আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘের খাদ্য অধিকার-বিষয়ক বিশেষ দূত মাইকেল ফাখরি বলেছেন ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে গাজা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের অনাহারে রাখছে।
গাজায় প্রায় পাঁচ মাস ধরে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। এছাড়াও খাবার,পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তায় অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক যেসব সংস্থা খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে, তাদের ট্রাক লক্ষ্য করেও গুলি ছুড়ছে ইসরাইলি সেনারা। এমন পরিস্থিতিতে উপত্যকাটিতে শিগগিরই দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের খাদ্য অধিকার-বিষয়ক বিশেষ দূত মাইকেল ফাখরি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ সরবরাহে বাধা দেয়াসহ বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য সরঞ্জাম থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা যুদ্ধাপরাধের শামিল।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা, গাজাবাসীর মাছ ধরার ছোট নৌকা আটক, তাদের বাগানগুলো ধ্বংস করে দেয়া; স্থানীয়দের খাবার থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে ছাড়া আর কিছুই নয়। ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কেবল ফিলিস্তিনি হওয়ার জন্য ধ্বংস করার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে ইসরাইল।
মাইকেল ফাখরির মতে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্টত গণহত্যা এবং কেবল কোনো ব্যক্তি বা সরকার নয়, সমগ্র ইসরাইল এ জন্য অপরাধী। তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।
তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক কর্মীর বিরুদ্ধে অপ্রমাণিত দাবির ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে একযোগে একাধিক দেশের ইউএনআরডব্লিউএর জন্য তাহবিল বন্ধ করার পদক্ষেপ নেয়ার পেছনে ফিলিস্তিনিদের সম্মিলিতভাবে শাস্তি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। যেসব দেশ এই লাইফলাইন প্রত্যাহার করেছে, তারা নিঃসন্দেহে ফিলিস্তিনিদের অনাহারে থাকার ঘটনায় জড়িত।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইসরাইল দাবি করবে যুদ্ধাপরাধের ব্যতিক্রম আছে। কিন্তু গণহত্যার কোনো ব্যতিক্রম নেই এবং কেন ইসরাইল বেসামরিক অবকাঠামো, খাদ্য ব্যবস্থা, মানবিক কর্মীদের ধ্বংস করছে এবং শিশুদের অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করছে, তা নিয়ে কোনো যুক্তি নেই। গণহত্যার অভিযোগ পুরো রাষ্ট্রকে দায়ী করে।
গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এতে ইসরাইলের ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃৃপক্ষ। এর পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সেদিন থেকে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা এ হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।