ভিডিও

দাম বেড়েছে নিত্য পণ্যের

প্রকাশিত: জুন ০৮, ২০২৪, ১১:১১ রাত
আপডেট: জুন ০৯, ২০২৪, ১২:৫৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

দেশে জীবন জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তায় সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সমস্যার প্রভাব তুলে ধরতে কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত জরিপ চালাচ্ছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। গত বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে পরিচালিত সপ্তম কিস্তির ফলাফলে উঠে আসা রিপোর্ট অনুযায়ী দেশিখানাগুলোর প্রায় অর্ধেকই খাদ্যের উচ্চ মূল্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

গত কয়েক মাসে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মূল্যস্ফীতির ও উর্ধ্বমুখিতাকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা গোটা খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই হুমকির দিকে ঠেলে দিতে পারে। দেশের প্রতিটি বিভাগ ও হটস্পটে খাদ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক নানা সংকটের প্রভাব এখন বাড়তে দেখা যাচ্ছে।

নিত্য পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। স্বভাবতই বিপাকে বাড়ছে সাধারণ মানুষ। আমজনতার কাছে সরকারের গ্রহণ যোগ্যতা ক্ষুন্ন করছে এই নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা। অসৎ ব্যবসায়ীরা নৈতিকতার মাথা খেয়ে যেভাবে কথায় কথায় নিত্য পণ্যের দাম বাড়ায় তা নিয়ন্ত্রণে সরকার কড়া পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে নেওয়া হচ্ছে আইনগত পদক্ষেপ।

বাজার ‘সিন্ডিকেট’ মোকাবিলায় ১৯৫৬ সালে করা আইন আছে দেশে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৫৬ শীর্ষক ওই আইনটিতে বেশকিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য তালিকাভুক্ত ছিল যেগুলোর বাণিজ্য, ব্যবসায়িক লাইসেন্স থেকে শুরু করে মূল্য নির্ধারণ সবকিছুতেই হস্তক্ষেপ করতে পারে সরকার। ৬৮ বছরের পুরনো সেই আইনটিকে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। উদ্দেশ্য একটাই, ‘বাজার সিন্ডিকেট’ নিয়ন্ত্রণে আরও ক্ষমতাশালী হওয়া।

প্রচলিত আইনের তালিকায় যেসব পণ্যের নাম রয়েছে, তার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সরকার। আইনের আওতায় এসব পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তালিকাভুক্ত পণ্যগুলোতে কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার জন্য যদি কারসাজি করে বা মজুত রেখে সংকট তৈরি করে তবে জেল-জরিমানাসহ আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে সরকার।

এদিকে বাজারে স্বস্তির কোনো লক্ষণই নেই। পত্র-পত্রিকার খবরে প্রকাশ, সাধারণের নাগালের বাইরে রয়েছে সবজির দাম। বাড়তির দিকেই রয়েছে মাছ, ডিম, পেয়াজসহ আলু, মসুর ডাল ও অন্যান্য মসলা পণ্যের দাম। শুক্রবার রাজধানীর বাজারে রেকর্ড ৪২০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে সোনালি মুরগির কেজি। এর প্রভাবে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা দরে। এ ছাড়াও ডিমের ডজনে ২০-২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৪৫ টাকা দরে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন চাহিদার তুলনায় সোনালির সরবরাহ অর্ধেকে নামায় হঠাৎ এই মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। তবে ব্রয়লারের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে গত সপ্তাহ থেকেই বাড়তির দিকে ডিমের বাজার। উৎপাদনে কমে যাওয়ার পাশাপাশি গরমে ডিম সংরক্ষণ করতে না পারায় বাজারে অস্থিরতা চলছে বলে দাবি করেন পাইকারি বিক্রেতারা। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে সিন্ডিকেটের কারণেই এই মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে ডজনে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

এ ছাড়া বেড়েছে মাছের দাম। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওড়ের মাছ একেবারেই সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাজারে ক্রেতা চাপ বৃদ্ধিতে সব ধরনের মাছ কেজিতে ৫০ থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিন ৪শ’ থেকে ৫শ’ গ্রামের ইলিশের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২শ’ টাকার উপরে।

৮শ’ গ্রামের উপর ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৮শ এবং ১ কেজির উপর ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৪ থেকে ২৮শ টাকা দরে মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০-৪০০ টাকা, বড় কাতল ৪শ’ টাকা, বড় পাঙ্গাশ ২২০-২৫০ টাকা, চাষের কই (ছোট) ৩শ’ টাকা, তেলাপিয়া ২৩০ টাকা, শিং মাছ ৫শ’ টাকার উপরে শোল মাছ, বড় পাবদা ৫শ’, ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা প্রভৃতি।

বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি সারা বছর বাজার মনিটরিং করতে হবে। খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি বাড়াতে হবে। টিসিবিকে ব্যবহার করে সরকার বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে। পণ্য ভেদে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে একটু সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে নিত্য পণ্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS