ভিডিও

দুর্নীতির আখড়া বগুড়া কারাগার

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৪, ১০:৪৫ রাত
আপডেট: জুন ২৯, ২০২৪, ১১:০৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

মাসুদুর রহমান রানা : দুর্নীতির আখড়া বগুড়া জেলা কারাগার। কারাবন্দিদের পুঁজি করে চলে অর্থ আদায়ের বাণিজ্য। বন্দিদের নামের ভুল, আমদানি, ওয়ার্ড, খাবার, ক্যান্টিন, দেখার ঘর, কারা হাসপাতালসহ কারাগারে সব সেক্টরেই চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়।

এ ছাড়া মাদক কেনা বেচা ও সেবনও চলে। শুধু প্রয়োজন টাকা আর বেনসন সিগারেটের প্যাকেট। টাকার বিকল্প হিসাবে বেনসন সিগারেট ভর্তি প্যাকেট নেয়া হয়। পরে সেই সিগারেট ক্যান্টিনে বিক্রি করে টাকা নেয়া হয়। এক শ্রেণির সুবেদার, জামাদার, কারারক্ষী, রাইটার, ইনচার্জ, সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি, মেট এর সমন্বয়ে রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডকেট থাকা ও খাওয়াসহ একটু ভালো সুযোগ দিয়ে বন্দিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় টাকা ও বেনসন সিগারেট।

দেখা করতে আসা বন্দিদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভালো খাবারের জন্য কারাগারের পিসির মাধ্যমে নিয়মিত টাকা পাঠান কারাগারে। আর ওই টাকা থেকে পিসি কার্ডের মাধ্যমে বন্দিদের কাছ থেকে এ সব টাকা তুলে নেয় তারা।

তবে, বগুড়া কারাগার কর্তৃপক্ষ বলেন, কারাগারে কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়না। কারাগারের প্রতিটি বন্দিকে রাখা হয় নিবির পর্যবেক্ষণে। কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে দেখানো হয় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার পথ।
কিন্তু অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এর পুরো উল্টো চিত্র। পুরো কারাগার জুড়েই চলছে টাকার খেলা। যার যত বেশি টাকা, সে তত বেশি প্রভাবশালী আসামি।

টাকাওয়ালারা বাড়ির মত জেলখানাতেও বসবাস করেন আরাম আয়েশে। আর যাদের টাকা নেই তাদের হতে হয় কারা কর্তৃপক্ষের নির্যাতনের শিকার। তবে কারাগারের বাইরে এসব ঘটনা সহসা প্রকাশ করেন না কেউ। কারণ বেশির ভাগ হাজতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বা অপরাধী হওয়ায় তাদের বারবার যেতে হয় কারাগারে।

অনুসন্ধানে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, কারা কর্তৃপক্ষ সব সময়ই সংবাদকর্মীদের এড়িয়ে চলেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করেন। একজন হাজতি কারা গেট থেকে প্রবেশের পর থেকেই শুরু হয় কারা কর্তৃপক্ষের অর্থ আদায়ের সূচনা। এরপর জামিনে বের হওয়া পর্যন্ত হাজতিদের নিয়ে চলে তাদের অর্থ বাণিজ্য।

নামের ভুল : হাজতিদের কারাগারে প্রবেশের আগে তাদের নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা একটি খাতায় লিপিবদ্ধ করেন কারা কর্তৃপক্ষ। ওই খাতার নাম হলো পিসি বই। হাজতি মুখে তার পরিচয় সঠিক বললেও লেখার সময় ইচ্ছে করেই পিসি বইতে ভুল লেখা হয়।

যেমন, একজন হাজতির নাম যদি হয় ‘আজিজ’ কারাকর্তৃপক্ষ তার নাম লিখবে ‘আকিজ’। আদালত থেকে তার জামিন মঞ্জুর হলেও ভুল নাম আকিজ হওয়ায় আটকে দেওয়া হয় ওই হাজতিকে। কিন্তু গেটের দায়িত্বে থাকা কারারক্ষিকে ৫শ’ টাকা দিলে ‘আকিজ’ আবার ‘আজিজ’ হয়ে যায়। কিন্তু কেউ টাকা দিতে না পারলে জামিন আদেশের পরেও তাকে এক দিন অতিরিক্ত জেল হাজতে থাকতে হয়।

টাকা দেওয়ার ব্যাপারেও রয়েছে কঠিন শর্ত। কেউ বাইরে থেকে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিতে পারবেন না। তাকে কারাগারের ভিতর থেকেই টাকা সংগ্রহ করে দিতে হবে। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এসব কথা জানিয়েছেন হয়রানির শিকার একাধিক হাজতি।

দ্বিতীয় ধাপ আমদানি : একজন হাজতি কারাগারে প্রবেশের পর তাকে প্রথম এক দিন আমদানিতে রাখা হয়। পরে তাদের অপরাধ অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। কিন্তু এখানেও রয়েছে টাকার খেলা। যে কেউ চাইলেই আমদানিতে বেড পাবে না।

বেড পেতে হলে তাকে গুনতে হবে ৫শ’ টাকা। না হয় মেঝেতে থাকতে হবে। আর কেউ যদি হাজার টাকা দেয় তবে সে যত দিন ইচ্ছে আমদানিতে থাকতে পারবে। জামিনে বেরিয়ে আসা একাধিক হাজতি বলেন, কারাগারে প্রবেশের সময় সবার সামনে এক রকম উলঙ্গ করে তল্লাশি করা হয়, যা খুব লজ্জাজনক। কারাগারে প্রবেশ করতেই এমন অপমান অপদস্ত করা হয়।

ওয়ার্ড : আমদানিতে এক দিন রাখার পরে হাজতিদের অপরাধ অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানেও টাকার খেলা। অনেক অপরাধী এক জায়গায় বসবাস করায় প্রায়ই হাজতিতের মধ্যে মারামারি হয়। মারামারি করার অপরাধে তাদেরকে কেস টেবিলে (কারাগারের বিশেষ বিচার ব্যবস্থা) হাজির করা হয়।

তবে কারাগারের সুবেদার, জমাদার ও সিআইডিদের টাকা দিলে পার পেয়ে যায় প্রকৃত অপরাধী। এর প্রেক্ষিতে উল্টো শাস্তি পেতে হয় নিরাপরাধীকে। যার ফলে কারাগারে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে অপরাধ।

খাবার : কারাগারে খাবারের মান খুবই নিম্নমানের বলে জানিয়েছেন একাধিক হাজতি। তবে কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, বন্দিদের উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বগুড়া কারাগারের জেলার মো: ফরিদুর রহমান রুবেল জানান, বন্দিদের সকালে রুটি ও ডাল, দুপুরে সবজি-ডাল-ভাত এবং রাতে সবজি-ডাল-ভাত-মাছ বা মাংস খেতে দেওয়া হয়।

তবে বন্দিরা জেলারের এ দাবি সঠিক নয় বলে উল্লেখ করে বলেন খাবার খুব নিম্নমানের। সকালে রুটির সাথে লাউয়ের পাতলা ঝোল দেয়া হয়। রুটিও খুব পাতলা। দুপুরে লাউয়ের পাতলা ঝোল, সবজি ও ভাত আর রাতে ছোট আকৃতির এক পিস সিলভার কার্প বা তেলাপিয়া মাছ ভাত ও মিস্টি লাউয়ের ঝোল দেয়।

একাধিক বন্দি জানান, খাবারের তালিকায় মাছের যে সাইজ উল্লেখ থাকে তা দেওয়া হয় না। তালিকায় রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন মাছ খাওয়ানোর কথা থাকলেও প্রায় প্রতিদিনই দেওয়া হয় পুকুরে চাষ করা পাঙ্গাস মাছ ও তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ। আর মাঝে মাঝে যে মাংস খাওয়ানো হয় তাও পরিমাণে খুব কম।

তবে টাকার বিনিময়ে ক্যান্টিন থেকে চড়া মূল্যে মাছ ও মাংস কিনে খেতে পারেন বন্দিরা। তাই যাদের সামর্থ আছে তারাই কারাগারে বসে ভালমন্দ কিনে খেতে পারেন। সদ্য জেল থেকে বের হওয়া সেলিম নামে এক হাজতি জানান, খাবারের মান খুবই নিম্নমানের। বন্দিদের সংখ্যা বেশি দেখিয়ে অতিরিক্ত খাবার বরাদ্ধ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। পরে তা বাইরে বিক্রি করে দেয়।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, কারাগারের প্রধান গেট থেকেই ভিতরে প্রবেশ করে এই সব নিম্নমানের খাবার। খাবার ভিতরে প্রবেশ করানোর সময় নিম্নমানের অভিযোগ তুলে তা গেটে আটকে দেয় গেট ইনচার্জ।

এ নিয়ে চলে খাবার সরবরাহকারী ও গেট ইনচার্জের দেনদরবার। ঘণ্টাখানেক পর ওই খাবারই ভালোমানের হিসেবে কারাগারের ভিতরে প্রবেশ করে। এই নিম্নমানের খাবার খেয়ে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয় প্রতি মাসে অনেক বন্দি।

ক্যান্টিন : একাধিক বন্দি জানিয়েছেন, কারাগারের ক্যান্টিনেও দুর্নীতি হয়। এখানে রান্নার তেল খুবই খারাপ। একই পোড়া তেল দিয়ে তৈরি করা হয় নানা খাবার। এ ব্যাপারে কয়েক জন হাজতির সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ‘কেনই বা পোড়া তেল দিয়ে রান্না হবে না। ক্যান্টিন বরাদ্দ নিতে এককালীন কয়েক লাখ টাকা দিতে হয় কারাকর্তৃপক্ষকে।

হাজতিদের টাকা : কারাগারের অভ্যন্তরে নগদ টাকা বহন করা বড় ধরণের অপরাধ। তাই বাইরে থেকে কেউ টাকা দিতে চাইলে ব্যাংক হিসেবের ন্যায় পিসি বইতে টাকা জমা হয়। কারো টাকার প্রয়োজন হলে পিসি বইয়ের মাধ্যমে ক্যান্টিন থেকে লেনদেন করা হয়। আর এখানেই হলো আসল দুর্নীতি। কেউ একশ’ টাকা চাইলে তাকে দেওয়া হয় ৯০ টাকা। বাকি ১০টা কমিশন বাবদ কেটে রাখা হয়।

দেখার ঘর : বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসা স্বজনরা সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হন দেখার ঘরে। তবে টাকা থাকলে সেখানেও রয়েছে স্বস্তি। হাজতি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে আসা আক্তরুজ্জামান জানান, একটি মারপিট মামলায় হাজত খাটছে তার ছেলে। তিনি প্রায়ই আসেন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে দেখার ঘরে এক সঙ্গে অনেক লোক থাকায় তিনি ঠিকভাবে ছেলের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি।

কারাগারে একদিনে একবারের বেশি দেখা করার নিয়ম নেই। তবুও তিনি এক কারারক্ষীকে অনুরোধ জানান দ্বিতীয়বার দেখা করিয়ে দেওয়ার জন্য। প্রথমে ওই কারারক্ষী আইনের বিভিন্ন অজুহাত তুলে ধরেন। কিন্তু তার পকেটে ৫শ’ টাকার দুটি নোট ঢুকিয়ে দিতেই তিনি সব আইনের কথা ভুলে যান। পরে ছেলের সঙ্গে দ্বিতীয়বার দেখা করার ব্যবস্থা করে দেন ওই কারারক্ষী। তিনি বলেন, টাকা হলে প্রতিদিনই হাজতিদের দেখা যায়।

কারা হাসপাতাল : কারাগারের সবচেয়ে বেশি হৃদয়বিধারক ঘটনা ঘটে মেডিকেলে। হাজত খেটে বের হওয়া অনেকেই অভিযোগ করেছেন, পুরো কারা হাসপাতাল রয়েছে চিফ রাইটারের নিয়ন্ত্রণে। তিনি যেভাবে চালান সেভাবেই চলে মেডিকেল। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালের চিফ রাইটারের দায়িত্বে আছেন এক কয়েদি। অথচ কারাবিধান অনুযায়ী এক মাসের বেশি কোনো কয়েদি বা কারারক্ষী একস্থানে থাকতে পারবে না।

জানা গেছে, কারাবিধি অনুযায়ী যে রোগী আগে যাবে সে হাসপাতালে সিট পাবে। কিন্তু সেখানে চলে এর উল্টো। টাকার বিনিময়ে সুস্থদের সিট পাাইয়ে দেয় চিফ রাইটার। আর প্রকৃত অসুস্থরা থাকেন মেঝেতে। তবে কারা পরিদর্শক দল পরিদর্শনে গেলে অসুস্থদের বেডে রাখা হয়। কিন্তু তারা চলে গেলে পূর্বের নিয়ম চালু হয়।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, মেডিকেলে ১৫ দিন থাকার জন্য ১ হাজার টাকা এবং এক মাস থাকার জন্য ২ হাজার টাকা দিতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক হাজতি জানিয়েছেন, যে কেউ দিব্যি সুস্থ হয়েও অসুস্থতার সার্টিফিকেট নিয়ে বগুড়া কারা হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়। সেখানে বসে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা এবং মোবাইল ফোনেও কথা বলতে পারেন। কারা চিকিৎসকের সঙ্গে আঁতাত করে সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে দেয় চিফ রাইটার। এই সার্টিফিটের জন্য প্রতিজন বন্দিকে রাইটারকে দিতে হয় এক হাজার টাকা পর্যন্ত।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতিমাসে শুধুমাত্র মেডিকেল থেকে আয় হয় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। চিকিৎসক নিজেও এর একটি অংশ পান বলে একাধিক বন্দির অভিযোগ।

