ভিডিও

নাশকতা মামলায় বন্দি আছে ২৭১ জন 

বগুড়া কারাগারে তিনগুণ বন্দি, দুর্বিষহ অবস্থা

প্রকাশিত: আগস্ট ০১, ২০২৪, ০৮:২০ রাত
আপডেট: আগস্ট ০২, ২০২৪, ০৮:২০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

মাসুদুর রহমান রানা : বগুড়া কারাগারে ধারণ ক্ষমতা প্রায় তিনগুণ বন্দি রয়েছে। ৭৭০ জনের ধারণ ক্ষমতার এই কারাগারে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্দি ছিলেন ২ হাজার একশ’জন। সে হিসাবে বর্তমানে প্রায় তিনগুণ বন্দি রয়েছে এই কারাগারে। তীব্র গরমের মধ্যে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে বন্দিদের। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন পরবর্তী পেক্ষাপটকে কেন্দ্র গোটা দেশের ন্যায় বগুড়াতেও প্রতিদিনই রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তাদের পাঠানো হচ্ছে বগুড়া কারাগারে। যে কারনে দিন দিন বগুড়া কারাগারে বন্দির সংখ্যা বাড়ছে। এতে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে বন্দিদের।

পুলিশ সূত্র জানায়, বগুড়ায় এ পর্যন্ত দায়ের করা ১৫টি নাশকতা মামলায় ২৭১ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ১৬ জুলাই থেকে গতকাল ১ আগষ্ট পর্যন্ত ১৭ দিনে এসব আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী।

বগুড়া কারাগারের সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিদিন গ্রেপ্তারও যেমন হচ্ছে তেমনি আদালত থেকে জামিনে ছাড়াও পাচ্ছে বন্দিরা। তাই কারাগারের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামীতে যদি আরও বেশি পরিমাণ বন্দি আসে তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। জেল সুপার বলেন, রুটিন  মাফিক আসামি অন্য কারাগারে অদল-বদল করা যায়। এভাবেই আসামি অন্য কারাগারে পাঠিয়ে চাপ কমানো যাবে।

কারাগার সূত্র জানায়, গতকাল পর্যন্ত ২১০০ বন্দির মধ্যে নারী বন্দি রয়েছে ৯৬ জন। এছাড়া কয়েদি রয়েছে ৩৬৫ জন এবং হাজতি রয়েছে ১৭৩৫ জন। কারা হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৪০টি। সেল ২০টি। পুরুষ ওয়ার্ড ১৯টি। ১৩২০ বর্গফুটের প্রতিটি ওয়ার্ডে রাখা যায় ১০০ জন বন্দিকে। 

এদিকে, বগুড়া কারাগারে নেয়া হয়েছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো কারাগার এলাকা ‘সিল’ করা হয়েছে। সেইসাথে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কারাবন্দিদের সাথে আত্মীয়-স্বজনের দেখা-সাক্ষাত। দেশে সহিংস পরিস্থিতি এবং নরসিংদী কারাগার থেকে ৯ জন জঙ্গিসহ ৮২৬ জন কয়েদি-হাজতির পলায়ন এবং বিপুল পরিমাণ গুলিসহ ৮৫টি অস্ত্র লুটের পর সারাদেশে কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। সেই ধারাবাহিকতায় বগুড়া কারাগারেরও নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। 

যদিও এর আগে থেকেই বগুড়া কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। গত ২৬ জুন রাতে বগুড়া কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ কেটে পালিয়ে যায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত চার আসামি। পরে অবশ্য জনতার সহযোগিতায় পুলিশ এই চার আসামিকেই গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকেই কারাগারের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। সিল করা হয় বগুড়া কারাগার এলাকা। বাড়ানো হয়েছে সেন্ট্রি পোস্ট।

বগুড়া কারাগারের সুপার আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, বগুড়া কারাগারের ভিতরে ও বাইরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাড়নো হয়েছে জনবল। সেইসাথে কারাগারের দেয়ালের বাইরে ও ভিতরে ২৪ ঘন্টাই কারারক্ষি দায়িত্ব পালন করছেন। সিল করা হয়েছে কারাগার এলাকা। সেইসাথে সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বন্দিদের সাথে আত্মীয়-স্বজনের দেখা-সাক্ষাত। তিনি বলেন, ১৫ দিন পর পর বন্দিদের সাথে আত্মীয়-স্বজনের দেখা সাক্ষাতের নিয়ম থাকলেও তা আপাতত; বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি উন্নতি হলেই আবার ১৫ দিন পর পর বন্দিরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করার সুযোগ পাবে।

উল্লেখ্য, বগুড়া শহরের জলেশ্ব¦রীতলা এবং মালতীনগর এলাকার করতোয়া নদীর পাড়ে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে বগুড়া জেলা কারাগার নির্মিত হয়। তখন হতেই বগুড়া জেলা কারাগারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু হয়। আধুনিক বিচার ব্যবস্থা ও আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কারা ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হয়ে আসছে। বগুড়া জেলা কারাগারের জমির পরিমাণ  ১৪.৬৬২৫ একর ।

                                                                                                                                                                         



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS