ভিডিও

জাতীয় পাট দিবস বুধবার

বগুড়ার মুখ্য পাট পরিদর্শকের পদশূন্য নয় মাসেরও বেশি

প্রকাশিত: মার্চ ০৫, ২০২৪, ১০:৩০ রাত
আপডেট: মার্চ ০৫, ২০২৪, ১০:৩০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

শাওন রহমান : পাটের সোনালী ঐতিহ্য ফেরাতে সরকারের নানা উদ্যোগের মধ্যে ব্যতিক্রম পাট অধিদপ্তর বগুড়াসহ এই অঞ্চলের কার্যক্রম। শুরু থেকেই জনবল সংকটে স্থবির এ জেলার পাট শিল্পের সম্ভাবনা। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৪ জুন পাট পরিদপ্তর বগুড়া কার্যালয়ে মূখ্য পাট পরিদর্শক হিসেবে যোগদান করেন মো. সোহেল রানা।

গত বছরের জুনে তিনিও বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। গুরুত্বপূর্ণ পদটি খালি নয় মাস ধরে। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি নতুন নিয়োগ পাওয়া সিরাজগঞ্জ জেলার মূখ্য পাট পরিদর্শক তারানা আফরোজ সজনী অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বগুড়া কার্যালয়ের। তিনি নতুন হওয়ায় না চলার মতই চলছে এই কার্যালয়ের কাজ। অথচ সাংগঠনিক কাঠামো হিসেবে বগুড়া জেলার জন্য একজন মূখ্য পাট পরিদর্শকের অধীনে অন্তত একজন পরিদর্শক ও দু’জন সহকারি পরিদর্শক থাকতে হয়।

সেখানে বর্তমানে বগুড়া কার্যালয়ে কর্মরত আছেন পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হালিম, পাট উন্নয়ন সহকারি মো. রফিকুল ইসলাম ও ‘উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প’র একজন কম্পিউটার অপারেটর। গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বশীল জনবল না থাকায় প্রশ্ন উঠেছে পাট নিয়ে সংশ্লিষ্টদের লোক দেখানো কার্যক্রম নিয়ে।

এরই মাঝে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার দেশ, স্মার্ট পাট শিল্পে বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ দেশে পালিত হচ্ছে জাতীয় পাট দিবস। বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিজড়িত পরিবেশবান্ধব সোনালী আঁশ পাটের খ্যাতি বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিতে বর্তমান সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

পাটের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধি, চাষ সম্প্রসারণ, গুণগতমান উন্নয়ন, পাট শিল্পের বিকাশ ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার পাট আইন ২০১৭ প্রণয়ন করেছে। এছাড়াও পাট অধিদপ্তরের অধীনে ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পও বাস্তবায়ন করছে। তবে এ অঞ্চলে সরকারের পাট সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে শুরু থেকে প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ ও পাট আইন ২০১৭ বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত ও দক্ষ লোকবল প্রয়োজন। বিশেষ করে ১৯টি পণ্য ধান, চাল, গম, ভূট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, পোল্ট্রি ফিড, ফিস ফিড ও তুষ-খুদ, কুড়া’য় পাটজাত মোড়ক ব্যবহার আইন করে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এ আইন অমান্য করলে অনধিক তিন বছরের কারাদন্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দন্ডের বিধান রয়েছে। অথচ আইন থাকলে তা প্রয়োগে বগুড়ায় নেই প্রয়োজনীয় লোকবল। জনবল সংকটের কারণে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ বাস্তবায়ন মুখ থুবড়ে পড়েছে।

নানা সীমাবদ্ধতায় বগুড়াসহ আশপাশের বেশিরভাগ মিলগুলোতে পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়নি। এছাড়াও অন্যান্য পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে লোক দেখানো প্রচার-প্রচারণ ও সভা-সমাবেশ করেও মেলেনি কাঙ্খিত ফল।

মূলতঃ লোকবল না থাকায় কোন কিছুতেই সাফল্য আসছে না। বগুড়ার ১২টি উপজেলার হাট-বাজারসহ অন্যান্য উৎপাদনশীল স্থানে পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা প্রয়োজন। কিন্তু লোকবল সংকটে তাও হচ্ছে হাতেগোনা।

এছাড়াও সংকট দেখা দিয়েছে ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নেও। বগুড়ার ১২টি উপজেলার মধ্যে মাত্র পাঁচটি উপজেলায় কোনমতে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মূখ্য পাট পরিদর্শকের কার্যালয়। এতে পাটখাতের সার্বিক সাফল্য, সুবিধা ও বেশি জমিতে পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহের উদ্যোগ দীর্ঘ দিনেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।

এদিকে কাল দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও পাট পরিদপ্তর বগুড়া সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বটতলা থেকে র‌্যালি ও সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ করতোয়ায় এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS