ভিডিও

ডিজিটাল সেবা দ্রুত ফেরান

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৪, ১০:৫৮ রাত
আপডেট: জুলাই ২৫, ২০২৪, ০২:৩১ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

টানা পাঁচদিন ইন্টারনেটবিহীন অবস্থায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ইন্টারনেট না থাকায় বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের প্রিপেইড মিটারের বিল দেওয়া যাচ্ছে না। তোলা যাচ্ছে না এটিএম বুথ থেকে টাকা। বিদেশে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

আইসিটি, আউটসোর্সিং, ই-কমার্সের মতো ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসায় ধস। ডিজিটাল গণমাধ্যম অচলাবস্থা, ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয় এবং সাধারণ মানুষের বিনোদনের অন্যতম বড় খোরাক বন্ধ হওয়ায় সবাই ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে এক প্রকার ক্ষুব্ধ।

দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের প্রিপেইড মিটার গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিকাশ, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইল আর্থিক সেবাগুলোর অ্যাপ, ব্যাংকের শাখা বা পাড়া মহল্লার দোকান থেকে রিচার্জ করতে পারছেন না তারা। এমন অবস্থায় নিকটস্থ বা নির্ধারিত বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে মিটারে ইমার্জেন্সি রিচার্জ করতে গ্রাহকদের অনুরোধ করেছে বিতরণ সংস্থাগুলো।

গ্রাহকরা বলছেন, বিদ্যুৎ অফিসে রিচার্জের বুথ সংখ্যা কম থাকায় ধীরগতিতে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের আগে রিচার্জ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলমান নৈরাজ্য দেশের বিদ্যুৎ খাত বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইন্টারনেট প্রি-পেইড মিটার রিচার্জ করতে পারছেন না। এ জন্য ঢাকাসহ দেশের বিদ্যুৎ অফিসগুলোয় গ্রাহকের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক গ্রাহক।

মোবাইলে ফোরজি এবং ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হচ্ছে দেশীয় ই-কমার্স খাত। সঠিক হিসাব না থাকলেও খাত সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দৈনিক অন্তত ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে এ খাতে। ইন্টারনেট না থাকায় গ্রাহকরা যেমন পণ্য বা সেবা অর্ডার করতে পারছেন না, তেমনি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছে না ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো।

এর সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ওপর। অর্ডার না থাকলেও পরিচালনা ব্যয়, ফিক্সড কষ্ট, অ্যাসেট লায়াবিলিটির মতো খরচের  বোঝা ঠিকই রয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর ঘাড়ে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ই-কমার্স খাতে এমন ঘটনা নজিরবিহীন।

গ্যাস সংকট প্রিপেইড মিটার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকের রান্না ঘরের চুলা জ্বলছে না। বন্ধ হয়ে গেছে আউট সোর্সিং ব্যবসা। ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা ওঠানো সহ বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে অর্থ লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো। প্রিন্টমিডিয়ার নিউজ প্রকাশেও দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা।

ইন্টারনেট না থাকায় লন্ড ভন্ড হয়ে পড়েছে দেশি বিদেশি এয়ার লাইন্সের ফ্লাইট শিডিউল। বস্তুত গত কয়েকদিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবা, লেনদেন, যোগাযোগ বন্ধ। অ্যাপনির্ভর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সব ধরনের লেনদেন বন্ধ রয়েছে।

এতে বিপাকে পড়েছেন কোটি কোটি মানুষ। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় তথ্য আদান প্রদান ব্যাহত হওয়ায় নানা সংকট সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে। বন্দরে পণ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বিভিন্ন ধরনের জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত দেশের বহু মানুষ।

তবে আশার কথা ৫ দিন পর সীমিত আকারে হলেও মঙ্গলবার রাত থেকে চালু হয়েছে ব্রন্ড ব্যান্ডের ইন্টারনেট সেবা। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট অরাজকতার পর গত বুধবার থেকে দেশের মোবাইলে নেট বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে ব্রন্ডব্যান্ড লাইনও বন্ধ হয়ে গেলে পুরোপুরি ব্ল্যাকওয়ার্ডে পড়ে দেশ। ব্রন্ডব্যান্ড সীমিত আকারে চালু হলেও মোবাইলে নেট বন্ধই থাকছে।

সাথে আপাতত সোস্যাল মিডিয়াও খোলা হচ্ছে না। দেশে সব ধরনের ডিজিটাল সেবা খাত স্বাভাবিক রাখা যায়, সে জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আমরা আরও মনে করি ডিজিটাল ব্যবস্থার নিরাপদ ব্যাক আপ থাকা দরকার। যে কোনো পরিস্থিতিতে দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS