ভিডিও

সবজি চাষে সফলতা পেয়েছেন ধামইরহাটের সালেমা খাতুন

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৪, ০৪:৪৭ দুপুর
আপডেট: জুন ২৯, ২০২৪, ০১:১৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: ধামইরহাটের গৃহবধূ সালেমা খাতুন নিজ প্রচেষ্টায় সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। অভাব-অনটনের পরিবার নিয়ে যখন মহাসংকটে পড়েন তখনি কিছু একটা করার সংকল্প করেন সালেমা। অবশেষে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে বনে যান পুরোপুরি সবজি চাষী। সবজি চাষ করে প্রথম বছরে সফলতা আসে। এখন আর তার সংসারে  কোন অভাব-অনটন নেই। তার সফলতা দেখে অনেক নারীই সবজি চাষে এগিয়ে আসছেন।

উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের চকসুবইল গ্রামের গৃহবধূ সালেমা খাতুন। মাত্র ১০ বছর বয়সে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। ওই গ্রামের রেজুয়ান হোসেনের স্ত্রী সালেমার বর্তমান বয়স ৩৯ বছর। সালেমার বাবার বাড়ী পাশের উমার ইউনিয়নের ধানতাড়া গ্রামে। স্বামী ১ছেলে ১মেয়ে নিয়ে সালেমার ছোট পরিবার। পরিবারে স্বামী একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সম্পত্তি বলে বসতবাড়ীর একটি ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। স্বামী অন্যের জমি বর্গা চাষ করে।

তার সামান্য আয় দিয়ে সংসার চলে না। অভাব-অনটন যেন তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। অভাবী সংসারে আর্থিক সহায়তা করার ই”্ছা থাকলেও সঠিক সহযোগিতার অভাবে তা কখনও হয়ে উঠতে পারেনি। সংসারের অভাব দূর করা এবং ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে সালেমা এবার নিজে কিছু একটা করার সংকল্প করে। এই সময় পরিচয় হয় সিডব্লিউএফডির মঙ্গলবাড়ী ধামইরহাট শাখার আগামীর পথে কর্মসূচির সমন্বয়কারী রেহেনা পারভীনের সাথে। তাকে আগামীর পথে কর্মসূচির চন্দ্র মল্লিকা দলে অর্ন্তভূক্ত করা হয়। এ দলে ২০ জন নারী সদস্য রয়েছে। এ কর্মসূচির আলোকে নারী ও কিশোরীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষে আয়মূলক কাজের জন্য তাদেরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হয়। সালেমাকে আর্থিক সহায়তার কার্যক্রমে অর্র্ন্তভূক্ত করা হয়। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নের লক্ষে তাদেরকে জীবন দক্ষতামূলকসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে সালেমার হাতে সবজি চাষের জন্য আগামীর পথে কর্মসূচির পক্ষ থেকে ৩০হাজার টাকা প্রদান করা হয়। সবজি বিক্রি করে টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে দুই দফায় ত্রিশ হাজার টাকা হাতে তুলে দেয়া হয়। টাকা পেয়ে সালেমা সংগ্রামী জীবনযুদ্ধে নেমে পড়ে। প্রথম বছরে করলা চাষে তার সফলতা আসতে শুরু করে। শুরু হয় তার সফলতার গল্প।

এব্যাপারে সংগ্রামী নারী সালেমা খাতুন বলেন, আগামীর পথে কর্মসূচির চন্দ্র মল্লিকা দলে যোগদানের পরে দুই দফায় সবজি চাষের জন্য আমাকে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। টাকা পেয়ে প্রথমে বাড়ির পাশে সাড়ে ১২ শতক জমি বর্গা নেই। ওই জমিতে করলা চাষ করি। করলা বিক্রি করে খরচ বাদে আয় হয় ২৫ হাজার টাকা। এরপর মরিচ চাষ করি। মরিচ চাষে সফলতা পাওয়ার পর এবার এক একর জমি বর্গা নিয়ে আলু চাষ করি।

আলু বিক্রি করে খরচ বাদে লাভ হয় দেড় লাখ টাকা। আলুর পর এবার দেড় একর জমিতে ইরি বোরো ধান চাষ করি। ধান বিক্রি করে লাভের টাকা দিয়ে ১৪ শতক জমি কিনি’। 

সালেমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এর মাঝে মেয়ে কে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে স্বানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে তার সংসারের অভাব অনটন পালিয়ে গেছে। আগামীতে সে ব্যাপকহারে তরমুজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদিকে সালেমার এ সফলতা দেখে স্থানীয় নারীরা সবজিসহ অন্যান্য চাষে এগিয়ে আসছেন।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS