ভিডিও

মশাদের রাজার ডেঙ্গু অভিযান

সাগর আহমেদ

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৪, ০৭:৪৯ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ১০, ২০২৪, ০৭:৪৯ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

এক যে ছিলো দেশ। আর সে দেশের নাম ছিলো খড়মপুর। খড়মপুরে ছিলেন দুই রাজা। মানুষদের রাজা হোদল সিং আর মশাদের রাজা হ্রিচিং। মানুষের রাজার ছিলো একটা বড় রাজপ্রাসাদ। আর প্রাসাদের সামনে ছিল স্বচ্ছ পানির ফোয়ারা। তার ছিল বিরাট বড় মন্ত্রীসভা । আর মশাদের রাজা হ্রিংচিংয়ের  রাজপ্রাসাদ না থাকলেও চাঁদ সওদাগরের বিলে কচুরিপানার দঙ্গলে তার ছিলো বিশাল একখানা হেডকোয়ার্টার। সেখানে ইয়া বড় পালোয়ান কয়েকটি মশা ছিলো তার উপদেষ্টা। দু'জন রাজাই তাদের নিজ নিজ প্রজাদের নিয়ে মোটামুটি সুখেই ছিলো। কিন্তু যখন বর্ষা কাল এলো, মশাদের সংখ্যা গেলো বেড়ে। নতুন নতুন মশারা মানুষের সুস্বাদু রক্তে তাদের ক্ষুধা তৃষ্ণা মেটাতে ঘরে, বাড়িতে, হাটে -মাঠে, রাস্তায়, অফিস পাড়ায় সর্বত্র মানুষদের আক্রমণ করে বেড়াতে লাগলো। আর  শিশুরা হলো তাদের সহজ শিকার। মানুষ  মশারি ছাড়া ঘুমালেই,সুঙ্গ দিয়ে তাদের রক্ত চুষতে লাগে বেদম সুখে ।

রাজা হোদল সিং তখন মন্ত্রী সভার বৈঠক বসালেন। সভায় সিদ্ধান্ত হলো, বিদেশ থেকে উন্নত মানের ডিডিটি সমৃদ্ধ মশার ঔষধ আমদানি করার । কাজেই কিছুদিন পরেই দেখা গেলো পাড়ায় মহল্লায় মশক নিধন কর্মীরা  স্প্রে করে ঔষধ ছিটাচ্ছে । কিন্তু দু-একটি রোগা পটকা মশা ছাড়া  খুব একটা মশা মরলো না । কয়েকটি মশা রোগাক্রান্ত হয়ে কয়েকদিনের বেড রেস্টে থাকলো শুধু।।এর কারণ হলো গতবছর যে মশার ঔষধ স্প্রে করা হয়েছিলো, তাতে উচ্চ মানের ভেজাল মিশ্রিত ছিলো। ফলে এ বছর  অনেক মশার শরীরেই স্প্রেতে থাকা ঔষধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে। কিন্তু মশাদের রাজা  হ্রিচিং মানুষের রাজা হোদল সিংয়ের এই অন্যায় আক্রমণ মেনে নিলেন না । তিনি  চাঁদ সওদাগরের বিলে কচুরিপানার দঙ্গলের হেডকোয়ার্টারে মন্ত্রী ও বিজ্ঞানীদের ডেকে সভা বসালেন । প্রধান বিজ্ঞানী বললেন, মহারাজ আমি অনেক দিন ধরেই মানব ঘাতক ডেঙ্গু জীবানু  নিয়ে গবেষণা করে কয়েক দিন আগে সফল হয়েছি । আপনি চান তো আমি কালকেই এই জীবাণু মিশ্রিত রঙিন তরল একটা বড় কাঁচের জারে রাখবো। মশারা বের হবার সময় শুধু সুঙটা সেখান থেকে ভিজিয়ে নিয়ে যাবে। ব্যাস, কেল্লাফতে,এই বিষাক্ত সুঙ দিয়ে ডেঙ্গু জীবাণু মানুষের শরীরে ঢোকালেই মানুষ মরে সাফ হয়ে যাবে। একজন মন্ত্রী বললো, ওদেরকে রাতে আক্রমণ করলে ওরা মশারির ভেতর লুকিয়ে পড়ে, কাজেই ওদেরকে দিনে আক্রমণ করার হুকুম দিন জাহাপনা। মহারাজ হ্রিচিং অনুমতি দিতেই, মশারা দলে দলে মানুষদের আক্রমণ করে ডেঙ্গু জীবানু ঢুকিয়ে দিতে লাগলো। মানুষের ভিড়ে হাসপাতালে আর বেড খালি থাকলো না । মানুষ দলে দলে মরতে লাগলো, দেশ ছেড়ে পালাতে লাগলো । সর্বশেষে পালালেন রাজা হোদল সিং। মশাদের রাজা হ্রিচিং সানন্দে ও সগৌরবে নিজের বিজয় ঘোষণা করলেন। তিনদিন ধরে চললো তার সেই যুদ্ধ জয়ের আনন্দ মিছিল।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS