ভিডিও

সাইবার অপরাধ ও প্রতারক চক্র

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৪, ১১:০৬ রাত
আপডেট: মে ১৫, ২০২৪, ১১:০৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। এ ছাড়া এটি জানা গেছে যে, প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে- যা সামগ্রিকভাবেই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে।

উল্লেখ্য যে, ঘরে বসেই আয় করুন মাসে লাখ লাখ টাকা- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন লোভনীয় বিজ্ঞাপন অহরহ চোখে পড়ে। যেগুলো আসলে প্রতারণার ফাঁদ। এভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ছয় সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে বলে খবরে উঠে এসেছে।

তথ্য মতে, সম্প্রতি পুলিশের এন্টি-টেরোরিজম ইউনিট ঢাকার উত্তরা-পূর্ব থানাধীন ছয় নম্বর সেক্টর এলাকায় অভিযান চালায়। আর এ সময় গ্রেফতার হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘরে বসেই লাখ লাখ টাকা রোজগারের প্রলোভন দেখানো প্রতারক চক্রের ছয় সদস্য।

ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে চার বিদেশি (নাইজেরিয়ান ও ঘানা) নাগরিককে আটক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইমের একটা টিম। আটককৃতরা খেলোয়াড় ও স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন দশ বছর আগে।

মাত্র ৩০ দিনের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন দশ বছর আগে। মাত্র ৩০ দিনের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন তারা। আর অবস্থান করেন প্রায় দশবছর। এই দীর্ঘ সময় তারা বাংলাদেশে অবস্থান করে ফেসবুকে বিভিন্ন প্রতারণা চালিয়ে যেতে থাকেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও এত বছর তারা কী করে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন সেটাই বড় প্রশ্ন।

দেশে সাইবার অপরাধ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে টার্গেট নারী-পুরুষের সম্ভ্রমহানি শুধু নয়, হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অর্থবিত্ত। রাজধানীতে তো বটেই, দেশের আনাচে-কানাচে সক্রিয় অনেক সাইবার অপরাধী চক্র। সাধারণত নারীরা ব্ল্যাকমেলের শিকার হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। উচ্চ বিত্ত শ্রেণির ছেলেদেরও টার্গেট করে ব্ল্যাকমেল করছে সুসংঘবদ্ধ অপরাধীরা।

তাদের কেউ কেউ মডেলিং, র‌্যাম্পিংয়ের নামে ছড়াচ্ছে প্রতারণার জাল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অথবা খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে। পরে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া বা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আদায় করা হচ্ছে বিপুল অর্থ।

এই জাল থেকে বেরুতে না পেরে অনেকে বেছে নিতে বাধ হয়েছে আত্মহত্যার পথ। ইন্টারনেটে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রথমে বন্ধুত্ব, প্রেম আর বিয়ের প্রতিশ্রুতি। তারপর দৈহিক সম্পর্ক পাতিয়ে গোপনে অন্তরঙ্গ ছবি বা ভিডিও তৈরি করে বেছে নেওয়া হচ্ছে ব্ল্যাকমেলের পথ।

দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ যেহেতু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে সক্রিয় সেহেতু এ মাধ্যমকেই কাজে লাগাচ্ছে এক শ্রেণির প্রতারক। ব্ল্যাকমেলের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এসেছে কাউন্টার টেররিজমের সাইবার ক্রাইম বিভাগে এবং অপরাধীদের কাউকে কাউকে গ্রেফতার করাও হয়েছে। তবুও থামছে না অপরাধ।

এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে দেশে কড়া আইন থাকলেও সচেতনতার অভাবে অথবা লোকলজ্জার ভয়ে অনেকেই আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে ভয় পান। যা অপরাধীদের টিকে থাকতে সাহায্য করছে। আমরা ফেসবুক বা ইউটিউবে দেখছি তান্ত্রিক, কবিরাজ, জ্যোতিষীদের নামে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন। এ সব বিজ্ঞাপনে অশ্লীলতায় ভরা।

এরা মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অর্থ বিত্ত হাতিয়ে নিচ্ছে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ভরপুর এসব প্রতারক তান্ত্রিক, কবিরাজ, জ্যোতিষীকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা জরুরি। তাদের প্রতারণার জন্য কঠোর শাস্তি প্রয়োজন।

আমরা বলতে চাই, সাইবার অপরাধ বাড়তে থাকলে তা কতটা ভীতিপ্রদ-সেটা এড়ানোর সুযোগ নেই। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার কেন্দ্রিক আর্থিক অপরাধগুলোর পেছনে বেশ কয়েকটি পক্ষ কাজ করে। এ ধরনের চক্রগুলোকে দ্রুত শনাক্ত করতে না পারলে তারা একই ধরনের অপরাধ বারবার করতে থাকে।

এ ক্ষেত্রে শাস্তি থেকে পার পেয়ে যাওয়া অপরাধীদের দেখে অন্যরাও এসব অপরাধে উৎসাহিত হয়। ফলে এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়।

মনে রাখা দরকার, এর আগে এমনটি উঠে এসেছিল, সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত অপরাধীর মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি- ফলে তরুণরা বিপথগামী হলে তা অত্যন্ত শঙ্কাজনক। সরকারের কঠোর পদক্ষেপই কেবল পারে এ ধরনের প্রতারণা থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করতে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS