ভিডিও

মশার উপদ্রব বৃদ্ধি

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৪, ০৭:০১ বিকাল
আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৪, ০৭:০১ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

মশার কারণে অতিষ্ঠ দেশবাসী- এমন খবর পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন সময়েই প্রকাশিত হয়েছে। শীত শেষে তাপমাত্রা বাড়ছে। আর যখন জানা যাচ্ছে, এই তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মশার উপদ্রব বাড়ছে- তখন তা কতটা উদ্বেগের বলার অপেক্ষা রাখে না।

কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশে মশার ঘনত্ব বেড়ে চারগুণ হতে চলেছে। এর ফলে কয়েল জ্বালিয়ে কিংবা ওষুধ ছিটিয়ে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই।

দেশে কিউলেক্স  ও এডিস মশার প্রকোপ ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। গ্রীষ্মকাল আসার আগেই মশার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ মানুষ। কোনো কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না মশার বিস্তার। গবেষণা বলছে, জানুয়ারি মাসের তুলনায় চলতি মার্চ মাসে কিউলেক্স মশার পরিমাণ ৪০ শতাংশ বেড়েছে।

গবেষকরা বলছেন, সংশ্লিষ্টরা যথাসময়ে নজর দিলে মশার ঘনত্ব কমে আসত। মশা নিধনে দেশে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোর তৎপরতা খুব কম। যদিও সংশ্লিষ্টরা দাবি করেন, মশা নিধনে নিয়মিত কাজ করছেন তারা। কীটতত্ত্ববিদেরা জানান, দেশে মশা আছে প্রায় ১২৩ প্রজাতির।

এর মধ্যে ১৬ প্রজাতির মশার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানে বছর জুড়ে যে কয়েক প্রজাতির মশা থাকে, তার মধ্যে কিউলেক্স মশা ৯৭ শতাংশের বেশি। মশার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেন, শীতকালে যখন বৃষ্টি থাকে না, তখন ড্রেন, ডোবা, নর্দমার পানি ঘন হয়ে পানিতে জৈব উপাদান বেড়ে যায়। এ সময় কিউলেক্স মশার প্রচুর প্রজনন ঘটে। আর এই কারণেই মশা বেড়ে গেছে।

শুধু কিউলেক্স নয়, এডিস মশার কারণে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবও শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু প্রাণঘাতী রোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অনুসন্ধানে যে তথ্য মিলেছে তা হলো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাননি অধিকাংশ রোগী।

এ রোগের কোনো প্রতিষেধক নেই। চিকিৎসকরা লক্ষণ দেখে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ রোগ থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। মশা নিধনকারী ওষুধ বেশি বেশি করে স্প্রে করা যেতে পারে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে অযৌক্তিক ভীতিতে আতঙ্কিত না হয়ে জ্বর যাতে সহনীয় পর্যায়ে থেকে সে চেষ্টা করতে হবে।

পরিমিত পানি পানে উদ্যোগী হতে হবে। অসুস্থ বোধ হলে হাসপাতালে ভর্তি বা চিকিৎসকদের শরনাপন্ন হতে হবে। এডিস মশা বন জঙ্গলে নয় মানুষের বাসগৃহেই আস্তানা গাড়ে। ডেঙ্গু  জ্বর থেকে রেহাই পেতে হলে এডিস মশার বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে হবে। আঘাত হানতে হবে এডিসের আস্তানায়। এ মশার প্রজনন থামিয়ে দিতে হবে। সেদিকেই সবাই নজর দেবেন এমনটিই কাম্য।

পত্র-পত্রিকার খবরে জানা গেছে, মশা নিধনে পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনগুলোতে অর্থ সংকট রয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকার পুকুর ডোবা নালা-নর্দমার কচুরিপানা ও ময়লা পরিষ্কার না করায় সেগুলো মশা উৎপাদনের খামার হিসেবে বিরাজ করছে। মশা নিধনের জন্য যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে তার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন কম নয়।

শহর- গ্রামের ড্রেন- নালা -ডোবাগুলো বদ্ধ আবর্জনা-কচুরিপানায় ছেয়ে থাকে। মশার উৎসস্থল এসব জায়গা। এগুলো পরিষ্কার করে মানসম্মত মশার ওষুধ স্প্রে করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা, জনসচেতনতা বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে- এটিকে সামনে রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মশা নিধনে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। ড্রেন-ডোবা-নালা পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নেওয়া হলে মশার উৎপাত শতভাগ দূর না হলেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS