ভিডিও

ঘাস দিয়ে ইফতারি গাজাবাসীর (ভিডিও)

প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৪, ০১:১৬ দুপুর
আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৪, ১১:৩৮ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মুসলিম পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম সাধনা করছেন। ইফতার করছেন যে যার সাধ্য ও পছন্দ মতো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইফতারের বাহারি ছবি দিচ্ছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি ইফতারির এক ছবি হৃদয় ছুঁয়েছে সবার। ছবিটিতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি এক পরিবার ঘাস দিয়ে ইফতার করছেন। পরে জানা যায়, অবরুদ্ধ গাজার এক পরিবারের ইফতারি করার ছবি এটি।  

 

আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গাজাবাসী ইফতার করছে ঘাস বা গাছের পাতা দিয়ে। ইসরায়েরি বর্বর বাহিনী অসংখ্য মসজিদ ধ্বংস তারা তারাবিহর নামাজও পড়তে পারছেন না। নেই ওজুর প্রয়োজনীয় পানি, আছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। সাহরিতে একে অপরের খাবার ভাগ করে খাচ্ছেন। ফিলিস্তিনি মুসুলমানদের এমন করুণ পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি। গাজাবাসীকে এ অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য মুসলিম বিশ্বের যে উদ্যোগ প্রয়োজন তাও উপেক্ষিত। এমনকি যুদ্ধবিরতির উদ্যোগও বন্ধ। 

মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর সোমবার তাদের ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায় দেখা যায়, এক বয়স্ক ফিলিস্তিনি নারী পবিত্র রমজানে ইফতারের জন্য ঘাস তৈরি করছেন। তিনি জানান, আগের দিন তার ৩০ জন মিলে থাইম (ধনিয়া পাতার মতো) এবং তেলসহ এক প্লেট ভাত খেয়েছেন পানিতে ভিজিয়ে। মিডলইস্ট মনিটর জানাচ্ছে, এটি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় খাদ্য সরবরাহের তীব্র সংকটের বহিঃপ্রকাশ। আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো ক্ষুধায় কয়েকজনের মৃত্যুসহ গাজায় দুর্ভিক্ষ বিষয়ে সতর্ক করছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসকে মিসেস আলতাতার বলেন, গাজার মানুষ এতটা ক্ষুধার্ত যে কেউ কেউ পাতা ও পশুর খাদ্য খেয়েছে। আমরা প্রায় মাসখানেক ধরে উপবাস করছি। রমজানের আগে, আমরা পর্যাপ্ত খাবার খুঁজে পেতে সক্ষম হলে দিনে দুই বেলা খাবার খাচ্ছিলাম। অন্যথায়, আমরা সূর্যাস্তের সময় দিনে মাত্র একবার খেতে পারতাম।

সিএনএন তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, গাজার উত্তরে খাদ্য ঘাটতি সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে। সেখানে কেউ কেউ বলছে তারা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার ও পানি থেকে বিরত আছেন শুধু রমজানের কারণে নয়, এর আগেও তাদের অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। 

রাফাহতে বাস্তুচ্যুত সাংবাদিক আসিল মুসা (২৬) সিএনএনকে বলেন, আমরা রমজানের জন্য অপেক্ষা করি কারণ এটি আশীর্বাদ, শান্তি এবং উপাসনার মাস। কিন্তু এই রমজান আসছে গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের মধ্যে।

আলজাজিরা জানায়, জাতিসংঘ খাদ্য ও অন্যান্য সাহায্য সরবরাহের জন্য উত্তর গাজায় প্রবেশে অসুবিধায় পড়েছে। ওই অঞ্চল জুড়ে গাজাবাসী রমজানে আরও তীব্র অভাব অনুভব করছে। গাজার দক্ষিণ সীমান্ত শহর রাফাহ’তে দেড় মিলিয়ন ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে। বাস্তুচ্যুত খান ইউনিসের বাসিন্দা মোহাম্মদ আল-মাসরি বলেন, বাস্তুচ্যুত মানুষের কী আছে, আমরা রমজানের আনন্দ অনুভব করি না... ঠাণ্ডায় তাঁবুতে থাকা লোকজনের দিকে তাকান। জাকি আবু মনসুর (৬৩) বলেন, আমরা জানি না আমরা রোজা ভাঙতে কী খাব। আমার কাছে শুধু একটি টমেটো এবং একটি শসা আছে... এবং আমার কাছে কিছু কেনার টাকা নেই।

গাজা জুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পবিত্র রমজান মাসে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সংঘাত অব্যাহত রয়েছে বলে আমি আতঙ্কিত এবং ক্ষুব্ধ।

হামাস র্কর্তৃপক্ষ রবিবার থেকে অন্তত ৬৭ জনের প্রাণহানির খবর জানিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতেও কেউ কেউ রমজানের শুরুটা উদযাপনের জন্য সামান্য সাজসজ্জা করেছেন এবং তাঁবুর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ফানুস বিতরণ করেছেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS