামিরা তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে গিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় নারী কনস্টেবল রেহেনা পারভীনকে মারধর করে। পরবর্তীতে বিকেলে সেনাবাহিনীর একটি দল থানা এলাকায় পৌঁছে নিহত পুলিশ সদস্যদের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠান।

আসামিরা ৫টি পিস্তল ও ৮টি ম্যাগজিন, একটি চায়না পিস্তল ও দুটি ম্যাগজিন, চারটি চায়না রাইফেল ও ৩৭টি চার্জার, দুটি চায়না রাইফেল টাইপ ও দুটি ম্যাগজিন, ছয়টি ১২ বোর শর্টগান, একটি ৩৮ মি.মি. গ্যাসগান লঞ্চার, ৭.৬২/৩৯ মি.মি. গুলি ১৬৮ রাউন্ড, ৭.৬২/২৫ মি.মি. গুলি ১৬ রাউন্ড, ৯/১৯ মি.মি. গুলি ৬০ রাউন্ড, ১২ রোব শর্টগান (রাবার কার্তুজ) ২২৭ রাউন্ড, ১২ রোব শর্টগান (লেটবল কার্তুজ) ৩৫৯ রাউন্ড, লং রেঞ্জ গ্যাস শেল ৩৮ রাউন্ড, শর্ট রেঞ্জ গ্যাস শেল ৩৬ রাউন্ড লুট করে নিয়ে যায়।

এছাড়া আসামিরা একটি ডাবল কেবিন ও একটি সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ ভ্যান, পুলিশ সদস্যদের ১৫টি মোটরসাইকেল ও একটি ট্রাক, বিভিন্ন সময় আটক করা নতুন পুরাতন ১২টি মোটরসাইকেল ও থানার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, ওয়াকিটকি পুড়িয়ে দেয়। এতে এনায়েতপুর থানায় চার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS