ভিডিও

বাজারে স্বস্তি ফেরানোর আলটিমেটাম

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৪, ০৫:৩৮ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২৪, ০৫:৩৮ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

এক সপ্তাহের মধ্যে দ্রব্যমূল্য জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ১৩ দপ্তর ও সংস্থাকে আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এসব দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের পদত্যাগের আহবান জানিয়েছেন তারা।

ছাত্র আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাজারের আশে পাশে নেই চাঁদাবাজ কিংবা সিন্ডিকেট, কৃষক জমিতে পাচ্ছেন উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য। হাটে ধাপে ধাপে কমিশন খাওয়া দালাল চক্রও নেই। ফলে কেজিতে কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কমে গেছে সব সবজির দাম।

এদিকে ছাত্ররা বিভিন্ন খুচরা বাজারে তদারকি শুরু করায় সেখানেও মিলেছে সুফল। ভোক্তার ঘরে কম দামে ঢুকছে বিভিন্ন পণ্য। গত রোববার দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষক, সবজি হাট ও পাইকারি মোকামে খোঁজ নিয়ে মিলেছে এসব তথ্য।

স্মর্তব্য, হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু হয় অর্থনীতি খাতে বিশৃঙ্খল অবস্থা। দেশের প্রতিটি খাতেই শুরু হয় লুটপাট, দুর্নীতি, টাকা পাচার, সিন্ডিকেট। ফলে সাধারণ মানুষ বলী হয় এই হরিলুটের খপ্পরে পড়ে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সবসময় সুযোগ খোঁজে। যে কোনো অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে থাকে।

ভোক্তার স্বার্থকে সবার আগে প্রাধান্য না দিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সূত্র মতে, নিত্য পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভোক্তা অধিকার কর্তৃক চিহ্নিত অনিয়ম এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আসা দাম নিয়ে কারসাজির তথ্য যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে নিয়ম ভাঙার তথ্য পেয়ে প্রতিযোগিতা কমিশন মামলায় যায়।

২০২২ সালে বেশি মামলা করা হয়েছে চাল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে। নিত্য পণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানও আইন লংঘন করায় প্রতিযোগিতা কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে। মামলাগুলো শুনানি পর্যায়ে রয়েছে বলে বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

কিন্তু সরকারের লোকদেখানো এসব পদক্ষেপ কোনো কাজে আসেনি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে গেছে। ব্যয় বেড়েছে শতগুণ, কিন্তু আয় বাড়েনি। নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষ পণ্যের উচ্চ মূল্যের বাজার করতে পারেনি। যা কেনার তা কিনতে পারেনি। যতটুকু কেনার তার চেয়ে স্বল্প পরিমাণ কিনতো।

আমরা জানি গত দেড় দশক ধরে নিত্য পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছিল। স্বভাবতই বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আম জনতার কাছে বিগত হাসিনা সরকারের কোনো জবাবদিহিতাই ছিল না। ছিল না কোনো ভ্রুক্ষেপ। কারণ গোটা বাজার ব্যবস্থা তাদের দলীয় সিন্ডিকেটের হাতেই বন্দি। তাদের এমপি, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী আমদানিকারকদের হাতেই ছিল গোটা দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।

এ দেশের অতি মুনাফা লোভী অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং বাজার সংস্কৃতির একটি উজ্জল অংশ। নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের অজুহাতের শেষ নেই। তারা একেক সময় একেক অজুহাত দাঁড় করায়। তারা খাদ্যে ভেজালও দেয়। এই চিত্র বিগত দেড় যুগ ধরে দেখে আসছে ভুক্তভোগী জনগণ। সরকারি লোকজন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই সিন্ডিকেটের কাছে জনগণ ছিল জিম্মি। এ চিত্র বদলানোর দরকার এখনই।

গত রোববার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা উপরিল্লিখিত আলটিমেটাম দেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকিসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বাজার তদারকিসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রমে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ের লক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ মত বিনিময় সভার  আয়োজন করা হয়।

সভায় বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, আমরা এতদিন নানা ধরনের অন্যায়, অনিয়মের সঙ্গে ছিলাম। এখন আমাদের শপথ করতে হবে আমরা আর দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অন্যায়, সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি, দখলদারি করবো না। এটা আমাদের মনে ধারণ করতে হবে। এরপর রাষ্ট্র সরকার করতে হবে। আমরা আশাবাদী দেশের আগামীর কর্ণধার এইসব তরুণ শিক্ষার্থী বাংলাদেশকে বদলে দিতে পারবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS