ভিডিও

ভোগান্তির লোডশেডিং

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ১১:০৩ রাত
আপডেট: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১১:১৩ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

চলতি মাসে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে সাড়ে ১৭ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে বলে জানিয়েছিল বিদ্যুৎ বিভাগ। কিন্তু যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এপ্রিলেই চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে সক্ষমতা থাকলেও এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। সে ক্ষেত্রে দেশব্যাপী লোডশেডিংয়ের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপদাহে পুড়ছে গোটা দেশ।

খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকে। স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ঘরেও টিকতে পারছে না দেশের নানা প্রান্তের মানুষ। বিদ্যুতের ঘাটতিতে অনেক এলাকায় সেচকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তীব্র গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে।

গ্রাম এলাকায় দীর্ঘ সময় লোডশেডিং হচ্ছে। এরই মধ্যে গ্যাস সরবরাহ বাড়িয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো হলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পকারখানারও লোডশেডিং বাড়তে শুরু করেছে।

বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, ৪০০ থেকে এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। তবে পত্রপত্রিকার খবরে বলা হয়, বাস্তব চিত্র ভিন্ন। দেশে কমপক্ষে আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডেই (আরইবি) প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে গত সোমবার রাত ৯টায়। এই সময় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উৎপাদন বাড়াতে। এর আগে রোববার রাতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট।

কিন্তু গরম বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পকারখানায়ও লোডশেডিং বাড়তে শুরু করেছে। ফলশ্রুতিতে দেখা যাচ্ছে, জনভোগান্তি যেমন বাড়ছে, তেমনি শিল্পকারখানায় উৎপাদন কমছে। অন্যদিকে, গ্রামাঞ্চলে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেচ কাজ স্বাভাবিক রাখতে না পারায় ফসল উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। বিপাকে হ্যাচারি-পোলট্রি খাত, ব্যয় বেড়েছে কুটির ও মাঝারি শিল্পে।

পত্রপত্রিকার খবরে বলা হচ্ছে জ্বালানি সংকট থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এ মুহূর্তে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেকেরও কম। দেশীয় উৎস থেকে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে না পারায় এবং জ্বালানি আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় টাকা ও ডলারের জোগান না থাকায় তেল-গ্যাস-কয়লা আমদানিতে ভাটা পড়েছে।

এ অবস্থায় বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকছে, ওদিকে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে, তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোও পুরোদমে চালানো হচ্ছে না। বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে অর্থের জোগান বাড়ানো হয়েছে ঠিকই; কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণের এই হাল-হকিকত কেন।

এটা তো জানা কথাই যে, গরমকালে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। সারাদেশে জমিতে সেচের পানি দিতে হয়, প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হয় এতে। গত দুই বছরেও গরমের সময় লোডশেডিং বেড়েছিল। গরমকালে সম্ভাব্য লোডশেডিংয়ের জন্য প্রস্তুতি থাকতে হয়।

যদিও দেশে বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার মেগাওয়াট। যার বড় একটি অংশ বেসরকারি খাতের অধীনে। কিন্তু চাহিদা না থাকায় এবং দ্বিগুণ উৎপাদন ব্যয়ের কারণে বিশেষ করে তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ কিভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেই বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে বিবেচনায় আনতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS