ভিডিও

অর্থনীতির চাকা সচল হোক

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৪, ১০:৫৭ রাত
আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২৪, ০১:১১ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

টানা পাঁচদিন ব্যাংক বন্ধ, এটিএম বুথে টাকার স্বল্পতা ও ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নগদ টাকার চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে গত বুধবার ব্যাংক খোলার প্রথম দিনেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলো নিয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা, বাকি টাকা নিয়েছে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে টাকা ধার দেওয়ার এই তথ্য জানিয়েছে। ব্যাংক জানায়, ধার নেওয়া এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতিও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসাবে ব্যবহার করে অনেক ব্যাংক। আবার অনেক ব্যাংক নগদ টাকা নিয়ে গ্রাহকের চাহিদা মেটায়। সাম্প্রতিক সময়ে নগদ টাকার চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে।

ব্যাংক শাখার পাশাপাশি এটিএমগুলোতেও নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবারের ব্যাংকিং কার্যক্রমের পর পাঁচ দিনের ছুটি শেষে বুধবার ব্যাংকগুলো খুলেছে। শুক্র-শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটির পর রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিন দিন সাধারণ ছুটি ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সহিংস হওয়ার পর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান অস্থিরতায় দেশজুড়ে অর্থনীতির চাকা প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনের পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সব কিছু বন্ধ থাকায় দেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি হলে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকসহ দেশের অধিকাংশ শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।

বন্ধ হয় ইন্টারনেট সেবা। এসবের ফলে সংকটে থাকা অর্থনীতিতে বড় ধরনের অভিঘাত এসেছে। ফলে আবারও ধাক্কা পেল দেশের অর্থনীতি। তবে প্রতিটি খাতেই কমবেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকদিনে সৃষ্ট অচলাবস্থায় অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হয়েছে তার সাময়িক হিসাব করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ই্িন্টগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট বা র‌্যাপিড। সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, অচলাবস্থার সময় দেশের অর্থনীতিতে দৈনিক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৬০ কোটি ডলার বা ৭ হাজার ৮০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ছয় দিনে মোট আর্থিক ক্ষতি ৪২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

আন্তর্জাতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি আর ডলারের দরের দাপটে এমনিতেই চাপে ছিল দেশের অর্থনীতি, তার মধ্যে এলো নজির বিহীন সংঘাতের আঘাত। তাতে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, কীভাবে তা সামলে উঠবে দেশ? তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক ও উৎপাদকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, বন্দর কার্যক্রম এবং কারখানা বন্ধ থাকায় এ খাতে প্রতিদিনের সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার মতো। এর চেয়েও বড় ক্ষতি হচ্ছে, আমাদের প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা ও নির্ভরতার ঘাটতির আশংকা তৈরি হয়েছে।

এই পুরো সময়টায় ব্যাংক ও আর্থিক খাত ছিল প্রায় অচল। রেমিট্যান্স আসা বন্ধ থাকায় অর্থনীতির শ্বাসবায়ুর জোগান পড়েছে হুমকিতে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে, আর্থিক খাত, শুল্কায়ন, ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যোগাযোগ থেকে শুরু করে সাধারণের জীবনে বড় প্রভাব পড়েছে।

উদ্যোক্তারা বলছেন, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যেখানে আমাদের স্থিতিশীল পরিবেশ দরকার ছিল সেখানেই বড় ধাক্কাটি লেগেছে। সেজন্য সবাই মিলে দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখাও জরুরি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS