ভিডিও

মহান স্বাধীনতা দিবস গৌরবের দিন

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৪, ০৭:৫৭ বিকাল
আপডেট: মার্চ ২৬, ২০২৪, ০৭:৫৭ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

স্বাধীনতা অর্জনের পাঁচ দশক পেরিয়ে এসেছি আমরা। ২৬ মার্চ, আমাদের গৌরবের দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুজিবনগর সরকার, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী নেতারা, মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিপাগল মানুষকে আজ সম্মান জানানোর দিন। বিজয় গৌরব স্মরণের দিন। বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা।

টানা নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ ও লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’-বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, ছেলে-মেয়েরা এবং মায়েরা। এর বিপরীত ছবিও ছিল। এদেশেরই কিছু মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে রাজাকার, আলবদর, আলশামস নামে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বাহিনী গড়ে তোলে।

তারাও শামিল হয় পাকিস্তানিদের সঙ্গে বাঙালি নিধনে। এরাই স্বাধীনতার ঠিক আগে, হত্যা করে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। এদের বিচার শুরু হয়েছে এবং রায়ও কার্যকর হয়েছে, যা এখনও চলমান। এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে রক্তস্নাত পথ ধরে। স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষকে আত্মোৎসর্গ করতে হয়েছে।

১৯৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশভাবে জয়ী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তারা রাতের আঁধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। শুরু হয় ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম গণহত্যা। জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে ২৬ মার্চের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ডাক দেন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের।

দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমপর্ণের মাধ্যমে অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের মহিমান্বিত বিজয়। মহান স্বাধীনতার এই দিনে আমরা স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে। স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং পাকিস্তানি হানাদারদের দ্বারা নিগৃহীত দুই লাখ মা-বোনকে।

কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করছি আমাদের গৌরব বীর মুক্তিযেদ্ধাদের। মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু-সুহৃদ, বিশাল হৃদয় বিদেশি বন্ধুদের। একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন। সেইস্বপ্ন পূরণে দেশ গত পাঁচ দশকে অনেকদূর এগিয়ে গেছে।

ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বিপুলভাবে অর্থনীতির সম্ভাবনা বেড়েছে বলেই এই স্বীকৃতি। এছাড়া দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েছে তারুণ্য। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ চেতনা অব্যাহত থাকলে তা হবে মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ অর্জনের একটি।

আর অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে এভাবেই রচিত হবে প্রকৃত ও কার্যকর ভিত। হিংসা, বিদ্বেষমুক্ত হয়ে, সুস্থধারার রাজনীতি চর্চার মধ্য দিয়ে আমাদের গণতন্ত্র সুসংহত করতে হবে। বিভাজনের রাজনীতির বাইরে এসে আমাদের দেশের অগ্রগতির ধারায় শরীক হতে হবে।

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত, স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত, গণতান্ত্রিক, উন্নত, প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে রাজনৈতিক ঐকমত্য। ইতিহাসের এই অধ্যায়ে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে যাওয়ার মহান দায়িত্ব পালন করতে হবে আজকের রাজনীতিবিদদেরই।

তাহলে মুক্তি পাবে গণতন্ত্রের প্রতিবন্ধকতাগুলো থেকে। যে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে এদেশের আপামর জনসাধারণ একাত্তরের ২৬ মার্চ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, জীবনপণ শপথ নিয়েছিল, তা পূরণ করার দায়িত্ব আমাদের সবার। মহান স্বাধীনতা দিবসে আমরা সেই দায়িত্বই আরেকবার স্মরণ করি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS