আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঘটনাটি ভারত শাসিত কাশ্মীরের একটি গ্রামে। খুব সাধারণ একটি মুরগির ডিম, অথচ তার দাম ২ লাখ ২৬ হাজার রুপি। খবর : বিবিসি
জানা গেছে, কাশ্মীরের সোপোর জেলার মাল মাপানপুরা গ্রামের একটি মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে ঈদ উপলক্ষ্যে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা অর্থ আর বিভিন্ন সামগ্রী দান হিসেবে সংগ্রহ করবে। এতে কেউ নগদ অর্থ দেন, কেউ থালা বাসন, মুরগি বা চাল দান করেন। মসজিদ কমিটির এক সদস্য নাসির আহমেদ বলেন, ‘আমরা দান সংগ্রহ করছিলাম। তার মধ্যেই একটি ছোট বাড়ি থেকে এক নারী মাথা নিচু করে বেরিয়ে আসেন। আমার কাছে এসে তিনি একটা ডিম দিয়ে বলেন তার দানটা যেন আমি গ্রহণ করি।’ তিনি আরও বলেন, ওই নারী খুবই গরিব। একটা ভাঙাচোরা ছোট্ট ঘরে একমাত্র ছেলের সঙ্গে বাস করেন। তার দান করা একটা সাধারণ ডিম ছিল সেটি যা মাত্র ভারতীয় ছয় টাকা দামের। কিন্তু অত্যন্ত গরিব ওই নারী যে আবেগ নিয়ে আল্লাহর নামে দান করেছিলেন, সেটাই ওই ডিমটাকে অমূল্য করে তুলেছে।
নাসির আহমেদ বলেন, ‘অন্যান্য জিনিষগুলো তো বিক্রি করার জন্য দেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু আমার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠল ওই ডিমটা নিয়ে কী করা যায়!’ পরে কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিমটাকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনদিন পরে ডিমটা ফেরত নিয়ে নেওয়া হবে, এরকম সিদ্ধান্তও জানানো হয়। ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ না করেই নাসির আহমেদ ডিমটাকে নিলামে তোলার কথা ঘোষণা করেন। তিনি নিজেই দশ ভারতীয় টাকা নিয়ে নিলামে প্রথম দর হাঁকেন। প্রথমেই ডিমটার দাম উঠে যায় দশ হাজার ভারতীয় টাকা। তারপরে দর বাড়ানো হয়। নাসির আহমেদ আরও জানান, ‘প্রথম দুদিনে ১০, ২০, ৩০ আর ৫০ হাজার ভারতীয় টাকা পর্যন্তও দর উঠেছিল। প্রতিবারই ডিমটা ফেরত নিয়ে নেওয়া হয়।’ এরপর শেষ দিনে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত নিলাম চলবে, এরকম একটা ঘোষণা করা হয়। সবচেয়ে বেশি দর যিনি দিতে পারবেন শেষ পর্যন্ত, তার হাতেই ডিমটা দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। শেষ দিনের নিলামে হাজির ছিলেন সোপোরের ব্যবসায়ী দানিশ হামিদ। নিলামে দুবার হাঁক দেওয়া হয়েছিল ৫৪ হাজার ভারতীয় টাকার। একেবারে শেষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যবসায়ী হামিদ দর হাঁকেন ৭০ হাজার টাকা। এভাবেই মোট দুই লাখ ২৬ হাজার ৩৫০ ভারতীয় টাকা জমা হয়। নাসির আহমেদ বলেন, এটা এখন আর একটা সাধারণ ডিম নয়। প্রতীকী হয়ে উঠেছে ডিমটি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।