ভিডিও

রাখাইনে আরও দুই ঘাঁটি বিদ্রোহীদের দখলে

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৪, ১২:৩২ দুপুর
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৪, ১২:৩২ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে সেনাবাহিনী। গত দু’দিনে রাখাইন, কাচিন ও কায়াহ প্রদেশে বড় ধরনের পরাজয় হয়েছে তাদের। রাখাইনে সেনাবাহিনীর দুটি ঘাঁটি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। কাচিনে হাতছাড়া হয়েছে দুটি সেনাচৌকি। এ পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী কায়াহ প্রদেশের একটি স্কুলে বিমান হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী। এতে অন্তত ৪ শিশু নিহত হয়েছে।

মিয়ানমারের ইরাবতী অনলাইনের খবরে বলা হয়, রাখাইনের ম্রাউক ইউ এবং কিয়াকতাও শহরতলিতে জান্তা ব্যাটালিয়নের দুই সদরদপ্তর দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি (এএ)। টানা কয়েক দিনের লড়াইয়ের পর ম্রাউক ইউ অঞ্চলে সোমবার সকালে লাইট এনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি)-৩৭৮ এর সদরদপ্তর তারা দখলে নেয়। বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন এ প্রদেশের শহরতলি রেথেদং, পন্যাজিউন, রামড়ি ও অ্যানে ব্যাপক লড়াইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব এলাকায় বিমান হামলা ও সাগর থেকে বোমা নিক্ষেপ করছে সেনাবাহিনী। আরাকান আর্মির দাবি, তারা জান্তার ১৭০টি অবস্থান দখলে নিয়েছে।

তীব্র লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে চীনের সীমান্তসংলগ্ন কাচিন প্রদেশে। সেখানে লড়াইরত বিদ্রোহী সংগঠন কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) মঙ্গলবার দাবি করেছে, তারা প্রদেশটির পাকান্ত ও মানসি শহরের উপকণ্ঠে সেনাবাহিনীর দুটি ফাঁড়ি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা লোন খিন বলেন, কয়েক দিন ধরেই সেনা সদস্যদের এ এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। কাচিনের অন্য এলাকাগুলোতেও লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় বিদ্রোহ দমনের নামে বেপরোয়া হামলা বাড়িয়েছে জান্তা সরকার। এতে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। সোমবার কায়াহ প্রদেশের শহরতলি দেমোসির একটি স্কুলে বিমান হামলা হয়। এতে চার শিশু নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী জানান, দাওসি গ্রামের ওই স্কুলে যুদ্ধবিমান থেকে দুটি বোমা ফেলা হয়। ওই এলাকায় বিদ্রোহীরা সক্রিয় থাকায় হামলা হচ্ছে। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় স্কুল ভবনের ৯০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।

মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি সংঘাতপ্রবণ প্রদেশগুলোর মধ্যে কায়াহ বা কেরেন্নি অন্যতম। মানবাধিকার গ্রুপগুলোর তথ্যমতে, সেখানে গত বছর ৭৬টি বিমান হামলা ও ১৬০টি গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে ১৮০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হন ১৪০ জন। গত বছরের শেষ দিকে জান্তার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে বিদ্রোহীদের হামলা শুরুর পর থেকে সংঘাতের তীব্রতা বেড়েছে। শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি এবার আলোচনায় মনোযোগ দিতে চাচ্ছে মিয়ানমারের সরকার। এরই মধ্যে তারা জাতীয় শান্তি আলোচনা কমিটিতে রদবদল এনেছে। কমিটির নতুন প্রধান হয়েছেন সীমান্ত কার্যক্রমবিষয়ক মন্ত্রী লে. জেনারেল তুন তুন নঙ। মিয়ানমারভিত্তিক এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, জান্তার শান্তি আলোচনা কমিটির দায়িত্বে পরিবর্তন এলেও তাতে ভিন্ন কিছু হবে না। গৃহযুদ্ধ চলছে। যে বিদ্রোহী সংগঠনগুলো লড়াই করছে, তাদের কেউই সমঝোতা আলোচনায় যাবে না।

বিবিসির বার্মিজ সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক আয় থু সান জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবরে তিনটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত তারা দেশটির ৩০টি শহরের দখল নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিস তাদের মূল্যায়নে বলছে, মিয়ানমারে কর্তৃত্ববাদবিরোধী যে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে, তা এখন পর্যন্ত সফল বলেই মনে হচ্ছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS