ভিডিও

দুর্নীতির রাহুগ্রাসে হতে মুক্ত পারেনি বাংলাদেশ

প্রকাশিত: মার্চ ০৯, ২০২৪, ০৫:৪৩ বিকাল
আপডেট: মার্চ ০৯, ২০২৪, ০৫:৪৩ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

দেশে একটি বহুল আলোচিত বিষয় দুর্নীতি। স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন নামে একটি সংস্থা থাকলেও এটি কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে, তা সবার প্রশ্ন। দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশ এখনো মুক্ত হতে পারেনি।

বাংলাদেশ এক সময় দুর্নীতির জন্য পর পর পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দুর্নীতির সেই কলঙ্ক তিলক মোচন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি-এটা যেমন সত্য, একইভাবে সত্য যে, আমরা সমাজ-রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে পারিনি। যার কারণে আমাদের আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে তার রয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি।

আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি তার শেকড়-বাকড় গেঁড়ে বসেছে। সর্বগ্রাসী দুর্নীতি বাংলাদেশের সব উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ম্লান করে দিচ্ছে, এ কথাটিও বহুল আলোচিত। দেশের প্রতিটি খাতেই চলছে দুর্নীতি। অবৈধ অর্থের লেনদেন ছাড়া কোনো কাজ হয় না।

আমরা নিজেরাও অনেক সময় ব্যক্তিগত সুবিধা নিতে মনের অজান্তেই জড়িয়ে পড়ছি দুর্নীতিতে। দুর্নীতি যেন মানুষের রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। কোনোভাবেই এটি দূর করা যাচ্ছে না। সবার সহযোগিতা পেলে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব। দুর্নীতিবাজদের ধরলেই বিভিন্নভাবে তারা পার পাওয়ার চেষ্টা করে।

ঘুষ লেনদেন আমাদের দেশে ‘ওপেন সিক্রেট’ একটি বিষয়। সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব কাজেই কম বেশি ঘুষ লেনদেন হয়। ঘুষ ছাড়া অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজ আটকে যায়, বন্ধ হয়ে যায় অনেক প্রকল্প। বিগত বছরগুলোতে এর পরিমাণ কমলেও থেমে নেই। আইনে ঘুষ লেনদেনে জড়িত উভয় পক্ষই অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত।

বিভিন্ন সময়ে ঘুষ লেনদেনের বড় বড় চিত্র উঠে আসে এবং অনেকে বিচারের মুখোমুখিও হয়। প্রকৃত পক্ষে যেহেতু ঘুষ দেওয়া নেওয়া দুই-ই অপরাধ, তাই দুই পক্ষকেই সমান মাপে বিচার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি করব না, কাউকে করতে দেবো না।

বাস্তবতা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা সত্ত্বেও দেশ থেকে দুর্নীতি কিছুতেই কমছে না। দুর্নীতি কমানোর লক্ষ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়িয়েও দুর্নীতি রোধের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। আর এ বিষয়টি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সম্প্রতি তুলে ধরেছে তাদের এক গবেষণা প্রতিবেদনে।

বলাই বাহুল্য, এক সময় দুর্নীতি বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বা টিআইবির যখন দুর্নীতির ধারণা সূচকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে চিহ্নিত করেছিল, তখন আমাদের মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। পরের কয়েকটি বছরেও একই হতাশার চিত্র ছিল। বিশ্লেষকরা বার বার বলছেন, দুর্নীতি কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের মানসিকতা বদলাতে হবে। অন্যদিকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে দুর্নীতিগ্রস্তদের আতঙ্কে রাখতে হবে সরকারকে।

এতে দুর্নীতি কমবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা যাতে দুর্নীতি না করে এ জন্য সরকার তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছে, তবু কেন ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না ? বেতন-ভাতা সুবিধাদি যেহেতু বাড়ছে তাহলে দুর্নীতি কেন হবে-এটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। মাঝে মধ্যে দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে যেসব খবর প্রকাশিত হয় তা আঁতকে ওঠার মতোই।

একটি দেশের উপর থেকে নিচের স্তর পর্যন্ত এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারি দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত থাকে আর ্এমন অভিযোগ উঠে আসে তখন বিব্রত ও বিস্মিত হওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকে না। দুর্নীতির এ ভয়াবহ অবস্থার ভেতর দিয়ে একটি দেশের অগ্রগতি কীভাবে নিশ্চিত হতে পারে।

প্রত্যাশা থাকবে, সরকার সংশ্লিষ্টরা প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার নির্দেশনা মেনে চলবেন। আর তাতেই দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হবে এ দেশ।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS