এক সিংহ এবং সিংহীর নামকরণের দায়ে ভারতের ত্রিপুরার এক বনকর্তা প্রত্যাহার হয়েছেন। বিজেপি সরকার তাকে প্রত্যাহার করেছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি সিংহ ও সিংহীর নামকরণ নিয়ে বিতর্ক দেশটির হাইকোর্ট পর্যন্ত যায়। কেন সিংহের নাম ‘আকবর’, আর সিংহীর নাম ‘সীতা’ রাখা হবে, আর কেনই বা তাদের একই খাঁচায় রাখা হবে– এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আদালতের যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)।
বর্তমানে শিলিগুড়ির সাফারি পার্কে ওই সিংহ আর সিংহীকে রাখা হয়েছে। তাদের গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরার বিশালগড়ের সিপাহিজলা জুলজিক্যাল পার্ক থেকে আনা হয়। এ রাজ্যের বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ত্রিপুরাতে ওই সিংহ ও সিংহীর নামকরণ করা হয়েছিল। নতুন করে কোনো নামকরণ করা হয়নি। এ বিতর্কের মধ্যেই গত শনিবার ত্রিপুরার মুখ্য বন সংরক্ষণবিদ (বন্যপ্রাণ এবং পর্যটন) প্রবীণ লাল আগরওয়ালকে বরখাস্ত করে রাজ্য সরকার। নামকরণ বিতর্কের জেরেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে ত্রিপুরা প্রশাসন সূত্রে খবর।
এদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়, রাজ্যের বন দপ্তর সিংহ ও সিংহীটির নামকরণ করেছে এবং তাদের একসঙ্গে রেখে ধর্মের অবমাননা করেছে। হাইকোর্টে করা মামলায় যুক্ত করা হয় রাজ্যের বন দপ্তর এবং জলপাইগুড়ি সাফারি পার্কের ডিরেক্টরকেও। বিতর্ক এড়াতে রাজ্যকে নামবদলের পরামর্শ দেয় কলকা
তা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। মৌখিকভাবে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার রাজ্যের উদ্দেশে ওই দুই পশুর নাম পরিবর্তন করে নিতে বলেন। সেইসঙ্গে মামলাকারীকে মামলাটি জনস্বার্থ মামলা হিসেবে দায়ের করার নির্দেশ দেন তিনি।
মামলার শুনানিতে বিচারপতি ভট্টাচার্য বলেন, কারা এ নাম রেখেছেন? এত বিতর্ক কারা তৈরি করছে? কোনো পশুর নাম কি কোনো দেবতা, পৌরাণিক নায়ক, স্বাধীনতা সংগ্রামী অথবা নোবেলজয়ী ব্যক্তির নামে রাখা যায়? সিংহ-সিংহীর নাম ‘আকবর’ আর ‘সীতা’র নামে রেখে শুধু শুধু বিতর্ক ডেকে আনা হয়েছে। এ বিতর্ক এড়ানো যেত। শুধু ‘সীতা’ নয়, ‘আকবর’ নামটিও রাখা উচিত নয়। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের মহৎ সম্রাট ছিলেন। অত্যন্ত দক্ষ ও ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন। রাজ্যের উচিত ছিল এ ধরনের নামের বিরোধিতা করা।
আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ত্রিপুরাতে ওই সিংহ ও সিংহীর নামকরণ করা হয়েছিল। রাজ্য নাম পরিবর্তন করার কথা বিবেচনা করছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।