মাদক সরবরাহ : বগুড়া কারাগারের অভ্যন্তরে গাঁজা ও ইয়াবা ট্যাবলেটসহ অন্যান্য সরবরাহ করা হয়। অনুসন্ধানে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। কারাগারের পশ্চিমপাশে বগুড়া পৌরসভার সামনে রাস্তা থেকে কাগজ বা পলিথিনের মধ্যে গাঁজা, ইয়াবার সাথে ঢিল তুলে হাজতির নাম লেখা চিরকুটসহ তা ছুঁড়ে মারা হয় কারাগারের মধ্যে।

কারাগারের অভ্যন্তরে দায়িত্ব পালনকারী জেলবাবু নামে পরিচিত কারারক্ষীরা তা পেয়ে হাজতি আসামিদের কাছে টাকার বিনিময়ে পাঠিয়ে দেয়। এক শ্রেণির জেল বাবু সরাসরি মাদক সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত। কারাগারে মাদক যায় দুভাবে। একটি হচ্ছে কারাগারে কর্মরতদের মাধ্যমে। অন্যটি কারাগারের পশ্চিম পাশের দেয়ালের ওপারে পৌরসভার সামনে থেকে মাদক ছুড়ে ভেতরে পাঠানো হয়।

সিআইডি : দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে যেমন সিআইডি টিম রয়েছে। কারাগারেও সিআইডি রয়েছে। কয়েদি ও কারারক্ষীদের মধ্যে থেকে বিশ্বস্ত লোক বাছাই করে সিআইডি হিসেবে নিয়োগ দেন জেলার নিজেই।

তবে যে কাজের জন্য তাদের নিয়োজিত করা হয় তারা তা বাদ দিয়ে সব সময় অর্থ আয়ে নিজেদের ব্যস্ত রাখেন। বিশেষ করে সিআইডি জমাদার ও মেডিকেল চিফ রাইটার এই মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। কারণ সিআইডি সদস্যদের গেটে তল্লাশি করা হয়না। তাই কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই কারা অভ্যন্তরে মাদক প্রবেশ করায় তারা।

কয়েদিদের দুর্ভোগ : যে সব কয়েদি কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে থাকেন তারাই রাজত্ব করেন পুরো কারাগার জুড়ে। আর যারা কারাকর্তৃপক্ষের মন মতো চলতে পারেন না, তাদের সইতে হয় নির্যাতন। মন মতো বলতে টাকা উপার্জন করিয়ে দেওয়াকে বোঝানো হয়েছে। আর তাদের কাজ করতে হয় ফুলের বাগান, সুইপারের, তাঁত বা রান্না ঘরে।

বিভিন্ন দিবসে বন্দিদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন : বিভিন্ন জাতীয় দিবস বা ঈদ-কোরবানীতে বন্দিদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়ে থাকে। কারা অভ্যন্তরে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও। এজন্য সরকার থেকে আলাদা বরাদ্ধ থাকলেও বন্দিদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে কর্তৃপক্ষ।

টাকার ভাগবাটোয়ারা : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নামের ভুল সংশোধনী, আমদানি, ওয়ার্ড, খাবার, ক্যান্টিন, হাজতিদের টাকার কমিশন, দেখার ঘর, মেডিকেল অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রতিমাসে অন্তত ১৫ লাখ টাকা উপার্জন হয় অবৈধভাবে। জেল সুপার, জেলার, ডেপুটি জেলার থেকে শুরু করে হাসপাতালের চিকিৎসক, সুবেদার, কারারক্ষীরা পর্যন্ত এই টাকার ভাগ পায়।

বগুড়া কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বগুড়া কারাগারে কোন অনিয়ম নেই। কোন দুর্নীতি প্রশ্রয় দেয়া হয়না। টাকা ভাগবাটোয়ারা করার তত প্রশ্নই উঠেনা। তিনি বলেন, ৭২০ জন বন্দির ধারণ ক্ষমতার বগুড়া কারাগারে বন্দি থাকছে গড়ে ২ হাজার ২০০ জন।

বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থল জলেশ্বরীতলা এবং মালতীনগর এলাকার করতোয়া নদীর পাড়ে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে বগুড়া জেলা কারাগার নির্মিত হয়। তখন হতেই বগুড়া জেলা কারাগারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু হয়। আধুনিক বিচার ব্যবস্থা ও আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কারা ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হয়ে আসছে। বগুড়া জেলা কারাগারের জমির মোট জমির পরিমাণ ১৪ দশমিক ৬৬২৫ একর।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS