মাত্র কয়েক দশকের ব্যবধানে যেন হারিয়ে গেলো ঈদের সেই আনন্দ। প্রযুক্তি যেন গ্রাস করে নিয়েছে সেই আমেজ। ঈদের চাঁদ আজ যেন বড্ড একা। নেই সেই রং-বেরংয়ের ঈদ কার্ডের চল।
এই তো মাত্র এক দশক আগেই ঈদের সময় পারায় পারায় বসতো ঈদ কার্ডের দোকান। ছোটদের জন্য ছিলো এ এক বাড়তি আনন্দ। এসব কার্ড খুললেই শুভেচ্ছার বাণী ভেসে ওঠতো। বাংলা ও ইংরেজীতে লেখা হাজার ছকের মনের না বলা অনুভূতিই প্রকাশ করা হতো এসব ঈদ কার্ডে। ২ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যেতো এসব ঈদ কার্ড।
তবে কালের বিবর্তনে ভাটা পড়েছে এসব ঈদ কার্ড ব্যবসায়ে। এখন আগের মতো আর কেউ ভীড় জমায় না এসব দোকানে। দোকানিরা জানান, প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই এখন সবাই ঈদের সুভেচ্ছা বার্তা পাঠায়। তাই ক্রেতাদের মাঝে এখন আর আগের মতো ঈদ কার্ডের সেই চাহিদা নেই।
আগে সহপাটিদের মাঝে সকাল-বিকাল হিসেব চলতো এবারের ঈদের জন্য এ পর্যন্ত কে কত টাকা জমা করেছে। নতুন জামা তোলা থাকতো আলমারিতে। যদি জামা দেখলে তা পুরোনো হয়ে যায়।
ঈদের চাঁদ দেখার জন্য গ্রামের ২০-৩০ জন মিলে ছুটে যেতাম ধান ক্ষেতের খোলা আকাশে। পশ্চিম আকাশে তন্ন তন্ন করে খোঁজা হতো চাঁদ। হঠাৎ কারো মুখে চিৎকার ভেসে উঠতো ঐ যে চাঁদ! সেই আনন্দের ভাষা বর্ণনা করা দুষ্কর। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির কল্যাণে সেই আনন্দ এখন আর নেই। এখন ফেসবুকেই সব কিছুর আপডেট পাওয়া যায়।
ঈদের আগের রাতে চলতো মেহেদী দেয়ার উৎসব। আর সারা রাত সেই মেহেদি শুখানোর জন্য অপেক্ষা। তবে এখন ৫ মিনিটে রং হবার মেহেদি বাজারে এসে সেই অপেক্ষার আর দরকার হয় না। পার্লারে হাজার টাকা দিয়ে মেহেদি দিয়ে নিলেও সেই আনন্দ আর পাওয়া যায় না।
আজ আর হাজার হাজার টাকা খরচ করে দামি জামা-জুতো কিনে ঈদের ওই আনন্দ নেই। অত্যাধুনিক যন্ত্রের বদৌলতে আজ আর রেডিওতে শোনা যায় না ‘রেডিও বাংলাদেশ’ ঈদ মোবারক।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।