ভিডিও

দেশ সংস্কার জরুরি

প্রকাশিত: অক্টোবর ০২, ২০২৪, ১০:৫০ রাত
আপডেট: অক্টোবর ০২, ২০২৪, ১০:৫০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ছয় সংস্কার কমিশন পুরোদমে কাজ শুরুর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী উপদেষ্টা পরিষদ। খুব দ্রুতই এই আলোচনা হবে। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগদান উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে মূলত এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে খুবই সফল ও ঐতিহাসিক অভিহিত করেন তার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

এদিকে দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাপানের সংবাদ মাধ্যমে এনএইচকে ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, যতদ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষ করাই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ। তার সরকার প্রস্তুত হলেই নির্বাচন দেওয়া হবে। আমরা কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে রাজি নই, বলেন প্রধান উপদেষ্টা। গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে তিনি এনএইচকে ওয়ার্ল্ডকে এই সাক্ষাতকার দেন।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটলে নোবেল জয়ী ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালনকারী ছাত্রদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, এই বিপ্লব সফল করতে তরুণরা তাদের জীবন দিয়েছে। সরকারের নীতি নির্ধারণে তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়েও নিজের অবস্থানের কথা তিনি সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জটিল এই সময়ে বাংলাদেশ তার সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী জাপানের সমর্থন প্রত্যাশা করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অর্থনীতির পুনর্গঠন এবং গণতন্ত্রকে দৃঢ়ভিত্তি দিতে জাপানের সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পত্র-পত্রিকার খবরে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান। অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার থেকে কমিশরে কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত  ছয় সংস্কার কমিশন গঠনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। সরকারের চাওয়া হলো, কাজ শেষে কমিশনগুলো আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।

আমরা মনে করি, আগে দেশ সংস্কার খুব জরুরি। বিগত হাসিনা সরকার রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্র গুলি ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সরকারের বিভিন্ন স্তরে নিয়ম-শৃঙ্খলা ফেরাতে সময় দরকার। যেমন পুলিশকে এখনও পুরোদমে তাদের দায়িত্ব পালনে সক্রিয় করা যায়নি। আর্থিক খাতগুলোকে লুন্ঠিত করা হয়েছে। হাসিনা সরকারের দেয়া প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতা কর্মি তা সিভিল সোসাইটির হাজার হাজার নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার বোঝা।

কমিশন গঠন করে এসব রাজনৈতিক মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে সরকারকে। ফাসিবাদি আওয়ামী সরকারের পতনের ইতিমধ্যে প্রায় দুই মাস অতিক্রান্ত হলো। এখনও বিরোধী রাজনৈতিক নেতা কর্মিদের আদালত পাড়ায় নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মিথ্যা মামলায় এখনও কারাগারে যেতে হয়। দ্বিতীয় স্বাধীনতা, ছাত্র-জনতার বিপ্লব, গণঅভ্যুত্থান সফল করতে শত শত ছাত্র-জনতার জীবন বিসর্জন দেওয়া কী শুধু সময় ক্ষেপনের মাঝেই ঘুরপাক খাবে? সময় ক্ষেপন নয়, বিপ্লবের সফলতা মানুষ দেখতে চায়, এর সুফল জনগণ পেতে চায়।

আমরা মনে করি শাসন ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার দরকার। বিগত সরকার ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করেছিল। এখন ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিভাগ-আইন, শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকতে হবে।

দলীয় লোকজনকে অপসারণ করা জরুরি। সব বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। ঘুষ ও দুর্নীতি বর্তমান সমাজের একটি ব্যাধি। এই ব্যাধি সংস্কৃতি থেকে বের করে আনতে হবে সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS