ভিডিও

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করুন

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৪, ১০:৫৯ রাত
আপডেট: জুন ১৪, ২০২৪, ১০:৫৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ঈদে ঢাকা ছাড়বে এক কোটির বেশি মানুষ- এ কথা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগেই। ঈদযাত্রার এ মহা আয়োজনের বিষয়টি নতুন নয়। প্রতি বছর ঈদ উদযাপনে ঢাকা মহানগরীতে বসবাসকারী প্রায় দুই কোটি নাগরিকের অর্ধেকই নিজ নিজ গ্রামে চলে যাবে। গত কয়েকদিন ধরেই সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসছে সম্ভাব্য যানজট সংকটের প্রসঙ্গটি।

প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে মানুষ এক সঙ্গে রাজধানী ছাড়ে যখন তখনই সৃষ্টি হয় অন্তহীন বিড়ম্বনার। গ্রামগঞ্জের কোনো কোনো এলাকায় ছোট খাটো একটা উৎসব হলেও প্রস্তুতির অন্ত থাকে না। আর দেশের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানে প্রতিবছর একই ঘটনা ঘটবে এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের ৪০ লাখের বেশি পোশাক শ্রমিকের অধিকাংশের কর্মস্থল ঢাকা এবং এর আশে পাশের গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা। পত্র-পত্রিকার খবরে এবারের উত্তরাঞ্চলের ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শংকা নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু মহাসড়ক ধরে উত্তরের পথে এবারও ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শংকা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু ঢাকা মহাসড়কে এলেঙ্গা থেকে সেতুর টোলপ্লাজা পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটারের মধ্যে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারে দুর্ঘটনা ও বিকল যানবাহনের কারণে যানজটের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই শংকাকে ধরে এরই মধ্যে পরিকল্পনার পরিবর্তন ঘটিয়ে যাত্রীদের ঘরে ফেরা নিশ্চিতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।

আর বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের যানজটমুক্ত ঈদযাত্রায় তারা সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছেন। মহাসড়ক পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ঈদযাত্রায় ৪ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর ৫৩টি গাড়ি বিকল ও কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে ঈদযাত্রার শেষ দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইলের খারিন্দা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

এবারের ঈদুল আজহায়ও দুর্ঘটনা ও বিকল যানবাহনের কারণে যানজটের আশংকা করছেন যাত্রী ও চালকরা। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজা পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি রয়েছে। মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ কাজ শেষ না হওয়ায় ওই সাড়ে ১৩ কিলোমিটার অংশে থ্রি-হুইলার দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে।

যাত্রী সাধারণ ও চালকরা যানজট নিরসনে মহাসড়কেও ওই ১৩ কিলোমিটার অংশে নজরদারি বাড়ানোর দাবি করেছে। মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজে ধীরগতির কারণে দীর্ঘদিনেও সাড়ে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়কে বারবার একমুখী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেতু কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেতু দিয়ে যত ফিটনেসবিহীন যানবাহন কম আসবে- ততই দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল কম হবে। এতে যানজটের আশংকাও কম থাকবে। সেতুর পাশে যত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকবে-ততই যানজটের লক্ষণ থাকে। 
অদক্ষ, অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালকরা যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালান এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করেন, সে জন্য চালককে নির্দেশ দিতে হবে। বাসে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো যাবে না, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের করা যাবে না।

ওভার স্পিডে গাড়ি না চালাতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করতে বাস চালকদের প্রতি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নৌযানের ছাদে যাত্রী হয়ে ভ্রমণ করা উচিত হবে না। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে। সড়ক, রেল এবং নৌ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ভাড়ার বেশি টাকা নিলেও লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে পুলিশের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে এ ধরনের আশার বাণী আমরা আগেও শুনেছি। কাজ কতটা হয়েছে সেটাই দেখার বিষয়।

ঈদ এলে যে পরিমাণ দুর্ভোগের কাহিনী আমরা শুনি সবই অবিকল আগের মতো। এ চিত্রের কি কোনো বদল হবে না। মনে রাখতে হবে, সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিলে ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হতে পারে। সবার ঈদযাত্রা আনন্দময় হোক।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS