ভিডিও

মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার

প্রকাশিত: জুন ০২, ২০২৪, ১০:৩৮ রাত
আপডেট: জুন ০২, ২০২৪, ১১:০৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

৩১মের পর বাংলাদেশ সহ ১৫টি দেশ থেকে আর কোনো শ্রমিক মালয়েশিয়ায় ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কুয়ালালামপুর। দেশটির এমন সিদ্ধান্তে পরিবর্তন না আসার কথা জানিয়েছেন খোদ ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাই কমিশনার হানা মোহাম্মদ হাসিম।

মালয়েশিয়ায় শ্রম অভিবাসনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ উঠেছে খোদ মালয়েশিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে রিক্রুটিং এজেন্টদের সিন্ডিকেট এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের বিরুদ্ধে উঠেছে অনিয়মের অভিযোগ অনিয়মের কারণে কর্মীদের কাছ থেকে অভিবাসন ব্যয় বাবদ নির্ধারিত সীমার অধিক অর্থ নেওয়া হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপের পর মালয়েশিয়া গতকাল থেকে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশসহ ১৫টি ‘সোর্স’ কান্ট্রি’ থেকে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে মালয়েশিয়া। এদিকে মালয়েশিয়ার সরকারের কর্মী নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত এক মাস আগে বাংলাদেশকে জানালেও বিষয়টি প্রথমে গোপন রাখা হয়।

শেষ মুহূর্তে বিষয়টি জানানো হলে অনুমোদন পাওয়ার পরও প্রায় ২০ হাজার কর্মীর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফ্লাইট পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক অনিশ্চিত পরিস্থিতির। জাতিসংঘের চারজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ অভিযোগ করেছেন, কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুই হয় মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে।

২৯ মে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) -এর সঙ্গে আলাপ কালে এ তথ্য জানান হাই কমিশনার। হাই কমিশনার বলেন, কর্মীদের কর্ম পরিবেশ উন্নত করতে মালয়েশিয়া সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আন্তরিক।

৩১মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় কোটা অনুযায়ী সব কর্মী পাঠাতে হবে। বিষয়টি আগে জানানো হয়েছে। মালয়েশিয়া শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের ১৫টি দেশের জন্য ৩১মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করেছে।

এদিকে অনেকের অভিযোগ বিমানের টিকিটের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সিন্ডিকেট চক্র মালয়েশিয়ার ৩০ হাজার টাকার ওয়ানওয়ে টিকিটের দাম এখন ৯৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়াচ্ছে যে এসব দেখার কেউ নেই। এ ব্যাপারে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নিরব ভূমিকা পালন করছে।

এদিকে মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার বন্ধ হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি কর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, সিন্ডিকেট চক্রের অনিয়ম দুর্নীতি এবং অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়ের কারণে ৩১মের পর থেকে জনশক্তি রফতানি বন্ধ হয়ে গেছে। দালালদের হাত বদল হয়ে প্রায় চার থেকে ৫ লাখ টাকা ব্যয় করে কর্মীরা দেশটিতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) যুগ্ম মহাসচিব মো: ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১০ লাখ কর্মীর মেডিকেল চেকআপ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। দেশটিতে প্রবেশের সময় বৃদ্ধি না হলে প্রায় ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া গমনে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়ায় গিয়ে শোষণের শিকার হচ্ছে। দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মীরা অস্থিতিশীল ও অসম্মানজনক অবস্থায় রয়েছে। শোষণকারী নিয়োগ কর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি অপর্যাপ্ত।

অপরদিকে কোটা পদ্ধতিতে সংস্কার সাধনের পর এবং ৩০ জুন শ্রমিকদের আসার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে চিন্তা করে হবে বলে জানিয়েছেন মানব সম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম।

এদিকে অবৈধ নিয়োগের কারণে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করেছে মালদ্বীপ। মঙ্গলবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘মালদ্বীপের কিছু কোম্পানি জাল কাগজপত্র দাখিল করে শ্রমিক নিয়োগ করেছে।

তাই গত এক মাস আগে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। মালয়েশিয়া এবং মালদ্বীপের শ্রম বাজার যেন দ্রুত পুনরুদ্ধার হয় সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS