ভিডিও

খাদ্যশস্য উৎপাদন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ০৬:৪০ বিকাল
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ০৬:৪০ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

দেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত আছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেশের জনসংখ্যা যদি বেড়ে ১৭ কোটি ১৮ লাখ হয়, তাহলেও দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো আশংকা নেই সরকার আপদকালীন মজুতের জন্য দেশব্যাপী নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খাদ্য শস্য সংগ্রহ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, খাদ্য উৎপাদনে নীরব বিপ্লব বাংলাদেশকে বিশ্ব মঞ্চে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে উন্নীত করেছে। বিশেষ করে কৃষি কাজ কমতে থাকা, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ফলে সামগ্রিক এ পরিস্থিতি অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়।

জানা যাচ্ছে, ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। এ ছাড়া অতীতের খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। বৈশ্বিক সংকটেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে খাদ্য উৎপাদনে অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে। তবে সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেওয়া দরকার, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় দেশের ২৪ শতাংশ মানুষ- এমনটিও সাম্প্রতিক সময়ে জানা যাচ্ছে।

ফলে যখন খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় দেশের ২৪ শতাংশ মানুষ, এটা এড়ানোর সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। তথ্য মতে, স্বাধীনতার ঠিক পরে ১৯৭২ সালে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ টন। সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য ওই খাদ্য পর্যাপ্ত ছিল না।

এর পরের ৫০ বছরে মানুষ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি আর আবাদি জমি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। অথচ দেশে এখন খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে চারগুণ বেশি। জানা যায়, ভুট্টাসহ এর পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টন। দেশের খোর পোশ কৃষি এখন বাণিজ্যিক কৃষিতে উন্নীত হয়েছে। জিডিপিতে এখন কৃষির অবদান ৪ শতাংশ। কৃষিতে দেশের ৪০ শতাংশ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে- যা সামগ্রিকভাবেই অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে।

কেবল খাদ্য মূল্যস্ফীতি নয়, মানুষের খাদ্য বহির্ভূত ব্যয়ও বেড়েছে। এর মধ্যে বাড়িভাড়া, স্বাস্থ্য বা শিক্ষার মতো বিষয় রয়েছে। বাড়তি চাপে মানুষ খাদ্য কেনা কমিয়ে দেয় বা দিতে বাধ্য হয়। এটা এমন এক পরিস্থিতি, যখন মানুষের খাবার ফুরিয়ে যায়, কোনো কোনো দিন অভুক্ত থাকে।

মানুষের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকিতে থাকে। মাঝারি ধরনের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, এটা এমন এক পরিস্থিতি, যখন মানুষের খাদ্য পাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা থাকে। বছরের কোনো কোনো সময় তাদের খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হয় অথবা খাবারের পরিমাণ ও মানের অবনমন ঘটে। অর্থ ও অন্য সম্পদের ঘাটতিতেই এমনটা ঘটে।

এর আগে, খাদ্য উৎপাদনে ভর্তুকি দেওয়া বা দাম বেধে দেওয়ার পদক্ষেপকে নিরুৎসাহিত করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। বরং তার পরামর্শ, বিশ্বজুড়ে সার ও খাদ্য সামগ্রীর সরবরাহ বাড়াতে মনোযোগ দিতে হবে। আর হতদরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ সহায়তা নিশ্চিত করার বিষয়টিও জোর দেন।

এখন খাদ্য ও জ্বালানি পণ্যের দামের উর্ধ্বগতির মধ্যে বিদেশি মুদ্রার সংকটে পড়ে কিস্তি পরিশোধে সমস্যায় পড়ছে অনেক দেশে- এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। অর্থাৎ বিশ্বজুড়েই খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে-এটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

পাশাপাশি খাদ্যশস্য উৎপাদনের অগ্রগতি ধরে রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS