ভিডিও

তিশার মাথায় বড়ই গাছ শ্যামল বণিক অঞ্জন

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৪, ০৭:১৩ বিকাল
আপডেট: মে ২৫, ২০২৪, ০৭:১৩ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

হঠাৎ করেই তিশার মাথা ফুঁড়ে বিশালাকার একটা বড়ই গাছে বের হয়েছে! এমন অদ্ভুত কান্ডে তিশা সহ ওর পুরো পরিবার হতভম্ব! তিশার মা বাবা শোকে কাতর! সমস্ত মহল্লায় হইচই পড়ে গেছে যার রেশ ছড়িয়ে গেছে পুরো শহরজুড়ে অলিতে গলিতে! কৌতুহলী মানুষজন সেই কাকডাকা ভোর হতেই দলে দলে এক পলক এই রকম আজব ব্যাপারটি দেখার জন্য ভীড় করতে শুরু করলো তিশাদের বাড়িতে! বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা হুমড়ি খেয়ে পড়লো এই বিস্ময়কর ঘটনার সংবাদটি কাভার করার জন্য! তিশার মাথা ফুঁড়ে আচমকা গাছ বেরুনোর ঘটনাটা আজকের টক অব দ্যা টাউন নয় টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে যেন! লোকজনের অপ্রত্যাশিত ভীড় ঝামেলা এড়ানোর জন্য তিশার বাবা থানায় ফোন দিয়ে প্রসাশনিক সহযোগীতা চাইলেন।

ওসি সাহেব  এক মুহূর্ত দেরী না করে তাৎক্ষণিক সোর্স পাঠালেন তিশাদের বাড়িতে! সাংবাদিকরা নানান রকম প্রশ্ন করতে লাগলেন তিশার মা কে, শোকে কাতর তিশার মা জানালেন - আমি কিচ্ছু জানি না, কি থেকে কি হয়েছে বা হয়ে গেলো! কথা শেষ না হতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিশার মা পারভিন আক্তার। পাশে দাঁড়ানো তিশার দাদি বললেন থএই তো কয়েকদিন আগে তিশা আমাকে বলছিলো বড়ই খাওয়ার সময় ওর পেটে নাকি একটা বড়ই বিচি ঢুকে গিয়েছিলো, মানে গিলে ফেলেছিলো! আমি আবার মজা করে বলেছিলাম সর্বনাশ এবার তো কদিন পরে তোমার মাথা ফুঁড়ে বড়ই গাছ বের হবে গো দিদি ভাই! তিশা তখন অনেক ভয় পেয়েছিলো!

কিন্তু সত্যি সত্যিই যে আমার সে কথা একদিন বাস্তব হয়ে যাবে সেটা আমি কখনো ভাবিনি! কথাগুলো বলার সময় বার বার আঁচলে চোখের জল মুছছিলেন তিশার বৃদ্ধা দাদি! উপায় অন্তহীন তিশার বাবা খোরশেদ আলম বার বার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন মেয়েকে একটু কিছু খাওয়ানোর, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না! ঘটনার আকস্মিকতায় ভয়ে ছোট্ট তিশা যেন পরিণত হয়েছে এক বৃক্ষে! এদিকে মেডিকেল টিমের সদস্যরাও এসে হাজির, এটা নিয়ে ওনাদের মধ্যে কেউ কেউ গবেষণা করারও  ইচ্ছে পোষণ করলেন, কেউ হাত দিয়ে দেখছেন  কেউ ছবি তুলছেন, আবার কেউ তিশার মুখ থেতেই ঘটনার বর্ণনা শুনতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন!

আদরের ভাগ্নির হঠাৎ করে বৃক্ষ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ছুটে এসেছেন ওর প্রিয় বক্কর মামাও! মামা এসে সচক্ষে এই রকম অবস্থা দেখে রীতি মতো হতবাক হয়ে গেলেন, মামা বললেন থথ আমার এই দীর্ঘ একত্রিশ বছরের জীবনে এমন আজব ঘটনা কোনদিন আর দেখিনি! বোন জামাইকে ডেকে বললেন দুলাভাই আমার মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে, দুলাভাই বললেন  কি আইডিয়া বলো!

বক্কর মামা বললেন - একটা দা নিয়ে আসেন, আপাতত উপরের কিছু ডালপালা কেটে কিছুটা কমিয়ে দেই তাহলে মামণি আমাদের অনেকটা আরাম পাবে। উপস্থিত সকলেই তিশার মামার কথটাকে সমর্থন করে বললেন-- হ্যাঁ এটা করা যেতে পারে তাতে করে অনেকটা হালকা লাগবে ওর! তিশার বাবা সকলের কথার উপর ভিত্তি করে কিচেন থেকে একটা হাতদা এনে তিশার মামার হাতে দিলো, মামা নীচের দিকের একটা ডালে কোপ দিতেই তিশা চিৎকার দিয়ে উঠলো, পাশে থাকা ওর দাদি সাথে সাথেই উঠে বসে তিশাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো  কি হয়েছে দিদি ভাই? চিৎকার করছো কেন? তিশা ঘুমঘুম চোখে বার বার শুধু নিজের মাথার উপরে হাত দিচ্ছে আর বলছে  আমার গাছ, আমার বড়ই গাছ,তাহলে কি আমি স্বপ্ন দেখছিলাম এতোক্ষণ !

তিশার দাদি এবার মুচকি হেসে বললেন বুঝতে পেরেছি, তুমি দু:স্বপ্ন দেখছিলে এতোক্ষণ! আরে ধূর পাগলী মানুষের পেটে কি কখনো গাছ হয় নাকি! আমি তো তোমার সাথে মজা করেছি! আর তুমি সেটা বিশ্বাস করে এখনো বসে আছো! নাও একটু পানি খেয়ে নাও,এখন নিশ্চিন্তে ঘুমাও তো! দাদি বুকের কাছে নিয়ে তিশাকে জড়িয়ে ধরে আবারো ঘুমিয়ে গেলেন। 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS