হাফিজা বিনা : রোদের তীব্র দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমে অস্থির হয়ে উঠছে মানুষ। হাসঁফাস উঠেছে প্রাণি ক’লেরও। বিশেষ করে রমজানে রোজাদার মানুষের অবস্থা আরও বেশি করুণ। চৈত্রের অগ্নি রোদের হলকায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না।
অন্য বছরের তুলনায় এবছর এপ্রিলের শুরু থেকেই আকাশ থেকে আগুন ঝরছে। পুড়ছে শহর, বন্দর, গ্রাম ও ভূক্তভোগি মানুষ। গতকাল পর্যন্ত দেশের চারটি বিভাগ ও দুটি জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু ও মাঝারী মাত্রার তাপপ্রবাহ, যা বিস্তার হতে পারে। ফলে সামনের ৭ দিন গরম আরও বাড়তে যাচ্ছে বলছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সেই হিসেব অনুযায়ী বগুড়াসহ দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু ও মাঝারী মাত্রার তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। গত প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বগুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠানামা করছে ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে। আজ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বগুড়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এতেই অস্থির হয়ে পড়েছে জনজীবন।
বিশিষ করে শহুরে মানুষরা দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। বৃষ্টিহীন আবহাওয়ায় ঘরের চেয়ে বাইরের অবস্থা আরও বেশি ভয়াবহ। প্রতিদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। একটু ঠান্ডার জন্য হাহাকার পড়ে গেছে।
তামাত্রার দাপটে অনেক মানুষকে ক্লান্ত শরীরে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে ও অনেককে আবার চোখেমুখে ঠাণ্ডা পানি দিতে দেখা যায়। তবে তীব্র রোদ উপেক্ষা করেই দিনমজুর, রিকশাটালক ও খেটেখাওয়া মানুষদের কাজ করতে ও পথে বের হতে দেখো গেছে।
এছাড়াও ঈদ উৎসবে রোজা থেকে মার্কেট করতে আসা মানুষ-জন পড়েছেন সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে। অনেকর তীব্র রোদ ও গরমে ঘেমে নেয়ে মার্কেটের মধ্যে মূর্চ্ছা যাওয়ার মতও ঘটনা ঘটছে। আবার অনেককে রুমাল ভিজিয়ে চোখমুখ মুছতে দেখা যায়।
এমন আবহাওয়ায় নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করছেন ডাক্তাররা। বেশি বেশি পানি জাতীয় ফলমূল ও খাবার খেতে বলছেন। যথাসম্ভব ঠান্ডা, শীতল জায়গাতে অবস্থান ও নরম সুতি ঢিলেঢালা পোশাক পড়তে বলছেন। এসময় পানি শূন্যতা হয়ে মানুষ মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলাসহ রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত ও বিস্তার লাভ করতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
বগুড়া আবহাওয়া অফিস সূত্র জানান, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে আগে তাপমাত্রা কমার কোন সম্ভাবনা নেই। তাপমাত্রা আরও বাড়বে। এজন্য সারাদেশেই মাঝারী থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আজ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গতকাল সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ডিগ্রী সেলসিয়াস।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।