ভিডিও

থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৫:৩০ বিকাল
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৫:৩০ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সড়কে দুর্ঘটনা আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোথাও সড়ক চলাচলে কোন শৃঙ্খলা আছে বলে মনে হয় না। বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা নেই।

চলছে অবৈধ যানবাহন। মূল্যবান প্রাণ যাচ্ছে সড়ক-মহাসড়কে। দেশের সড়কপথ যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। রোববার সড়ক দুর্ঘটনায় কুমিল্লায় ৫ জন সহ সারাদেশে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। কুমিল্লার দাউদকান্দিতে কাভার্ডভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার গৌরিপুর-কচুয়া সড়কের মহানন্দ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এর আগে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে ডুমুরিয়া উপজেলার আঙ্গারদোহা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজনসহ মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শনিবার বিকাল ৪টার দিকে ট্রাক ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তারা নিহত হন। এর ক’দিন আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়েসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন।

এর মধ্যে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ৩ জন করে এবং নাটোরের বড়াইগ্রাম, কক্সবাজারের ঈদগাঁও, ফেনী, শেরপুরের নকলা, মেহেরপুরের গাংনী ও ঢাকার ডেমরায় একজন করে নিহত হন। এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে-মালবাহী পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী, ট্রাক-অটোরিক্সায় সংঘর্ষ, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটির সঙ্গে মালবাহী ট্রাকের সংঘর্ষ, ট্রলি গাড়ির ধাক্কায়, কাভার্ডভ্যানের চাপাসহ রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাকের ধাক্কায়।

আমাদের সড়ক-মহাসড়কগুলোকে যেন ইচ্ছা করেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত করা হচ্ছে। এখানে কারো কোন কর্তৃত্ব আছে বলে মনে হয় না। কারো যেন কোন দায়িত্বও নেই। মানা হয়না ট্রাফিক আইন। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন, গতিসীমা মেনে না চলার পাশাপাশি সড়ক পারাপারে পথচারীদেরও নিয়ম মেনে না চলার প্রবণতা আছে। মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন চলাচল করছে। পুরো সড়কপথেই বিশৃঙ্খলা বিদ্যমান। কিন্তু এসব দেখার যেন কেউ নেই।

দেশে প্রতিবছর দুর্ঘটনায় ১৯ হাজারের বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। আহত হচ্ছে প্রায় সমান সংখ্যক মানুষ। কিন্তু সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না। বিভিন্ন গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য বাস-ট্রাক দায়ী হলেও এসব মৃত্যুদানবের গতি নিয়ন্ত্রণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দেশের সড়কপথে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। সড়ক-মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা বসানো সম্ভব হয়নি। গতিসীমা অতিক্রমকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের কোন সুযোগও নেই।

ফলে রাস্তায় উঠেই চালকরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অনেক বাস-ট্রাক কারসাজি করে নির্ধারিত আয়তনের চেয়ে বড় করে বডি তৈরি করা হয়। এসব অনিয়ম ঘটছে চোখের সামনে। সারাদেশের মতোই রাজধানীতেও চলাচল করছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণবিহীন, অদক্ষ চালক তো আছেই। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো গেলে দুর্ঘটনা অনেক কমে যেত। সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিলে রক্ষা পেত অনেক প্রাণ।

মানুষের জীবন যে কত তুচ্ছ যেন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পায় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। যদি যোগ্য লোককে লাইসেন্স দেয়া হয় তা হলেই সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে। এছাড়া চালকের বিশ্রামের বিষয়টিও ইদানিং আলোচনায় উঠে এসেছে। ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে গাড়ি চালাতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটবেই। পথচারীদেরও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার কোন বিকল্প নেই।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS