ভিডিও

বগুড়ার মেয়ে মিরা ফুটবল খেলছেন নয়াদিল্লিতে

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৪, ১০:৩৮ রাত
আপডেট: আগস্ট ১৬, ২০২৪, ০৫:১২ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সাজেদুর আবেদীন শান্ত: বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিকেএসপি’র শিক্ষার্থী বগুড়ার মেয়ে মিরা খাতুন এবার ফুটবল খেলতে গেলেন ভারতের নয়াদিল্লিতে। ৫ আগস্ট দিল্লির একটি মাঠে বিকেএসপির নারী টিমের ১১ নাম্বার জার্সিতে খেলায় অংশগ্রহণ করেন বলে জানান মিরা।

মিরা খাতুন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পৌর এলাকার আগুনিয়াতাইড় উত্তর পাড়া গ্রামের পান বিক্রেতা ইউনুছ শেখের মেয়ে। চার ভাই বোনের মধ্যে মিরা খাতুন তৃতীয়। পৌর এলাকায় রেলগেট কাঁচা বাজারে রাস্তার উপরে ছোট একটি পানের দোকান রয়েছে মিরার বাবার।

বগুড়ার সোনাতলায় প্রত্যন্ত অঞ্চল আগুনিয়াতাইড় গ্রামে বেড়ে উঠেন মিরা খাতুন। ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলার নেশা তার। স্কুল থেকে বাড়িতে এসেই মিরা ফুটবল নিয়ে পাড়ার ছেলে-মেয়েদের সাথে খেলতে যেতেন। পাড়া-মহল্লাবাসী অনেকে বলতেন মেয়ে হয়ে ফুটবল খেলা ভালো দেখায় না। তবুও থেমে থাকেননি মিরা।
মিরা তখন আগুনিয়াতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। শুরু হয় উপজেলা পর্যায়ে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট। মিরা খেলায় অংশগ্রহণের জন্য নাম দেন সেখানে। বঙ্গমাতা ফুটবল খেলায় উপজেলা পর্যায়ে মিরার স্কুলকে চাম্পিয়ন করতে সক্ষম হন এবং তার পারফরমেন্সে শ্রেষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে নির্বাচিত হন। তার খেলার দক্ষতা আলাদা করে সবার নজর কাড়ে। এরপর খেলতে যান জেলা বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে। সেখানেও ম্যান অফ দা ম্যাচসহ শ্রেষ্ঠ গোলদাতা হন মিরা। জেলা পর্যায়ে অনেকেই তার বাবাকে বলে তোমার মেয়ে একদিন জাতীয় দলে খেলতে পারবে চেষ্টা চালিয়ে যাও।

কিন্তু মিরার জাতীয় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে যায় দারিদ্র্যের দেয়াল। শত অভাবের মাঝেও নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যান মিরা খাতুন। এক পর্যায়ে বগুড়া জেলা বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের টিমের হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয় ছিনিয়ে আনেন মিরা। বাবা ইউনুস আলী বাজারে পান বিক্রি করতেন আর খেলতে সাহায্য করতেন মেয়ে মিরাকে। এভাবে খেলতে খেলতেই মিরা সুযোগ পায় বিকেএসপিতে।

মিরার বাবা ইউনুস আলী শেখ বলেন, ‘বাড়ির জায়গা ছাড়া আর কোন জমি নাই আমার। আমার ছেলে-মেয়েরাই আমার স্বপ্ন। শত অভাবের মাঝেও অনেক কষ্ট স্বীকার করে মিরার সাফল্য দেখিয়ে মনে সাহস যুগিয়েছি। ঢাকায় বিকেএসপিতে ৮ মাস ট্রায়ালের পর সুযোগ মেলে বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার। বিকেএসপির ৭০ জনের মধ্যে চূড়ান্ত বাছাই শেষে মিরা এখন ২৫ সদস্য টিমের একজন’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সাধ্য নেই বিকেএসপিতে টাকা খরচ করে পড়ানোর। তবে মেয়ের প্রতিভা আমাকে সাহস যুগিয়েছে। আমার শখের একটি মোটরসাইকেল ছিলো সেটা বিক্রি করে মেয়ের ভর্তির টাকা জুগিয়েছি। কিছুদিন আগে মিরা জানায় সে ভারতে খেলতে যাবে এতে গর্বে আমার বুকটা ভরে যায়’। মিরা বিকেএসপি’র হয়ে ভারতে খেলতে যাওয়ার জন্য রওনা দেয় দুই আগস্ট। সেখানে তিনি ১১ নাম্বার জার্সিতে খেলছেন বলে জানান মিরা। ইতিমধ্যেই বিকেএসপির হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেছেন।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS