ভিডিও

টাইব্রেকারে ইকুয়েডরকে হারিয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা

প্রকাশিত: জুলাই ০৫, ২০২৪, ০৮:৩৭ সকাল
আপডেট: জুলাই ০৫, ২০২৪, ০৮:২৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে কখনো হারাতে পারেনি ইকুয়েডর। সে ধারায় অব্যাহত থাকল। সুযোগে পেয়েও তা তারা কাজে লাগাতে পারেনি। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে তাদের হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে মেসির দল আর্জেন্টিনা। অবশ্য আর্জেন্টিনাকে এবার নির্ধারিত সময়ে জিততে দিল না ইকুয়েডর। শেষ মুহূর্তের গোলে আর্জেন্টিনাকে ১-১ সমতায় রেখে টাইব্রেকারে নিয়ে যায় ম্যাচ। ম্যাচের ৯২ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। 
ইকুয়েডরের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হলো আর্জেন্টিনাকে। কোপা আমেরিকার চলতি আসরে প্রথম গোল হজম করে বিপদে পড়তে যাচ্ছিল তারা।  লিওনেল মেসি শট মিস করলে আর্জেন্টাইন ভক্তদের বুক কেঁপে উঠে। শেষ পর্যন্ত এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দারুণ দুটি সেভে ৪-২ গোলে জিতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা টানা পঞ্চমবার সেমিফাইনালে উঠে গেলো। টাইব্রেকারে প্রথম শট নিয়ে ব্যর্থ হন মেসি। কিন্তু গোলকিপার মার্টিনেজের দৃঢ়তায় বাজিমাত করে আর্জেন্টিনা। 


গ্রুপের শেষ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে ইনজুরির কারণে ছিলেন না লিওনেল মেসি। শঙ্কা উড়িয়ে ইকুয়েডরের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম একাদশে জায়গা পেলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। প্রথমার্ধে গোলমুখের সামনে তাকে ও লাউতারো মার্তিনেজকে  খুব একটা চোখে পড়েনি। ৪-৪-২ ফরমেশনে রণকৌশল সাজান লিওনেল স্কালোনি। গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি ৬৬ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল আর্জেন্টিনা। ইকুয়েডরের বিপক্ষে প্রথম কয়েক মিনিট বল নিয়ে আধিপত্য দেখায় তারা।
তবে ম্যাচের প্রথম সেরা সুযোগ পায় ইকুয়েডর। অষ্টম মিনিটে মোয়াসেস কাইসেডো বল নিয়ে আর্জেন্টাইন বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। তার শট সোজাসুজি মার্টিনেজের হাতে ধরা পড়ে।
১৫তম মিনিটে আরেকবার আক্রমণে যায় ইকুয়েডর। সারমিয়েন্তোর শট মার্টিনেজ ফিরিয়ে দিলেও বল পড়ে পায়েজের সামনে। তার শট লক্ষ্যে থাকেনি।
ইকুয়েডরের গোল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কিপার। অন্যদিকে আর্জেন্টাইন আক্রমণ গোলকিপারের কাছে পৌঁছানোর আগেই প্রতিহত করতে থাকে ইকুয়েডরিয়ান রক্ষণভাগ। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি।
৩৫ মিনিটে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা গোল পায়। মেসির কর্নার থেকে ম্যাক অ্যালিস্টার বল ফ্লিক করে দূরের পোস্টে পাঠান। লিসান্দ্রো মার্টিনেজ হেড করে জাল কাঁপান। ইকুয়েডর কিপার ডোমিঙ্গেজ বল পাঞ্চ করলেও ততক্ষণে গোললাইন পেরিয়ে যায়। আর্জেন্টিনার জার্সিতে লিসান্দ্রোর এটি ছিল প্রথম গোল।


৪১ মিনিটে এঞ্জো ফের্নান্দেজ আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। দূরের পোস্টে নেওয়া তার কোনাকুনি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
বিরতি থেকে ফিরে ৫৬ মিনিটে ইকুয়েডরের বক্সের মধ্যে লাউতারো বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শট নেন। কিন্তু তার দুর্বল শট লক্ষ্যে ছিল না।
পরের মিনিটে ইকুয়েডর পরপর দুটি কর্নার পেরেও কাজে লাগাতে পারেনি। ৫৯ মিনিটে কাইসেডো বক্সের মধ্যে সারমিয়েন্তোকে খুঁজে পেয়ে বল তুলে দেন তার কাছে। কিন্তু লিসান্দ্রো সময়মতো হেড করে বল বিপদমুক্ত করেন।
পরের মিনিটে রদ্রিগো ডি পলের ভুলে পেনাল্টি পায় ইকুয়েডর। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বক্সের মধ্যে তার হাতে লাগে। ভিএআর চেক করেও একই সিদ্ধান্ত জানান রেফারি।
সহজ সুযোগ পেয়েও ইকুয়েডর সমতা ফেরাতে পারেনি। ৬২ মিনিটে এনার ভ্যালেন্সিয়ার পেনাল্টি শট মার্টিনেজকে ভুল দিকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু বল বাঁ পাশের পোস্টে আঘাত করে তাকে হতাশায় ভাসায়। যদিও কিছুক্ষণের জন্য ইকুয়েডর আশার আলো দেখে, রেফারি ভিএআর চেক করে দেখতে চেয়েছিলেন ভ্যালেন্সিয়া শট নেওয়ার সময় মার্টিনেজের দুটো পা লাইনে ছিল কি না। 
বড় বাঁচা বেঁচে গেলেও আর্জেন্টিনা মাত্র এক গোলের লিড নিয়ে বাকি সময় অস্বস্তিতে ছিল। শেষ দিকে ইকুয়েডর চাপ দিয়ে খেলতে থাকে। তাতে ছন্দ হারিয়ে এই টুর্নামেন্টে প্রথম গোল হজম করে আর্জেন্টিনা। ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে ইয়েবোয়াহর চমৎকার ক্রসে রদ্রিগেজের হেডে জালে জড়ায় বল। গোল নিয়ে সংশয় থাকায় রেফারি বেশ সময় নিয়ে ভিএআর চেক করেন। তবে গোল বহাল থাকে।
একেবারে শেষ মুহূর্তে ইকুয়েডরের আরেকটি প্রচেষ্টা ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। বাঁ দিক থেকে রদ্রিগেজের ক্রসে কাইসেডো হেড করলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
নির্ধারিত সময়ে স্কোর ১-১ এ থাকায় ম্যাচ সরাসরি টাইব্রেকারে গড়ায়। প্রথম শটেই মেসি ক্রসবারে আঘাত করেন। অ্যাঞ্জেল মিনার শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে মার্টিনেজ দারুণ সেভ করে আর্জেন্টিনার আশা জাগান। জুলিয়ান আলভারেজের শক্তিশালী শট থামানোর কোনও সুযোগ পাননি ইকুয়েডর কিপার ডোমিঙ্গেজ। আর্জেন্টিনা কিপার ইকুয়েডরের অ্যালেন মিন্দার দ্বিতীয় শটও রুখে দেন ডানদিকে ডাইভ দিয়ে। ম্যাক অ্যালিস্টার ডানপোস্টের ভেতর দিয়ে জাল কাঁপান। তৃতীয় শটে ইয়েবোহার কিকে ইকুয়েডর প্রথমবার লক্ষ্যভেদ করে। গঞ্জালো মন্তিয়েল জাল কাঁপিয়ে আর্জেন্টিনাকে স্বস্তিতে রাখেন। কাইসেডো গোল করে ইকুয়েডরের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। তবে পঞ্চম শটে নিকোলাস ওতামেন্দি গোলকিপারের ডানদিক দিয়ে জালে বল জড়িয়ে আর্জেন্টিনাকে জয়ের আনন্দে ভাসান।  



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS