ভিডিও

কানাই করে ধানাই পানাই 

মোঃ আশতাব হোসেন

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৪, ০৭:৫৬ বিকাল
আপডেট: জুন ২৯, ২০২৪, ০৭:৫৬ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

ছোট ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন তরি-তরকারির ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে কোনোরকমে দিন পার করে। প্রতিদিন মফিজ আরদ থেকে আলু,পটল, টমেটো বরবটি, বেগুনসহ নানান মাল কিনে বাজারে বিক্রি করে। যা লাভ হয় তা দিয়েই চাল ডাল কিনে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে। পাড়ার মাস্তান কানাই, তাকে দেখে সবাই একটু ভয় পায়। সে তার মামুর জোড়ে দোকানে দোকানে সওদা নিয়ে পরে টাকা দেয়ার কথা বলে আর দেয় না। 
এভাবে নিরীহ ছোট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসের পর মাস বছরের পর বছর টাকা দিব দিব করে আর দেয় না। তার এমন জুলুমের কারণে অনেক দোকানদারই পথে বসে গেছে তারা পুঁজি শেষ করে এখন অন্যের বাড়ি কাজ করে খায়। কারো ছেলে মেয়ের পড়া লেখা বন্ধ হয়ে যায়। 
এভাবে মফিজও কানাইকে অনেক বাকি দিয়ে আর তুলতে পারছে না। টাকা চাইতে গেলে আরো উল্টো ভয়-ভীতি দেখায়। কানাই বলে এভাবে সব সময় টাকা চাইলে বাজারে তোমার দোকান বসতে দেয়া হবে না। এখন এসব বাজার ঘাট আমরাই নিয়ন্ত্রণ করি। 
আমার কাছে টাকা চাইতে খুব সাবধানে চাইবে তা না হলে দোকান তুলে দিয়ে তোমাকেও সাইজ করে দিব। কানাইর মতো আরো অনেকেই আছে এমন করে ছোট ছোট দোকানদার থেকে সওদা করে। টাকা পরে দেওয়ার কথা বলে আর দেয় না। চাইলেও  বকাঝকা করে ভয় দেখায়। তবে কানাই বেশি করে এমন কাজ। টাকা আজ নয় কাল দিব, কাল নয় পরশু দিব এভাবে কানাই ধানাই পানাই করে টাকা না দিয়ে পার পেয়ে যায়। 
এভাবে কিছু দিন চলার পর কানাইকে আর বাহিরে দেখা যায় না। মফিজ চিন্তায় পড়ে যায়। মনে মনে ভাবে আমার টাকাগুলি কানাই আর দিবে না মনে হয়। অনেকের কাছে মফিজ খবর নেয়, কানাই কী করে এখন, সে বাজারে আসেনা কেনো? তার মধ্যে একজন বলে কানাই অসুস্থ! 
সে এখন হাঁটতে পারে না।মোটরসাইকেল চালাত এতদিন বেসামাল হয়ে। কিছুদিন আগে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে তার দু’পা ভেঙ্গে গুড়া হয়ে যায়! হাঁটু থেকে নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছে। দু'পায়ে এখনো ক্ষত শুকায়নি। শুকালে হয়তো ভ্যানগাড়ি বা রিক্সা যোগে বাজারে আসতে পারে। 
মফিজ কানাইর এমন খবর শুনে মনে মনে বলে হায়, আল্লাহ তোমার বিচার বুঝার সাধ্য নেই কারো! 
এর কিছুদিন পরেই কানাই এক ঠেলা গাড়িতে করে বাজারে আসে।যে সকল দোকান থেকে বাকিতে সওদা নিয়েছিলো তাদের সবার কাছে ঘুরে ঘুরে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে। ক্ষমা চাওয়া ছাড়া উপায়ই বা কি আছে! যা টাকা জমিয়েছিলো চাঁদাবাজি করে তার সবই পায়ের চিকিৎসা করে খরচ হয়ে গেছে এখন তার ভিক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই।
এই গল্পের মাধ্যমে আমরা এটাই শিক্ষা পেলাম। দুর্বলের ওপর কখনো অন্যায়ভাবে অত্যাচার করা যাবে না। আর কারো কাছে থেকে ধার নিয়ে তা শোধ না করলে সেই  ঋণ কখনো শোধ হয় না। যতক্ষণ না সেই ব্যক্তি তাকে ক্ষমা করে দেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS