ভিডিও

দুর্নীতি রুখতে হবে

ওমর ফারুক

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৪, ০৬:১১ বিকাল
আপডেট: জুলাই ১০, ২০২৪, ০৬:১১ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

জানুয়ারি ২০২৪ অনুযায়ী দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম। সেই তালিকায় দেশের সংখ্যা ছিল ১৮০টি। ২০২২ সালে ছিল ১২তম এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩তম। বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল সংক্ষেপে টিআই দুর্নীতির ধারণাসূচক ২০২৩ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়।

১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৪, যা গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম। গতবার বাংলাদেশের পয়েন্ট ছিল ২৫। আমরা বুঝতে পারছি না দেশের অগ্রগতি হয়েছে নাকি পিছিয়ে পড়ছে! ১৮০ দেশের মধ্যে এতো কাছে থাকার জন্য কী প্রফুল্ল মনে আনন্দ উপভোগ করব নাকি বেদনা নিয়ে চুপচাপ বসে থাকব!

শুনুন একটা উপমা পেশ করি। এবার টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বমোট প্রাইজমানি ছিল ১৩২ কোটি টাকা। কিছুদিন আগের ওডিয়াই ওয়ার্ল্ড কাপের প্রাইজমানি ছিল ৯০ কোটি টাকার কাছাকাছি। ২০২২ সালে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতে পেয়েছে ৪০৪ কোটি টাকার মতো।

রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন লিগ জিতে পেয়েছিল ১০৭০ কোটি টাকার মত। এগুলো বাংলাদেশী টাকা হিসেবে। কেন বললাম এই সমীকরণ? আচ্ছা ভাবুনতো কত খাটনি ও সহস্র ম্যাচ খেলার পরে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও রিয়াল এতো টাকা পেয়েছে। কত টাকা তাদের পিছনে ইনভেস্ট করতে হয়েছে? কত পরিশ্রম করতে হয়েছে? কত বছর ও মাস লেগেছে একটা আয়োজনের ফাইনালে গিয়ে শিরোপা জেতার জন্য?

আমাদের দেশের একটা উদাহরণ দিলাম দেখুন। সোনার দেশের প্রথম শ্রেণীর এনবিআর একজন আমলা সচিবের একার ১০০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। এটা বানোয়াট কথা বা ফালতু জোক্স নয়। দেশের সকল প্রথম সারির পত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও গরম চলমান ইস্যু এখন। এতো টাকা কিভাবে বানালেন বা পাইলেন?

কেমন দুর্নীতি করছে সেটা বলার মতো শব্দ আমাদের মস্তিষ্কে জমা নেই। ওই দিকে সহস্র কষ্টে খেলা খেলে একটা কাপ জিতে একটা দলের অতো টাকার কাছাকাছি নেই। তাহলে এই আমাদের সচিব এমন কী খেলা খেললেন যার এতো সম্পদ! তারও আগের মতিউর রহমানের কর্ম সবার জানা এবং মিডিয়ায় সয়লাব আছেই। মতিউরের সমস্ত সম্পদের হিসাব এখনো পাওয়া যায় নাই।

এগুলো তুলে ধরলেও সমস্যা হচ্ছে। এই যে মনে করেন সাইয়েদ আবদুল্লাহ ভাই ছাগল কান্ড নিয়ে হইচই হওয়া মুশফিকুর রহমান ইফাতের ঘটনাটা তুলে ধরলেন। এমন কী তিনি যথেষ্ট প্রমাণ সহ আলোকপাত করেছিলেন। কিন্তু শেষে কি হইলো তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করেছে মেটা। সাইয়েদ আবদুল্লাহ একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন মতিউর রহমান ও মুশফিকুর রহমান ঘটনা নিয়ে।

শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক এই শিক্ষার্থীর সাইবার অ্যাটাকের শিকার হয়ে আইডি সাসপেন্ডেড হয়ে যায়। তাহলে কিভাবে এই রাঘববোয়ালদের মুখোশ উন্মোচন করবে জাতি। চুপচাপ নিস্তব্ধ হয়ে বসে থাকবে মানুষ?

শুধু আবদুল্লাহ নয়, হবিগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত সংসদ ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন রীতিমত। এই সাংসদ থানায় জিডি করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনিও মূলত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে হত্যার হুমকি পেয়েছেন। আমাদের কথা হলো একজন সাংসদ হয়ে যদি এসব বললে হত্যার হুমকির শিকার হয় তাহলে সাধারণ জনগণের কী হবে?

একজন ব্যারিস্টার, সাংসদ এবং তিনি একজন সুপরিচিত আলোচিত ব্যাক্তিও বটে। তার জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই তাহলে আমাদের কী হবে? দেশের মানুষ কী এসব দেখে দেখে রংতামাশা করবে নাকি দেশকে পঙ্গু থেকে রক্ষা করবে। বিষয়টা চিন্তার কারণ নয় কী!

আমরা পড়ে আছি ট্রল নিয়ে। সবুজ অনলাইন জগতে ডুবে রয়েছি। আমাদের দেশপ্রেম গলাবাজিতে আছে। সত্যিকার অর্থে শূন্য মাইনাস শূন্য! আলুর কেজি আকাশচুম্বী! একজন বেকার চাকরির জন্য হাহাকার করছে। আর যারা উচ্চ পদস্থ আছেন তারা পরদেশে সম্পদের পাহাড় করে ফেলছেন।

কিছু জনের কথা বলছি সবার না। অন্য দেশের মানুষ তাদের নিজের দেশে এনে জমা করে। আর আমাদের দেশ উল্টো বিদেশে নিয়ে যায় ডলার আর ডলার! কলাকে সাদা বানানোর সহস্র পথ খুলে বসে আছে। আর কত! মুক্তি কখন মিলবে এসব দুর্নীতি থেকে। কখন বের হয়ে বিশ্বের সাথে পাল্লা দিব? কখন আমাদের দেশ ভিনদেশের মডেল হবে? প্রশ্নটা থেকে গেল!

লেখক: শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ
সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS