ভিডিও

ফটোগ্রাফিই যেন হয়ে গেল ধ্যানজ্ঞান মম’র

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২৪, ০৫:০৭ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২৪, ০৫:০৭ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

নিজের আলোয় ডেস্ক : আটঘাট বেঁধে নেমে পড়া বলতে যা বোঝায়, ফটোগ্রাফির জন্য সেভাবে আসেননি মম। কলেজে পড়ার সময় একটি ফুজি সাইবার শট ক্যামেরা কিনে দিয়েছিলেন তার বাবা। সেটি দিয়েই ‘অটো মুডে’ ছবি তুলতেন। এরপর একদিন চঞ্চল মাহমুদের কোর্সে ভর্তি হলেন। আরেকটু শেখার জন্য প্রিজমে এক বছরের একটি ডিপ্লোমা কোর্স করেন। এসব করতে করতে একসময় পাঠশালায় স্কলারশিপ জুটে যায়। তারপর ফটোগ্রাফিই যেন হয়ে গেল ধ্যানজ্ঞান। ফুলটাইম ফটোগ্রাফার বলতে যা বোঝায়, মম মোস্তফা এখন তা-ই। এটিই তার পেশা ও নেশা।

প্রকল্পভিত্তিক কাজ করেন ম্যাজিক ইমেজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। এ ছাড়া ব্র্যাক, উই ক্যান, মানুষের জন্য আমরাসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। অবশ্য শুধু ফটোগ্রাফিই নয়, তিনি একাধারে একজন সিনেমাটোগ্রাফার। এ ছাড়া ডকুমেন্টারি নির্মাণের কাজও করেন। শখ আছে ভ্রমণে। ছোটবেলায় শখের বশে শিখেছিলেন নাচ, গিটার ও পিয়ানো বাজানো। সবকিছু মিলিয়ে আয়-রোজগারসহ এখন মন্দ কাটছে না তার দিনকাল। এখন পর্যন্ত দেশের ৬০ জেলা এবং ১২টি দেশ ঘুরেছেন মম। পরিকল্পনা আছে দেশের বাকি চারটি জেলাও ঘুরে দেখার। এই ব্যাপক ভ্রমণে জীবন ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য তিনি দেখেছেন কাছ থেকে। এর ছাপ পাওয়া যায় তার তোলা ছবিতে। মানুষের যাপিত জীবনের গল্প ধরে রাখতে পছন্দ করেন তিনি। সঙ্গে তাদের সংস্কৃতি। সে জন্যই হয়তো তিনি পোর্ট্রেট এবং কালচার ও ট্রাভেল ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করেন। মম আমাদের ঐতিহ্যকে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে চান। এসব করতে নিজের ছোট্ট টিম নিয়ে ক্যামেরা হাতে বেরিয়ে পড়েন। ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনায় আমাদের দেশের কোনো মা-বাবাই সায় দেন না। মমর পরিবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। আত্মীয়স্বজন যেন এককাঠি সরেস ছিল। পরিবার বরং বিবিএ-এমবিএ পড়তে উৎসাহিত করেছিল। কিন্তু মন তো পড়ে ছিল ফটোগ্রাফিতে। এই টানাপোড়েনের সময় জুটে যায় পাঠশালার স্কলারশিপ। মমর স্বপ্ন ধরা দেয় হাতে। প্রত্যেক ফটোগ্রাফারের আজন্ম স্বপ্ন থাকে একক প্রদর্শনীর। কিছুদিন আগে মমর ছবি নিয়ে তিন দিনের একক প্রদর্শনী হয়েছে শিল্পকলা একাডেমিতে। ভবিষ্যতে বিভাগীয় শহরগুলোয় একক প্রদর্শনী করার ইচ্ছা আছে তাঁর। দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে মমর তোলা ছবি প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন ফটো এজেন্সির তালিকাভুক্ত আলোকচিত্রী।

এ ছাড়া গেটি ইমেজ, অ্যাডোবি স্টক ইত্যাদি সাইটে তার ছবি বিক্রি হয়। এ ছাড়া দৃকেরও তালিকাভুক্ত আলোকচিত্রী তিনি। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড আয়োজিত আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় প্রথম হন মম। ফিনল্যান্ডে আয়োজিত গোল্ডস্টারস ইন্টারন্যাশনাল ফটো এক্সিবিশনে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে তাঁর ছবি প্রদর্শিত হয়। আর এখন তিনি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিচারক হওয়ার ডাক পান। ভাসানটেক বস্তির কাছাকাছি এক জায়গায় ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিলেন মম। নিজের ক্যামেরা ছাড়াও অন্য এক আলোকচিত্রীর ক্যামেরা তার সঙ্গে।

সিদ্ধান্ত নিলেন, ক্যামেরাগুলো রক্ষা করতে হবে। কিছুক্ষণ ক্যামেরার ব্যাগ টানাটানি করল ছিনতাইকারীরা; কিন্তু ব্যাগ ছাড়লেন না তিনি। এ ঘটনার মানসিক আঘাত সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল তাকে। ২০২০ সালে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সেরা আলোকচিত্রীদের কাছ থেকে একটি করে ছবি নিয়ে ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছিল। মমও সেখানে ছবি পাঠিয়েছিলেন। মনোনীত হয়েছিল তার ছবি। ছাপানো ক্যালেন্ডার হাতে পেয়ে দারুণ চমকে গিয়েছিলেন তিনি। এ বছরের পছন্দমতো সময়ে দেশের বাকি থাকা চারটি জেলা ভ্রমণে বের হবেন। সঙ্গে চলবে ছবি তোলা।  



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS