ভিডিও

অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা

প্রকাশিত: জুন ০১, ২০২৪, ০৫:৪৫ বিকাল
আপডেট: জুন ০১, ২০২৪, ০৫:৪৫ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

পত্র-পত্রিকার পাতা ওল্টালেই প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও অগ্নিকান্ডে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। গত বছর দেশে আগুনে প্রায় আটশ কোটি টাকার সম্পদ পুড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৭৭টি করে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। বছরটিতে অগ্নিকান্ডে ঘটনা ঘটেছে সাড়ে ২৭ হাজারেরও বেশি। আগুনে নিহত হয়েছেন ১০২ জন, আহত হয়েছেন ২৮১ জন।

চলতি বছর অগ্নিকান্ডের ঘটনা কমিয়ে আনতে সচেতনতার পাশাপাশি নানামুখী কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। তারা বলছেন, গত বছর সারা দেশে ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকান্ডের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এসব অগ্নিকান্ডে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২৮১ জন। আগুন নেভানোর সময় ফায়ার সার্ভিসের ৪৮ জন আহত হন। আর আগুন নেভাতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ফায়ার সার্ভিসের একজন।

গত বছর প্রতিদিন সারা দেশে গড়ে ৭৭টি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকান্ডে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকার সম্পদ ক্ষতি হয়েছে। আগুন নির্বাপনের কারণে রক্ষা পেয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। এসব অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বৈদ্যুতিক গোলযোগ, বিড়ি সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো ফেলে দেওয়া, গ্যাস ও লাকড়িসহ বিভিন্ন ধরনের চুলা ও গ্যাসের লাইন থেকে।

এ ছাড়া পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গুদাম ও প্লাস্টিক কারখানায় প্রায়ই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এসব অগ্নিকান্ডে মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি হয়। এ ছাড়া বস্তিতে আগুন লাগে। প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। বাসাবাড়ি বা দোকানপাটে আগুন লাগে সাধারণত গ্যাস লাইনের লিকেজ বা বিদ্যুৎ লাইনের শর্টসার্কিট থেকে। আমাদের দেশে এমন সব ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে- যেখানে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রচুর প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ২০১০ সালের ৩ জুন ঢাকার নিমতলীর অগ্নিকান্ডে ১২৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। ওই ঘটনা তদন্ত করে ১৭ দফা সুপারিশ পেশ করেছেন তদন্ত কমিটি। দু:খজনক হলেও সত্য যে, সুপারিশগুলো এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এ রকম অনেক সুপারিশই আলোর মুখ দেখে না। যার কারণে অগ্নিকান্ডের ঘটনা থেমে নেই, পুরান ঢাকায় কেরানীগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকায় কেমিক্যাল গুদাম ও প্লাস্টিক কারখানায়।

মিরপুর বস্তি, আশুলিয়া তাজরীন ফ্যাশন, টঙ্গির কয়েল কারখানা প্রভৃতি- দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। দেশে একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। রাজধানী ঢাকাতে কেন একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে? এর পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায় না কেন, তা ভাবতে বিস্ময় লাগে।

একের পর এক বস্তিতে আগুনের ঘটনা দেশে হতদরিদ্রদের ওপর চরম আঘাত। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে নানাভাবেই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে- যা অত্যন্ত উদ্বেগের। এমনিতেই নানা কারণে মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। অগ্নিকান্ডের কারণে প্রাণহানি অত্যন্ত দু:খজনক। ফলে অগ্নিকান্ডের বিষয়ে সবারই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য বল্ইে আমরা মনে করি।

কেননা একটু সচেতনতা ও সাবধানতা আমাদের রক্ষা করতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা থেকে। আর এই বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে, সচেতনতা বাড়াতে হবে। যে কোনো অগ্নিকান্ড নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তা জনসমক্ষে প্রচার হয় না বললেই চলে।

কী কারণে অগ্নিকান্ড ঘটছে তা জানা গেলে জনসতর্কতা গড়ে তুলতে সহজ হয়। আগুন নেভানোর বিভাগকে আরও আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি। সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে এসব দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS