অর্থনীতিবিদ ও নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণের ৬৬৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির মামলার প্রথমদিনের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৬ ও ২১ জুলাই নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হাইকোটের বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকার ও বিচারপতি মো. মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি শেষে এ দিন ঠিক করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার তাহমিনা পলী। অন্যদিকে, গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও সরদার জিন্নাত আলী।
গত ১১ মার্চ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণের ৬৬৬ কোটি টাকা কর ফাঁকির মামলা তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আইনজীবীরা জানান, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণের কাছে বিগত সাত কর বর্ষের আয়করের দ্বিতীয় মূল্যায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দাবি করা ৬০০ কোটির বেশি টাকার বিষয়ে করা দুটি রিট নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চকে আগামী তিন মাসের মধ্যে ওই রিট আবেদনের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি করে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন ওইদিন সাংবাদিকদের বলেন, আপিল না করার অঙ্গীকার করে রিভিউ করেন। রিভিউ আবেদনে তারা আপিল আবেদনের অধিকার ত্যাগ করে এসেছেন। এক্ষেত্রে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন তা খারিজ করে আপিল বিভাগ হাইকোর্টকে পুনরায় শুনানি করতে বলেন। হাইকোর্টের যে বেঞ্চ আদেশ দিয়ে ছিলেন সেই বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার তাহমিনা পলী বলেন, ২০১১ থেকে ২০১৬-১৭ সাত করবর্ষে গ্রামীণ কল্যাণের আয়কর দ্বিতীয় মূল্যায়ন করা হয়। নিয়মানুযায়ী দ্বিতীয় মূল্যায়নের বিরুদ্ধে আপিল ও রিভিউ আবেদন করা যায়। তবে রিভিউ করা হলে আপিল করা হবে না মর্মে অঙ্গীকার করতে হয়।
তিনি বলেন, এখানে গ্রামীণ কল্যাণ আপিল না করে রিভিউ করে। ওই রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর রিভিউ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে দুটি রিট করা হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট রিভিউ খারিজের আদেশ বাতিল করে রায় দেন এবং আপিল করতে বলেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদন নিষ্পত্তি করতে বলেন। এছাড়া আপিল বিভাগ রিটের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি করতে বলেছেন।
গত ১ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান শেখ মেরিনা সুলতানা এক মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস এবং পরিচালক আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও এম শাহজাহানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে তাদের চার জনকেই ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ২৫ দিন কারাদণ্ড দেন আদালত। আর রায়ের পরই আলাদা জামিন আবেদন করলে চার জনকেই আপিলের শর্তে জামিন দেন আদালত। বর্তমানে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় জামিনে আছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।