কলকাতার প্রথম সারির মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আর জি করের নারী চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৭ আগষ্ট) পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় ‘নবান্নে চল’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচির সঙ্গে বাংলাদেশি ছাত্র-জনতার সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের মিল দেখছেন অনেকেই।
কোনো রাজনৈতিক ব্যানার ছাড়াই মঙ্গলবারের (২৭ আগস্ট) ‘নবান্নে চল’ কর্মসূচির সমর্থনে রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ শামিল হতে পারে মনে করছেন স্থানীয় রাজনীতি বিশ্লেষকেরা। ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে সাধারণ নাগরিক, রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ছাড়াও যত অরাজনৈতিক সব সংগঠনকে এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, তিনি এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন। তাছাড়া এই কর্মসূচিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সাবেক সাংসদ সদস্য অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রয়োজন হলে এই মিছিলে পা মেলাবেন তিনিও।
শিক্ষার্থীদের মূল দাবি তিনটি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর পদত্যাগ, আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের চরম শাস্তি ও রাজ্যে নারী সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা।
জানা গেছে, এই আবহে বাংলাদেশের মতো গণঅভ্যুত্থানের আশঙ্কা করছে নবান্নও। এই আন্দোলনকে সামাল দিতে এরই মধ্যে নবান্নকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। কোন পথ দিয়ে আন্দোলনকারীরা নবান্নে আসবেন। কলকাতার রাজপথে কোন জায়গায় আন্দোলনকারীরা জমায়েত হতে পারেন, সেসব জায়গায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তারা।
এই অভিযানকে কীভাবে প্রতিহত করা যায়, তা নিয়ে রাজ্য পুলিশ ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা এরই মধ্যে জরুরি বৈঠক সেরে ফেলেছেন। প্রশাসনিক স্তরে বিভিন্ন কৌশল খতিয়ে দেখছেন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কলকাতা ও হাওড়ায় আসার নির্দেশ পাঠানো হয়েছে
এসপি, ডিএসপিসহ উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের নবান্ন ও এর আশেপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হবে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এরই মধ্যে পুলিশ ফোর্স, পুলিশের কমান্ডো আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের লক্ষ্য একটাই, শিক্ষার্থীদের মিছিল যাতে কোনোভাবেই নবান্ন পর্যন্ত না পৌঁছাতে পারে।
এদিকে, শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ কোনো ধরনের কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে শিক্ষার্থীদের ডাকা আন্দোলনে ব্যাপক চাপের মুখে রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।