ভিডিও

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের চেয়ে বেশি খাবার নষ্ট হয় বাংলাদেশে

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৪, ০৪:০৩ দুপুর
আপডেট: মার্চ ৩১, ২০২৪, ১০:৪৬ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচি বা ইউনেপ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গড়ে একজন ব্যক্তি বছরে ৮২ কেজি খাবার অপচয় করেন। ওই সময় বিশ্বে ২০২২ সালে বাসাবাড়ি, খাদ্যসেবা ও খুচরা পর্যায়ে মোট খাদ্যের প্রায় ১৯ শতাংশ অর্থাৎ ১০০ কোটি টনের বেশি খাবার অপচয় হয়েছে। খবর : বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বেশিরভাগ খাদ্য অপচয় হয়েছে বাসা-বাড়িতে। যত খাদ্য অপচয় হয়েছে ৬০ শতাংশই বাসা-বাড়িতে হয়েছে। এছাড়া গড়ে একজন মানুষ বছরে ৭৯ কেজি খাবার অপচয় করেছে। ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট ২০২৪ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সে সময়ে বাংলাদেশের খাদ্য অপচয়ের এ প্রবণতা ছিল ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি।

জাতিসংঘের হিসেবে, বাসা-বাড়িতে একজন ব্যক্তি বছরে গড়ে ভারতে ৫৫, যুক্তরাজ্যে ৭৬, যুক্তরাষ্ট্রে ৭৩ এবং রাশিয়ায় ৩৩ কেজি খাবার অপচয় করেছেন। তবে এ হিসেবে খাবারের সবচেয়ে বেশি অপচয় হয়েছে মালদ্বীপে। সেখানে হয়েছে ২০৭ কেজি আর সবচেয়ে কম হয়েছে মঙ্গোলিয়ায় যার পরিমাণ ছিল ১৮ কেজি। গবেষকদের দাবি বাংলাদেশে একেবারে উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোতে বেশি খাদ্য নষ্ট বা অপচয় হয়। ইউনেপ’র আগের প্রতিবেদনের সঙ্গে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগের চেয়ে ২০২২ সালে খাদ্য অপচয় বা খাদ্য উপাদান কিংবা তৈরি খাদ্য নষ্ট করার প্রবণতা বেড়েছে। ২০১৯ সালের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে সংস্থাটি ২০২১ সালে যে রিপোর্ট দিয়েছিল তাতে বলা হয়েছিল যে, একজন বাংলাদেশি বছরে ৬৫ কেজি খাদ্য উপাদান কিংবা তৈরি খাদ্য নষ্ট করেন।

ফুড লস বা ফুড ওয়েস্ট আসলে কী?
গবেষকরা বলছেন, সাধারণভাবে খাবার সম্পূর্ণ না খেয়ে অপচয়টাই হলো ফুড ওয়েস্ট। আর ফুড লস হলো উৎপাদন বা আহরণের পর গ্রাহক পর্যায় পর্যন্ত না পৌঁছানো। সেটাও খাদ্য অপচয়ের মধ্যেই পরে। আবার যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে কোনো খাবার যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সেটি খাদ্য অপচয়ের আওতায় আসবে। এর মধ্যে ফুড লস হয় মাঠ পর্যায় থেকে গ্রাহকের হাতে আসা পর্যন্ত। আর ফুড ওয়েস্ট বা অপচয় হয় গ্রাহকের হাতে আসার পর। গবেষকরা বলছেন, ছোট মাছের ক্ষেত্রে বেশি ফুড লস হয়ে থাকে। আহরণের পর থেকে গ্রাহক পর্যায়ে আসা পর্যন্ত সময়ে ছোট মাছের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ২৩ শতাংশ ‘লস’ হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে তিন ভাগের এক ভাগ মাছ নানা কারণে নষ্ট হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের চেয়ে বাংলাদেশে বেশি খাদ্য নষ্ট হচ্ছে
বাংলাদেশে কমিউনিটি সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫ থেকে ১৩ শতাংশ খাবার নষ্ট বা অপচয় হয়। বাসা-বাড়ি এবং হোটেল রেস্টুরেন্টে অনেক খাবার নষ্ট হয়। উচ্চ আয়ের বাসাগুলোতে সপ্তাহে একজন মানুষ দুই কেজির বেশি খাবার অপচয় করে থাকে। রেস্টুরেন্টেও সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্য অপচয় হয়ে থাকে। সে তুলনায় বি ক্যাটাগরির রেস্তোরায় কিছুটা কম নষ্ট হয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্ডার দেওয়া এবং সব খাবার একটু চেখে দেখার প্রবণতাই রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবার অপচয়ের বড় কারণ বলে মনে করা হয়। মূলত এসব কারণেই যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে খাদ্য অপচয় বেশি বলে ধারণা বাংলাদেশের গবেষকদের। তারা মনে করেন রেস্তোরাঁ বা কমিউনিটি সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশি নজরদারি বা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকায় খাদ্য অপচয় প্রতিরোধে উন্নত দেশগুলো বাংলাদেশের চেয়ে ভালো করছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS